Skip to content

আলোকিত রংপুর’ নিয়ে বিটিভিতে সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান

Rangpur-BTV

পীযূষ সিকদার
বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আলোকিত রংপুর’ নামে সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠানের শুটিং শেষ করে ঘরে ফিরেছে সঙ্গীত নিকেতনের শিল্পীরা। এই অনুষ্ঠানটির রচনা ও গ্রন্থনা করেন রংপুর অঞ্চলের প্রখ্যাত কবি, নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব একেএম শহীদুর রহমান বিশু। এর সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন অবিনাশ চন্দ্র রায়। অনুষ্ঠানের গানগুলো রচনা করেছেন একেএম শহীদুর রহমান বিশু এবং সুরারোপ করেছেন পরিমল চন্দ্র বর্মন ও অবিনাশ চন্দ্র রায়। যন্ত্র সঙ্গীতে ছিলেন অবিনাশ চন্দ্র রায়, সবুজ রায়, শৈলেন চন্দ্র রায়, বিশ্বনাথ রায়। যে শিল্পীরা গান গেয়ে কথা ও সুরকে হূদয়ে ধারণ করে রংপুরের মাটি ও মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, তারা হলেন রত্না রায়, জয়া রায়, হাবিবা সুলতানা, দ্রৌপদী রায়, নন্দিতা অধিকারী। দেহভঙ্গিমায় সদানন্দ হয়ে যারা নেচেছেন, তারা হলেন সিনথি, ওয়াসিকা, ক্রান্তি, লামিয়া। নূরলদীন সেজেছিলেন পীযূষ সিকদার। বন্দনা সঙ্গীত গেয়ে ‘আলোকিত রংপুর’ অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রযোজক মোহাম্মদ মনিরুল হাসানের নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির অডিও-ভিডিও ধারণ করা হয়। প্রথমে সৃষ্টিকর্তার বন্দনা করে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। তারপর বন্দনা করা হয় সভার জ্ঞানী-গুণীজনকে। এভাবেই বন্দনা গীতের মাধ্যমেই রংপুরের সীমানার কথা উল্লেখ করা হয়।

হামার উত্তুরেতে বুড়িমারি, কুড়িগ্রাম শহর/ দক্ষিণে বগুড়া জেলার মহাস্থান গড়/পূর্বে নদ ব্রহ্মপুত্র খাড়া গারো পাহাড়/পশ্চিমে দিনাজপুর চৌহদ্দি হামার/এই বন্দনা সঙ্গীতেই আমরা জানি রংপুরের মানুষদের আতিথ্যের কথা/এলা ঘন হয়া বইসেন বাহে শোন দিয়া মন/সাগাই বাড়িত আসলে হামার কেমন আপ্যায়ন/হামার বাড়িত আইসেন বন্ধু দেমো বইসপার পিঁড়ারে/সোনার বন্ধু দিনু মাথার কিরারে।…/কাঁচা-গুইয়া পান দেমো পিতলের বাটা সাজেরে/সোনার বন্ধু দিনু মাথার কিরা রে।

‘আলোকিত রংপুর’ অনুষ্ঠানটির গানের কথায় পাওয়া যায় শ্যামাসুন্দরীর নামে খাল খননের বিবরণ। অষ্টাদশ শতকে ডিমলার রাজা জানকী বল্লভ সেন তার মাতা শ্যামাসুন্দরীর নামে খাল খনন করেন। এই খালই শ্যামাসুন্দরী খাল বা ক্যানেল নামে পরিচিত। এককালে রোগ-পীড়াগ্রস্ত ভূমি ছিল রংপুর! রংপুর ছিল অবহেলিত। ফাইলেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। অষ্টাদশ শতাব্দীর এই শ্যামাসুন্দরী খাল রংপুরের মানুষকে অসুখ-বিসুখ থেকে বাঁচিয়েছে। তাই জিয়নের মন্ত্র জানে রংপুরবাসী। তাই তো গানের মধ্যেই পাওয়া যায় রংপুরের প্রাচীন ঐতিহ্যের ছাপ। কী নেই রংপুরে! অম্পুরেতে আছে কারমাইকেল কলেজ, আছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, আছে চিড়িয়াখানা। আরও আছে—

ভাব থাকিয়া ভাওয়াইয়া গান উদাস করা সুর/হরলাল রায় কছিমুদ্দীনের কণ্ঠ সুমধুর/মহেশ রায়, সাজু মিয়া, সাজেদার গুণীজন/ভাওয়াইয়া সম্র্রাট আব্বাস উদ্দিনের শোন বিবরণ/এলা, হাকান গাড়ি-চিলমারি বন্দরের গান শোন/ঝিত্ করিয়া থাকেন তোরা, করেন না শোর কোন/রংপুরে আরও আছে রাজমোহন রায় জমিদারের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘বার্তাবহ পত্রিকা’। রংপুরে ছিল নূরলদীনের বাস। রংপুরে নূরলদীন একদিন ডাক দিয়েছিল, ‘জাগো বাহে, কোনঠে সবায়’/আহা, কী সোন্দর ফুটিছে ফুল বাগানে/সেই বাগান বানাইছেন বিধি এইখানে। ছবি : সোহেল মামুন, সৌজন্যে : ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *