রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার
এবার এক অন্যরকম জায়গার খোঁজ দেব। যা পর্যটন কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে মহিলারাই। নারীশক্তির উত্থানের কাহিনি আলিপুরদুয়ারে। এখানে আছে বন। তার মাঝখানে চলেছে নদী। সেই নদীপথে নৌকা করে গেলে দেখা মিলতে পারে বন্যজন্তুর। তাই উত্তরবঙ্গের আমাজন বলে পরিচিত এই পর্যটনকেন্দ্র। যার পোশাকি নাম সিকিয়াঝোড়া। শীত পড়তেই তাই সেখানে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে।
আঁকা বাঁকা সিকিয়াঝোরার পিানিতে নৌকা বিহারের টানে নিত্যদিন এখানে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এই ট্যুরিস্ট স্পটের বয়স ১৬ বছর। ভারতের উত্তরের আমাজন বলে পরিচিত সিকিয়াঝোরা পর্যটন কেন্দ্র এখন লাল-নীল-সবুজের মেলা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া আলিপুরদুয়ার উত্তর পানিয়ালগুড়ি গ্রামে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বুক চিরে এগিয়েছে পাহাড়ি নদী সিকিয়াঝোরা। আর এই নদীকে কেন্দ্র করেই এই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলেছে বন দপ্তর। স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই এর পরিচালনা করেন। দায়িত্বে রয়েছেন জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি। মহিলা ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আলিপুরদুয়ারের সিকিয়াঝোরা।
গত ১৫ জুন এই পর্যটন কেন্দ্রে আচমকা ঝাঁপ পড়ে। দুর্নীতির অভিযোগে বন্ধ করে দেয় ব্লক প্রশাসন। ১৯ সেপ্টেম্বর এই পর্যটন কেন্দ্রটি ফের খুলে দেয় বন দপ্তর। ইতিমধ্যেই এই পর্যটনকেন্দ্রে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা রয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের ভিতরে যাওয়া সিকিয়াঝোরাতে প্রায় এক কিলোমিটার নৌকা বিহার করা যায়। আর জঙ্গলের ভেতর এই নৌকা বিহারের জন্য এই পর্যটন কেন্দ্রটি উত্তরবঙ্গের আমাজন বলে সুপরিচিত। এখানে শিশু উদ্যান তৈরি করা হচ্ছে। বোটিং ছাড়াও জঙ্গল লাগোয়া এই পর্যটন কেন্দ্রে হরেক রকমের আমোদ প্রমোদের ব্যাবস্থা রয়েছে। গরমাগরম তেলে ভাজা থেকে শুরু করে পাঁঠা, মুরগির মাংসের ঝোল সবই মিলবে। তবে সাময়িকভাবে এই স্পট বন্ধ থাকার সময় পর্যটন কেন্দ্রের আমুল সংস্কার করে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ঝাঁ চকচকে রেস্তোরা তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য বেশি করে বসার জায়গা তৈরি করা হয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব দমন পুর রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার প্রসেনজিৎ পাল বলেন, “সিকিয়াঝোরাকে উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে অসম্ভব নয়। গত দুমাসে এই পর্যটন কেন্দ্রে আয় হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। এই অর্থের ৪৫ শতাংশ টাকা পেয়েছেন ২৪ টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।”
ছবি: শীলা দাস, সৌজন্যে: সংবাদ প্রতিদিন