
গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হওয়ার পর বেচাকেনায় জমে উঠেছে রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর হাট।ছবিটি গত মঙ্গলবার (২৪.০৫.১৬) দুপুরে তোলা l
সময় বাঁধা ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে। রাজশাহীতে বলা ছিল, গাছে পাকলেই পাড়তে হবে। সে অনুযায়ী শুরু হয়েছে আম পাড়া। হাটে চলছে হাঁকডাক। এখন গোপালভোগের ভরা মৌসুম। আসতে শুরু করেছে ক্ষীরশাপাতিও। রাজশাহীতে বেশ জোরেশোরেই আম পাড়া এবং বেচাকেনার উৎসব শুরু হলেও শুরুর দিনটা জমেনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষমুক্ত আম সংগ্রহের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ২৫ মের আগে (গতকাল বুধবার) কোনো চাষি আম পাড়তে পারবেন না। তবে রাজশাহীতে সিদ্ধান্ত হয়, যে গাছে পাকা শুরু হবে, সে গাছের আমই পাড়া যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর গরমের তীব্রতায় আগেভাগেই আম পেকেছে। গতকাল বুধবার (২৫.০৫.১৬) এবং এর আগের দিন রাজশাহীর বড় আমের হাট পুঠিয়ার বানেশ্বরে গিয়ে সেই সত্যতা মিলল। হাটজুড়ে আম। হাটে যাওয়ার পথে দেখা যায়, সারি সারি ভটভটি ও ভ্যান আম নিয়ে ছুটছে।
এসব আমের মধ্যে বিভিন্ন জাতের গুটি আমই বেশি। রাজশাহীতে সাধারণত মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই গোপালভোগ ও জুনের প্রথম সপ্তাহে ক্ষীরশাপাতি পাকা শুরু হয়। হাটে গিয়ে এই দুই জাতের আমের নাম ধরে হাঁকডাকই শোনা গেল। তবে গোপালভোগের উপস্থিতি বেশি। কিছু চাষি ক্ষীরশাপাতি নিয়ে এসেছেন। একইভাবে চোখে পড়ল লক্ষ্মণভোগ। এটা সাধারণত জুনের ১০ তারিখ থেকে পাকা শুরু হয়।
হাটে আমের গাড়ি ঢোকার রাস্তা ফাঁকা করতে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। চাষি মোস্তাফিজ গোপালভোগ ও ক্ষীরশাপাতি নিয়ে এসেছেন। তিনি গোপালভোগ ২ হাজার টাকা ও ক্ষীরশাপাতি ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দাম হাঁকছেন। একজন ব্যবসায়ী ক্ষীরশাপাতি আমের ডালা থেকে একটি আম নিয়ে সেটার গায়ে লিখলেন ১ হাজার ৯৫০ টাকা। নিচে নিজের নাম ‘কাইজার’ লিখে স্বাক্ষর করে দিলেন। এভাবে ব্যবসায়ীরা আমের গায়ে স্বাক্ষর করছেন। চাষি রাজি হলে সেই আম নিয়ে আড়তে চলে যাচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সদরের মহানন্দা নদীর পাশে হাসপাতাল সড়কের আমবাজারে গিয়ে দেখা যায়, অল্প কয়েকজন বিক্রেতা কম পরিমাণ আমের ডালি সাজিয়ে বসে রয়েছেন। সকাল আটটা পর্যন্ত বিক্রির পরিমাণ মাত্র কয়েক মণ।
ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের এক সপ্তাহ আগে গোপালভোগসহ নানা জাতের গুটি আম পাকা শুরু হয়েছে। নির্ধারিত বাজারে না নামলেও বাগান থেকে আম বিক্রি হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে বাইরে গেছে।
জেলার দ্বিতীয় বড় বাজার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর। সকাল ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সদরের আমবাজারের চেয়ে এখানে সরবরাহ কিছুটা বেশি। জানা গেল, বাজার জমতে আরও তিন-চার দিন লাগবে। আড়তদার আবদুল আজিজ বলেন, বাইরের ব্যাপারী বাজারে এসেছেন কম, তাই বাজার জমেনি।
আমের বৃহত্তম বাজার কানসাটে সরবরাহ ছিল একেবারে কম। সৌজন্যে: প্রথম আলো