প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর নতুন করে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালু করেছে বাহরাইনের রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা গালফ এয়ার। গতকাল সোমবার (৩১ মে ২০১৬) সকালে বাহরাইন থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে এয়ারলাইনসটি।
প্রাথমিকভাবে এই রুটে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে এই বিমান সংস্থা। সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর ২০১৩ সালের ১ মার্চ হিসাবসংক্রান্ত অনিয়মকে কেন্দ্র করে পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে যায় গালফ এয়ারের ঢাকা-বাহরাইন সরাসরি ফ্লাইট।
গালফ এয়ার বন্ধ হওয়ার অনেক আগে একই কায়দায় বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-বাহরাইন ফ্লাইট। দুই ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি নেমে আসে বাহরাইন প্রবাসীদের জীবনে। ট্রানজিট ভোগান্তির কারণে দেশে ফেরার যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকে। ট্রানজিট ফ্লাইটে দুবাই, ওমান, কুয়েত, ভারত, শ্রীলঙ্কা হয়ে একেকটি ফ্লাইট ঢাকা পৌঁছাতে ছয় থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এ দুর্দশা লাঘবে দূতাবাস ও সরকারের কাছেও দাবি জানিয়ে আসছিল প্রবাসীরা।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে গালফ এয়ারের জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) রাশেদ নিজামের সঙ্গে প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলারের একটি হিসাব নিয়ে এয়ারলাইনসটির মতবিরোধ ঘটে। রাশেদ নিজাম বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের আদালতে মামলা করেন, যার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। অন্যদিকে গালফ এয়ার সিঙ্গাপুরের ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন কোর্টে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার জন্য মামলা করে এবং এর রায় গালফ এয়ারের পক্ষে যায়। প্রবাসীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাহরাইনের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল কে এম মমিনুর রহমান, দূতাবাসের মিনিস্টার মেহেদী হাসান ও সচিব (শ্রম) মহিদুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি বারবার জানিয়েছিলেন।
গত বছরের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রথমবারের মতো দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাহরাইন যান। তিনি এ বিষয়ে বাহরাইনের রাজা (কিং) হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা, প্রধানমন্ত্রী শেখ খলিফা বিন সালমান আল খলিফা ও ক্রাউন প্রিন্স শেখ সালমান বিন হামাদ আল খলিফার সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর তাঁরা বাহরাইনে ফিরে গিয়ে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বলাকায় গালফ এয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেইফটি এবং রেগুলেশনস বিভাগের পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী মো. জিয়া-উল-কবির জিডি (পি), বাহরাইনের বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার মেহদি জাফর, গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজার হোসেইন গুলুম এবং এয়ারপোর্ট ম্যানেজার জসিম গারিব। সূত্র: কালের কণ্ঠ