Skip to content

অভিবাসী শ্রমিকরা যখন হাঙরের খাবার

Migrationঅনেক আশা আর ভরসায় চেপে মানুষ কাজের আশায় ভিনদেশে পাড়ি জমায়। বিশেষত উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশ থেকেই প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষ অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে বিদেশে পাড়ি জমায়। বৈধ-অবৈধ বিভিন্ন ব্যবস্থার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে তবেই একজন শ্রমিককে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বৈধ উপায়ে বিদেশে নেয়ার কথা বলে এক শ্রেণির চক্র মানুষকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে নিয়ে যায়। কখনও কনটেইনারে, ট্রলারের খোলে কিংবা বাক্সের মধ্যে ভর্তি করে শ্রমিকদের পাচার করা হয়।

প্রতিবছরই ভূমধ্যসাগরে অনেক অভিবাসী শ্রমিক মারা যায়। কখনও সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে আবার কখনও কোস্টগার্ডের তাড়া খেয়ে মানুষসমেত নৌকা ডুবে যায়। মানুষ পাচার করার এবং পাচারকাজে ব্যবহৃত পদ্ধতি কমবেশি আমরা সবাই জানি। এবং এই অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের পরে কি হয় তাও মোটামুটি আমাদের জানা। কিন্তু ঠিক ততটাই আমাদের কাছে অজানা যে, পথিমধ্যে বিভিন্ন কারণে মৃত শ্রমিকদের সঙ্গে কি করা হয়। সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা যায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার সময় মানব পাচারকারীরা হাঙরের খাবার হিসেবে মৃত শ্রমিকদের সাগরে নিক্ষেপ করে। শুধু তাই নয় অনেক সময় নৌকার ওজন কমানোর জন্য জ্যান্ত মানুষদেরও মাছের খাবার হিসেবে ফেলে দেয়া হয়। যেহেতু পুরো বিষয়টিই অবৈধ তাই এনিয়ে কোনো পক্ষই মুখ খোলে না।

গত মাসে ইতালির সিসিলি পুলিশ রাগুসা শহর থেকে সন্দেহভাজন কয়েকজন মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে। মানুষ হত্যার অভিযোগ থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পরবর্তীতে কয়েকজন শরণার্থীদের দেয়া ভাষ্যে জানা যায়, এই মানব পাচারকারীরা মৃত অভিবাসীদের মাছের খাবার হিসেবে সাগরে নিক্ষেপ করেছিল। শুধু তাই নয়, কোস্টগার্ড টহল দেয়ার সময় জোরপূর্বক সকল শ্রমিককে সাগরে মাথা ডুবিয়েও রাখা হয়। ওই ঘটনায় কয়েকজন অভিবাসী মারা যায়।

রাঘুসার ওয়েবসাইটে এক শরণার্থীর দেয়া বক্তব্যে জানা যায়, ‘আমরা তাকে বমি করতে দেখেছি এবং একটা সময় নৌকার মধ্যে পরে যেতেও দেখি। যখন আমরা বুঝতে পারলাম যে ওই মানুষটি মারা গেছে তখন কেউ একজন তাকে সাগরে ফেলে দিতে চাইছিল। কিন্তু নাইজেরিয়ার এক অভিবাসী সেটা হতে দিতে চায়নি, কারণ মৃতব্যক্তিটি তার সঙ্গে ছিল। কিন্তু একটা সময় তারা জোর করে মৃতব্যক্তিটিকে সাগরে নিক্ষেপ করে।’

ইতালি পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার শরণার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক অবৈধ উপায়ে ইতালিতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করায় এই অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *