বাহামার ক্লারেন্স শহরের লং আইল্যান্ডে পাবেন পৃথিবীর গভীরতম ব্লু হোল বা নীল গর্তের দেখা। পানিতে ডুবে থাকা খাড়া গুহাগুলোই পরিচিত ব্লু হোল নামে। অন্যান্য ব্লু হোলের সঙ্গে ডিনস ব্লু হোলের পার্থক্য হলো এর গভীরতায়। এটি নেমে গেছে মাটির ২০০ মিটার গভীর পর্যন্ত, যেখানে এ ধরনের অন্যান্য গুহার গভীরতা সর্বোচ্চ ১১০ মিটার। গর্তটির প্রায় বৃত্তাকার মুখের ব্যাস ২৫ থেকে ৩০ মিটার; কিন্তু ২০ মিটার গভীরে যেতেই এর ব্যাস গিয়ে ঠেকে ১০০ মিটারে।
স্থানীয় ডিন অধিবাসী এবং ভেতরের নীল পানি-এই দুইয়ে মিলিয়ে এর নামকরণ। গর্তটির পানি গাঢ় নীল দেখানোর কারণ অতিমাত্রার স্বচ্ছ পানি ও উজ্জ্বল সাদা কার্বনেট বালির উপস্থিতি। নীলের আধিপত্য থাকলেও এখানে লাল, হলুদ ও সবুজ বর্ণের দেখা মেলে। যদিও একমাত্র নীল রংই একেবারে নিচে সাদা বালিতে প্রতিফলিত হয়ে আসতে পারে।
বরফ যুগে তৈরি হয়েছিল এসব গর্ত, যখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এখন থেকে ১০০ থেকে ১২০ মিটার কম ছিল। ভূগর্ভস্থ পানি উঠে চুনাপাথর বা লাইমস্টোন দিয়ে গড়া গর্তগুলোর ছাদ ভেঙে ফেলে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে এগুলো সাগরের পানিতে ভরে যায়।
বর্তমানে ডুবসাঁতার দেওয়ার জায়গা হিসেবে সাঁতারুদের ভারি পছন্দের এটি। ২০১২ সালে বিশ্ব ফ্রি ডাইভিং (অক্সিজেন মাস্ক বা অন্য কোনো যন্ত্র ছাড়া পানির তলে ডাইভ দেওয়া) প্রতিযোগিতা এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিউজিল্যান্ডের প্রতিযোগী উইলিয়াম ত্রাব্রিজ বিশ্বরেকর্ড করেন। তিনি শ্বাস আটকে রেখে ১২১ মিটার গভীরতায় ডুব দেন।
বদ্ধ এলাকা হওয়াতে এখানে সাগরের অন্যান্য স্থানের মতো সব প্রাণী বাস করতে পারে না। বিশেষ কিছু জলজ প্রাণীই কেবল খাপ খাইয়ে নিয়েছে এই পরিবেশে। কিন্তু এখানে পাওয়া কিছু ফসিল প্রমাণ করে, জলে ডোবা জায়গাটিতে অতীতে আরো নানা প্রাণীর বাস ছিল। শুধু ডুবুরিদের জন্য নয়, যারা প্রকৃতির রহস্য আর সৌন্দর্য পছন্দ করে, তাদের জন্যও ডিনের নীল গুহা এক আকর্ষনীয় গন্তব্য। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ