Skip to content

ঈদে কোথায় বেড়াবেন?

ঈদের আনন্দে ঘরে বসে কি শুধু সময় পার করা যায়? মোটেও না; তাই তো মন রিফ্রেশ করার জন্য দরকার একটু ঘুরে বেড়ানো। এবারের ঈদে বন্ধুবান্ধব ও পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে আসতে পারেন দেশের বিখ্যাত সব পর্যটন স্থান।

প্রকৃতির মাঝে নিজেকে ভাসিয়ে দিন অনাবিল আনন্দে। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের কি চমৎকার মিতালি তা ঘুরে দেখতে পারেন। আনন্দের পাশাপাশি নিজেকেও নতুন করে ফিরে পাবেন।

Coxs-Bazar

কক্সবাজার

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত। পাহাড়, সাগর, দ্বীপ, নদী ও সমতল ভূমির এক অপূর্ব মিলনমেলা এই কক্সবাজার। নয়নাভিরাম এ সমুদ্রসৈকতটি অসাধারণ কিছু বৈচিত্র্যে ভরপুর। রাস্তার একপাশে পাহাড় আর অন্যপাশে ঢেউ তোলা সমুদ্র। এর প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রসৈকত। জাঁকজমকপূর্ণ লাবণী বিচ, পাথরে ঘেরা ইনানী বিচ, রাতের আকর্ষণ সুগন্ধা বিচ। এখানে রয়েছে বিখ্যাত সব দর্শনীয় স্থান। কক্সবাজারের প্রাচীন ঐতিহ্য বলা হয় রামুকে। এখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বেশ কিছু কেয়াং ও প্যাগোডা রয়েছে। ডুলাহাজরায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। হিমছড়ি পাহাড়ের ওপর থেকে সাগরের নীলজল আর পুরো কক্সবাজারের ভিউ দেখতে পারবেন। হিমছড়িতে রয়েছে মনোমুঙ্কর একটি ঝরনা। কক্সবাজারের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সোনাদিয়া দ্বীপ। মহেশখালীতে বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির রয়েছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক জীব-জন্তুর মিউজিয়াম ও অসংখ্য ছোট মার্কেটও রয়েছে।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সরাসরি বিমানে কক্সবাজার যেতে পারবেন। সরাসরি রেলের সুবিধা না থাকলেও রেলপথে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর বাসে করে যেতে হবে। এ ছাড়া বাসের সুবিধা তো আছেই। লাক্সারি এসব বাসের এসি, নন-এসি দুই ধরনের সার্ভিস রয়েছে।

কোথায় থাকবেন : বিশ্বের অন্যতম বড় সমুদ্রসৈকত আর নয়নাভিরাম কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট। এখানে ধরন অনুযায়ী এসব হোটেল প্রতিদিনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। অনলাইনেও আপনি এসব হোটেল বুকিং করতে পারবেন।

St_Martin_Island_Boat

সেন্টমার্টিন

আচ্ছা ভাবুন তো! নীল পানির সমুদ্রসৈকত, শহুরে কোলাহল থেকে অনেক দূরে, যেখানে ছুটির দিনেও ট্যুরিস্টদের উপচে পড়া ভিড় নেই। তেমনি একটি প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। নারিকেলের দ্বীপ বা ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ নামে পরিচিত। আবার অনেকেই দারুচিনি নামে চেনেন। ভ্রমণবিলাসী মানুষের অন্যতম আকর্ষণ এই প্রবালদ্বীপ। একসময় এখানে শুধু ভিনদেশি পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। চারদিকে নীল জলরাশি পরিবেষ্টিত ও নীল আকাশ সমৃদ্ধ সেন্টমার্টিন দ্বীপটি বর্তমানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এক অপূর্ব সুন্দর পর্যটন এলাকা। কেয়া গাছের প্রাচুর্যে পূর্ণ সৈকতটি সাগরের নীল পানি আর প্রবালের জন্য বিখ্যাত। সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবালদ্বীপটির সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এখানকার সাগরের নিচের প্রাণিজগত আরও বৈচিত্র্যময়। এখানে দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত ছাড়াও রয়েছে গর্জন বাগান, ঐতিহাসিক মাথিনের কূপ, শাহপরীরদ্বীপ ও ছেঁড়াদ্বীপ।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সরাসরি বিমানে বা বাসে করে কক্সবাজার যেতে হবে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফে যেতে হবে। টেকনাফ থেকে জাহাজ, ট্রলার বা স্পিডবোটে করে সরাসরি সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন : একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে রাতে থাকার জন্য প্রাসাদ প্যারাডাইস, হোটেল প্রিন্স, হোটেল অবকাশ, শ্রাবণী বিলাস, প্রিন্স হেভেন, ব্লু মেরিন, সি-ভিউসহ আরও অনেক উন্নতমানের কটেজ রয়েছে।

Srimongol3

শ্রীমঙ্গল

সিলেটের পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজারের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান শ্রীমঙ্গল। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ, যা দেখতে অপরূপ সুন্দর। পাহাড় আর সবুজের সমারোহে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা শ্রীমঙ্গল। চা বাগান, লেক, হাওর, উঁচু-নিচু পাহাড়, বন-জঙ্গল, আর রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর একটি পর্যটন স্থান। ‘চা-কন্যা’ থেকে শ্রীমঙ্গল শহরের দূরত্ব বেশি নয়। চা বাগানের এক অদ্ভুত পরিবেশ। চা গাছগুলো দেখতে কখনো সাগরের ঢেউ আবার কখনোবা বিশাল সবুজ মাঠ। সঙ্গে রংবেরঙের পাখির কলতানে মুখরিত শ্রীমঙ্গল একটি শ্রুতিমধুর এলাকা। বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, লাউয়াছড়া উদ্যান, মাগুরছড়া গ্যাসকূপ, পানপুঞ্জি, ওফিং হিল, এক মাত্র ঝরনা যজ্ঞ কু-রে ধারা, নিমাই শিববাড়ী, ‘চা-কন্যা’র ভাস্কর্য, আদিবাসী পল্লীসহ অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এখানে। যান্ত্রিক শহর থেকে নিজেকে একটু আড়াল করতে সবুজ বনানী পাহাড়-লেক, জলধারা ও চা বাগান ঘেরা মনোরম প্রকৃতির শ্রীমঙ্গল থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সরাসরি বাস কিংবা ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারবেন। রাতের ট্রেনে গেলে মধ্যরাতে আপনাকে নামতে হবে শ্রীমঙ্গল। সিএনজি কিংবা জিপের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভোর হওয়া পর্যন্ত। শ্রীমঙ্গল থেকে সরাসরি সিএনজি বা জিপগাড়িতে করে আপনার গন্তব্যে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন : পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গল ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত। এখানে পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ প্রায় ৩০টি রিসোর্ট রয়েছে। এ ছাড়াও শহরে আধুনিক মানের ১৫টি হোটেল রয়েছে।

পাহাড়ের ঝিরিপথে ট্রেকিং

বান্দরবান

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পাহাড়ি সবুজের সমারোহ আর মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা কার না থাকে! এ জন্য বান্দরবানের জুড়ি নেই। নীলগিরিতে মেঘের সঙ্গে খেলা করার অপূর্ব সুযোগ রয়েছে। নীলগিরি পাহাড়ের উপরে আপনাকে মেঘ ছুঁয়ে যাবে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মন্দির বা প্যাগোডা ঐতিহাসিক স্বর্ণমন্দির। সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি সুদৃশ্য এই স্বর্ণমন্দিরটি আসলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র তীর্থস্থান। পাহাড়ের খাদে কৃত্রিম হ্রদ, শিশুপার্ক, নৌকা ভ্রমণ, ঝুলন্ত সেতু ও চিড়িয়াখানা নিয়ে মেঘলার অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পড়ার মতো। পাহাড়ের ওপর নির্মিত নীলাচল ও শুভ্রনীলা থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য অপরূপ। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে। পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে ভেসে যাওয়া মেঘের ভেলা দেখতে পাবেন। শৈলপ্রপাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। কেওক্রাডংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে সুউচ্চ বড় পাহাড়গুলো ঠিক আপনার পায়ের নিচে মনে হবে। জাদিপাই ঝরনা অরণ্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে বিস্ময়! পাহাড়কে ক্রমাগত ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে গায়ে রংধনু এঁকে দিচ্ছে জাদিপাই ঝরনা। আধখানা চাঁদের আকৃতি নিয়ে রিমঝিম শব্দে সারাটা এলাকা মাতিয়ে রেখেছে যে ঝরনা, তার নাম চিংড়ি ঝরনা। এ ছাড়া বান্দরবানের বগালেক, রিঝুক ঝরনা ও মিলনছড়িসহ আরও বেশ কয়েকটি দেখার মতো স্থান রয়েছে। বগালেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুরন্ত সবুজ পাহাড়ের দেয়াল। বান্দরবানের পাহাড়ে মন নাচে আহারে! কথাটি মনে বাজবে যদি আপনি একবার ঘুরে আসতে পারেন।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে বাসে করে সরাসরি বান্দরবান যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম হয়ে বান্দরবান যেতে দেশের যে কোনো এলাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম যেতে হবে। সেখানের বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে বাসে করে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন : বান্দরবান সদরে বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে। হোটেল ফোর স্টার, হোটেল গ্রিন হিল, হোটেল হিল বার্ডসহ আরও অনেক উন্নতমানের হোটেল রয়েছে। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

All-Tour-2-(14.09.15)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *