মহিউদ্দিন আহমেদ
কিছু কিছু জিনিস দেখলে মনে হয় যেন এটি এই দুনিয়ার কিছু নয়। এমনই এক উদাহরণ হলো আমেরিকার নেভাদার ফ্লাই গিজার। ফ্লাই রেঞ্জার গিজার নামেও পরিচিত এই উষ্ণ প্রস্রবণটি নেভাদার অন্যতম আকর্ষণ। পাঁচ ফুট পর্যন্ত গরম পানি ছুড়ে দেওয়া এই ঊষ্ণ প্রস্রবণের অবস্থান আমেরিকার রুট-৩৪-এর ধারেই।
যদিও এর সৃষ্টি অনিচ্ছাকৃতভাবে। ১৯১৭ সালে সেচ কাজের জন্য কুয়া খোঁড়ার পর দেখা যায়, বের হওয়া পানির তাপমাত্রা প্রায় ২০০ ডিগ্রি, তাই এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ১৯৬৪ সালে একটি কম্পানি খনিজ অনুসন্ধানে জায়গাটি পুনর্খনন করে। কিন্তু পানির তাপমাত্রা আগের মতোই পাওয়া যায়। অতএব, আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় মুখটি। হয়তো বা মুখটি ঠিকমতো আটকানো হয়নি; কারণ কিছুদিন পর এখান থেকে গরম পানি বের হওয়া শুরু হয়। এভাবেই জন্ম হলো ফ্লাই গিজারের।
ফ্লাই গিজারটি সৃষ্টির পর থেকেই আকারে বড় হচ্ছে। বিভিন্ন রকমের খনিজ এটি থেকে বের হয়ে চারপাশে জমা হচ্ছে। এর পানি থেকে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ডোবা। রংধনুর সাত রঙে সাজানো গিজারটি দেখে মনে হয় পৃথিবীর বাইরের কিছু। শ্যাওলার কারণে এর গায়ের রং হয়েছে লাল-সবুজ। আর পানির সঙ্গে ছুড়ে মারা খনিজ পদার্থগুলো অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে রংধনুর রং সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকটি মুখ থেকে পানি বের হওয়ায় ফ্লাই গিজারটি খুব উঁচু হতে পারেনি। এর চারপাশে গড়ে ওঠা ডোবাগুলোতে পাবেন অনেক মাছ, আর আশপাশে বসবাস নানা জাতের পাখির। দুর্ভাগ্যবশত ফ্লাই গিজারটির অবস্থান মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মধ্যে। এর চারপাশ তাই কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। কিন্তু অনুমতি নিয়ে একে কাছ থেকে দেখা একেবারে অসম্ভব নয়। তা ছাড়া দিনের যেকোনো সময় রুট ৩৪ থেকে এই অদ্ভুত সুন্দর গিজারটি দেখা যায়। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ