:: বশির মাহমুদ রাফি ::
কর্মব্যস্ততার মাঝেই একটু সময় বের করে ঘুরে আসুন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার হরিণঘাটা বনাঞ্চলে। চিরসবুজের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে বনের প্রবেশ করার রাস্তাটি। যার দুই পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির বনজ বৃক্ষ। এই বনকে বলা হয় সুন্দরবনের এক অংশ। কারণ এই দুই বনকে আলাদা করেছে একটি মাত্র নদী। বনের আরেক পাশে বলেশ্বর, বিষখালি, পায়রা নদী গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। নদী আর সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সঙ্গে দেখতে পাবেন বিশাল ঝাউবন। এ যেন একের ভিতর দুই। বন দেখার পাশাপাশি সাগরও দেখা হবে। বিশাল এই জায়গাজুড়ে রয়েছে শুধু নীরবতা ও পাখিদের কলরব। নীরবতার মাঝে পাখিদের ডাক ক্ষণিকের জন্য ভুলিয়ে দেয় সব ধরনের যান্ত্রিক কোলাহল ও কর্ম ব্যস্ততা।
যা দেখবেন
দেখা হতে পারে বনের প্রধান আকর্ষণ হরিণ, শূকর ও সাপের সঙ্গে। আনন্দের মাত্রা বাড়াতে দেখা মিলবে দুষ্ট প্রকৃতির বানরেরও। আরো দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনে পশুপাখি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে ওয়াচিং টাওয়ারের সুব্যবস্থা। ইচ্ছে করলে বনের ভেতরের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া যাবে নদী কাছে। বনের মধ্যে থাকা খাল দিয়ে ট্রলারে করে বন দেখতে দেখতে চলে যেতে পারবেন তিন নদীর মোহনা ও সমুদ্রের কাছে। সেখানে থাকবে কৃত্রিম সুবিশাল ঝাউ গাছের বাগান। শরীর ঠান্ডা করার জন্য গোসল করতে পারবেন তিন নদী ও সাগরের মোহনায়। হরিণঘাটায় রয়েছে পর্যটকদের পিকনিক করার জন্য সুব্যবস্থা।
একই সঙ্গে বলেশ্বর নদী পাড়ি দিয়ে দেখে আসতে পারবেন অপরূপ সৌন্দর্যের ম্যানগ্রোব বনাঞ্চল সুন্দরবনও। আর একটু কষ্ট করে দুই-তিন ঘণ্টার পথ অতিবাহিত করে দেখে আসতে পারবেন কুয়াকাটা সুবিশাল সমুদ্র সৈকত।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা খেকে খুব সহজেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন হরিণঘাটায়। সেক্ষেত্রে ঢাকার প্রধান দুই বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সরাসরি বাসে করে পাথরঘাটায় পৌঁছাতে হবে। বাসে করে ঢাকা থেকে পাথারঘাটাতে যেতে সময় লাগবে আট-নয় ঘণ্টা। আর একটু শান্তিময় যাত্রার জন্য যেতে পারেন নৌপথে লঞ্চে করে। লঞ্চে নৌপথে যেতে হলে সদরঘাট থেকে সরাসরি বরগুনার লঞ্চে উঠতে হবে। ১১-১২ ঘণ্টার লঞ্চ জার্নির পর কাকচিড়ায় গিয়ে নামতে হবে। কাকচিড়া থেকে মোটরবাইক অথবা মাহিন্দ্রতে করে আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে পাথরঘাটায় আসতে হবে।
পাথারঘাটায় নেমে টেম্পু, মাহিন্দ্র অথবা মোটরবাইকে যাত্রা করে ২৫-৩০ মিনিট পরই দেখা মিলবে সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গা হরিণঘাটার। বনের আশপাশে ভালো খাবার সুব্যবস্থা না থাকায় পাথারঘাটা থেকেই সব ধরনের খাবার কিনে নিতে হবে।
থাকার জায়গা
খুব বেশি উন্নত না হওয়ায় হরিণঘাটায় তেমন কোনো থাকার ব্যবস্থা নেই। রাত্রি যাপন করতে হবে পাথারঘাটাতে এসে সরকারি ডাকবাংলো অথবা কোনো আবাসিক হোটেলে। পাথারঘাটা বঙ্গোপসাগরের খুব কাছের অঞ্চল হওয়ায় সেখানে খাবার হোটেলগুলোতে পাবেন সব ধরনের সামুদ্রিক মাছও। সৌজন্যে: এনটিভি