রিয়াদ মাহমুদ সিকদার
পিরোজপুরের কাউখালীর চিরাপাড়া নদীতে প্রতি বছরের মতো এবারো জমজমাট হয়ে উঠছে আমন বীজের ভাসমান হাট।
কৃষকেরা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে গত কয়েক বছরে এ রকম একটানা অতি বৃষ্টিতে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া বন্যাও দেখা দিয়েছে নিম্ন এলাকায়। এবারই দীর্ঘ দিন ধরে প্রাকৃতিক বৈরী আবহাওয়ার শিকার হন তারা। এর ফলে আমন বীজতলা নষ্ট হলেও কৃষকেরা কোমড়ে আঁটসাঁট বেঁধে আবার নতুন করে আমন বীজতলা তৈরি করেছেন ফলে কৃষকেরা বীজ সঙ্কট কাটিয়ে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
এ দিকে পিরোজপুরের কাউখালীর চিরাপাড়া নদীতে প্রতি বছরের মতো এবারো জমজমাট হয়ে উঠছে আমন বীজের বিক্রয়ের ভাসমান হাট। কাউখালী শহরের দণি বন্দর এলাকার চিরাপাড়া বেইলি ব্রিজের কাছে সন্ধ্যা নদী থেকে চিরাপাড়া নদীর দুই পাড়ে আধা কিলোমিটারজুড়ে সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার বসছে আমন বীজের এ হাট। উপকূলজুড়ে আমন বীজের সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষকেরা ছুটছেন কাউখালীর ওই ভাসমান বীজের হাটে।
গত শুক্র ও সোমবার আমন মওসুমের বীজ বিক্রয়ের এ হাটে প্রায় অর্ধকোটি টাকার আমন বীজ বিক্রয় হয়েছে বলে বীজ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
কাউখালীর শিয়ালকাঠি গ্রামের বীজ বিক্রেতা জালাল সিকদার জানান, এবার দণিাঞ্চলে আমন বীজের সঙ্কট চলছে। কাউখালী অঞ্চলের জমি অন্যান্য এলাকার থেকে উঁচু বলে এখানে জলাবদ্ধতা তেমন নেই ফলে বীজতলা খুব বেশি নষ্ট হয়নি। এ কারণে অন্যান্য এলাকার কৃষকেরা আমন বীজের সঙ্কট কাটাতে কাউখালীর এ ভাসমান বীজের হাটে আসছেন। এখানে ঝালকাঠি, ভাণ্ডারিয়া, নাজিরপুর, স্বরূপকাঠি, রাজাপুর, জিয়ানগর, হুলারহাট, উদয়কাঠি, কলাখালী, ইন্দেরহাটসহ দূর-দূরান্ত থেকে কৃষকেরা এ হাটে বীজ কিনতে আসেন। পরিবহনে সুবিধার কারণে নৌকা ও ট্রলারে করে ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা এখানে বীজের হাটে আসেন।
রাজাপুর এলাকার কৃষক বাদল সিকদার এবং শিয়ালকাঠি মোকছেদ আলী বলেন, গত মওসুমে এক পোন বা ৮০ গণ্ডা চারা সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ বছর তা এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ এলাকার মাঠ অন্য অঞ্চলের থেকে অনেক উঁচু। ফলে জলাবদ্ধতাও কম। এ কারণে কৃষকেরা বীজতলা করে সফলতার মুখ দেখছেন। এখানে যুগ যুগ ধরে ধান বীজ বিক্রয়ের বাণিজ্যিক বাজার গড়ে ওঠার ফলে দূর-দূরান্তের কৃষকেরা শেষ ভরসা হিসেবে ছুটে আসেন কাউখালীর এ ভাসমান বীজের বাজারে। এ ছাড়া এলাকার উৎপাদিত ধানের চারা অত্যন্ত উন্নতমানের।
কাউখালী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আলী আজম শরীফ বলেন, আমরা মাঠপর্যায়ে নিয়মিত দেখভাল করছি। এ ছাড়া এ অঞ্চলের বীজের মান ভালো। এ কারণেই কাউখালীর ধান চারা ও বীজের ভাসমান বাজার এ জমজমাট। সূত্র : নয়া দিগন্ত