Skip to content

ঈদের ছুটিতে জাফলং

আলমগীর কবির
প্রকৃতিকন্যা হিসেবে সারা দেশে একনামে পরিচিত সিলেটের জাফলং। খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়।

Jaflong

সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড়-টিলা ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি, উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও সুনসান নীরবতা যেকোনো পর্যটককে মোহাবিষ্ট করে।

এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিন দেশী-বিদেশীপর্যটকেরা ছুটে আসেন এখানে। প্রকৃতিকন্যা ছাড়াও জাফলং বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট, সৌন্দর্যের রানী- এসব নামেও পর্যটকদের কাছে পরিচিত।

ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে জাফলংয়ের আকর্ষণই যেন আলাদা। সিলেট ভ্রমণে এসে জাফলং না গেলে ভ্রমণই যেন অপূর্ণ থেকে যায়। সিলেট নগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলংয়ের অবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমে সৌন্দর্যের রূপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলংয়ের রূপ-লাবণ্য যেন ভিন্নমাত্রায় ফুটে ওঠে। ধূলিধূসরিত পরিবেশ হয়ে ওঠে স্বচ্ছ।

স্নিগ্ধ পরিবেশে শ্বাস-নিঃশ্বাসে থাকে ফুরফুরে একটি আমেজ। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মতো মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন তখন অঝোরধারায় বৃষ্টি পাহাড়ি পথ হয়ে ওঠে বিপদসঙ্কুল, এ যেন এক ভিন্ন শিহরণ। সেই সাথে কয়েক হাজার ফুট ওপর থেকে নেমে আসা সফেদ ঝরনাধারার দৃশ্য যে কারোই নয়ন জুড়ায়।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা রাজার অধীন নির্জন বনভূমি। বাংলা থেকে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটে। তার পরও বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পতিত পড়ে রয়েছিল।

Jaflong2

ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন। পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকায় গড়ে ওঠে নতুন জনবসতিও। আশির দশকে সিলেটের সাথে জাফলংয়ের ৫৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত। এরপর থেকে জাফলংয়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের কথা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

দেশী-বিদেশী পর্যটকদের পাশাপাশি প্রকৃতিপ্রেমীরাও ভিড় করতে থাকেন জাফলংয়ে। জাফলং এখন দেশের সেরা পর্যটন স্পট।

কিভাবে যাবেন
সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট জেলা সদর থেকে সড়কপথে দূরত্ব মাত্র ৫৬ কিলোমিটার। সিলেট থেকে বাস, মাইক্রোবাস বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে পারেন জাফলংয়ে। সময় লাগবে এক-দেড় ঘণ্টা।

কোথায় থাকবেন
থাকার তেমন সুব্যবস্থা জাফলংয়ে নেই। তবে যে ক’টি ব্যবস্থা আছে, তার মধ্যে জেলা পরিষদের নলজুড়ী রেস্ট হাউজ (থাকতে হলে আগে অনুমতি নিতে হবে), শ্রীপুর পিকনিক স্পট উল্লেখযোগ্য। কিছু বোর্ডিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া শ্রীপুর ফরেস্টের একটি বাঙলো আছে পর্যটকদের থাকার জন্য। সূত্র : নয়া দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *