Skip to content

উৎসবে, অবসরে, পাহাড়ের প্রান্তে

Rangamati5

পপেন ত্রিপুরা
ঈদসহ যে কোনো উৎসবের ছুটিতে অথবা অলস অবসরে পোড়ামাটির যান্ত্রিক শহরে বসে না থেকে ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়ের বন-বনানীর প্রান্তরে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়-পর্বত ঘুরে প্রকৃতির ছোঁয়ায় নিজেকে সতেজ করতে পারেন ক্ষণিকের জন্য হলেও। এই তিন পাহাড়ের আকাশে এখনো বিশুদ্ধ বায়ু বয়ে চলেছে। অন্য কোথাও নয়, একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান ঘুরে মনের তৃপ্তি মেটাতে পারবেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন। উপভোগ করতে পারেন সুদূর বিদেশে ভ্রমণ করার স্বাদ। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে রয়েছে প্রকৃতির দান সুউচ্চ পাহাড়-পর্বত, গুহা, ছড়া-ঝিরি-ঝরনা, দীঘি-পুকুর, পার্ক। এখানে রয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, বিশালাকার বটবৃক্ষ, দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ বুদ্ধ মূর্তি, সর্বোচ্চ খাল, এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ, সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ায় অবস্থিত আদিবাসী গ্রামসহ অপূর্ব-অপরূপ সব প্রাকৃতিক দৃশ্য। এ ছাড়া রয়েছে মনোমুগ্ধকর সুন্দর সুন্দর জলপ্রপাত, রাজবাড়ী, বৌদ্ধবিহার, বৌদ্ধমূর্তিসহ নানা ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা ও প্রাকৃতিক মনোরম দর্শনীয় দৃশ্য।

Rangamati3

চলুন প্রথমে ঘুরে আসি নয়নাভিরাম প্রকৃতির রানি ঐশ্বর্যময় খাগড়াছড়িতে। চট্টগ্রাম বিভাগের এই জেলার আয়তন ২৬৯৯.৫৫ বর্গকিলোমিটার। এই খাগড়াছড়ি জেলাতেই ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। অসাধারণ প্রাকৃতিক লীলাভূমি খাগড়াছড়ি জেলা শহরের এক পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে পশ্চিম থেকে পূর্বে বয়ে গেছে পাহাড়ি নদী ‘সিয়াই তৈমা’। সিয়াই তৈমা শব্দগুচ্ছটি ককবরক (ত্রিপুরা ভাষা) শব্দ। কোনো এক কিংবদন্তি নারী মহীয়সীর নাম ছিল সিয়াই। তবে বাংলা চেঙ্গি নামটিই নথিপত্রে লিপিবদ্ধ ও সমধিক পরিচিত। এ জেলায় বসবাস করে প্রধানত চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা জনগোষ্ঠী। এ ছাড়া রয়েছে সাঁওতাল, গারো, রাখাইন, তঞ্চঙ্গ্যা, বাঙালি জনগোষ্ঠী। যেমনি বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী তেমনি বৈচিত্র্যময় এখানকার সংস্কৃতিও।

Rangamati8

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সদরসহ আশপাশে বেড়ানোর জন্য আছে অসামান্য সুন্দর সুন্দর ও বৈচিত্র্যময় জায়গা। জেলার নয়টি উপজেলায় রয়েছে চোখজুড়ানো, মনভোলানো প্রাকৃতিক-কৃত্রিম অনেক দর্শনীয় স্থান। এখানে পাবেন আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, এই পর্যটনেই রয়েছে প্রাকৃতিক রহস্যময় সুরঙ্গ এবং পর্যটনের পাশেই রয়েছে আলুটিলা তেরাং তৈকালাই (রিসাং ঝরনা)। আরো আছে জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক, হেরিটেজ পার্ক, মাতাই তুয়ারি (দৈব জলাশয়। দেবতা পুকুর নামে সমধিক পরিচিত), মানিকছড়ি বনলতা অ্যাগ্রো প্রাইভেট, পুরোনো রাজবাড়ী, পানছড়ি অরণ্য কুটির, রাগড়ের কৃত্রিম হ্রদ, চা বাগান, বিডিআর-এর জন্ম স্মৃতিসৌধ, মহালছড়ি হ্রদ, ত্রিপুরা মহারাজার খননকৃত দীঘি, দীঘিনালা বন বিহার, সাধনাটিলা বন বিহার, তৈদু তৈসানি তেরাং তৈকালাই (ঝরনা), শিবছড়ির শিব মন্দিরের বিশালাকৃতির শিব মূর্তি, মাটিরাঙার শতবর্ষী বটবৃক্ষ, ভগবান টিলা, খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড, খাগড়াছড়ি সদরে মং রাজার নতুন রাজবাড়ীসহ অসংখ্য প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান।

Rangamati9

খাগড়াছড়ি থেকেই ঘুরে আসতে পারেন রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক উপত্যকা, দুই টিলা ও তিনটিলা, হাজাছড়া ঝরনা ইত্যাদি জায়গায়। সব মিলিয়ে কমপক্ষে ২৫-৩০টি পর্যটনকেন্দ্র, প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে খাগড়াছড়িতে।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ৩১৬ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ১০৯ কিলোমিটার। ঢাকার কমলাপুর, ফকিরাপুল, কলাবাগান, সায়েদাবাদ, মতিঝিল থেকে এসি-ননএসি শান্তি পরিবহন, শ্যামলী, হানিফ, ঈগল, সেন্ট মার্টিন, এস আলম, সৌদিয়া ইত্যাদি দিবা-নৈশবাসে সরাসরি যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি বাসভাড়া ৫২০ টাকা (নন এসি) থেকে ৭০০ টাকা (এসি)। চট্টগ্রাম থেকে ১৭০ টাকা (লোকাল) থেকে ১৯০ টাকা (বিরতীহীন) মাত্র।

কোথায় থাকবেন
সরকারি পর্যটন মোটেল, হোটেল গাইরিং, ইকোছড়ি ইনন, হোটেল লবিয়ত, হোটেল শৈল সুবর্ণা, হোটেল নূর, হোটেল বাঁনৌক, খাগড়াছড়ি রেস্টহাউস, দীঘিনালা রেস্টহাউস ইত্যাদি। এ ছাড়া রয়েছে শত শত লোকাল হোটেল।

Rangamati10

কোথায় খাবেন
খাংময় রেস্টুরেন্ট (পানখাইয়াপাড়া), সিস্টেম রেস্টুরেন্ট (পানখাইয়াপাড়া), প্রৈংজাক রেস্টুরেন্ট (খাগড়াপুর), চিটাগাং রেস্টুরেন্ট (খাগড়াছড়ি বাজার), মেহমান হোটেল (খাগড়াছড়ি বাজার), ফেনী হোটেল (খাগড়াছড়ি বাজার), ইজর রেস্টুরেন্ট (মহাজনপাড়া), ভাতঘর (খাগড়াছড়ি বাজার), মমতা বিরানী হাউস (খাগড়াছড়ি বাজার), টঙ রেস্টুরেন্ট (মহাজনপাড়া), রাখাইন হোটেল (দীঘিনালা লারমা স্কোয়ার), পাহাড়িকা হোটেল (দীঘিনালা বাসস্ট্যান্ড), দাড়ি হোটেল (দীঘিনালা বাসস্ট্যান্ড) ইত্যাদি। এর মধ্যে খাংময়, সিস্টেম, ইজর, প্রৈংজাক, রাখাইন হোটেল, পাহাড়িকা, দাড়ি হোটেলগুলোতে পাবেন সার্বজনীন খাবারসহ আদিবাসী খাবার।

দর্শনীয় স্থানগুলোতে কীভাবে যাবেন
নিজস্ব গাড়ি থাকলে একজন স্থানীয় গাইড নিলে চলবে। এ ছাড়া লোকাল বাসে করেও যাওয়া যায় স্পটগুলোতে। ভাড়ায় পাওয়া যায় চাঁন্দের গাড়ি, সিএনজি, মাহিন্দ্র, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ইত্যাদি পরিবহন। এ ছাড়া প্রতিটি হোটেলে পর্যটন স্পটের বিবরণী ও ভৌগোলিক নির্দেশনার প্রচারপত্র থাকে।

Rangamati7

জেলা শহর থেকে আলুটিলায় জনপ্রতি আসা-যাওয়া খরচ পড়বে ১০০ টাকা। মাটিরাঙার শতবর্ষী বটবৃক্ষ দেখতে ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা, মাতাই তুয়ারি (দৈব জলাশয়) যেতে লাগবে ৩০০ টাকা। মানিকছড়ি রাজবাড়ী ও বনলতা অ্যাগ্রো প্রাইভেটে ৩০০ টাকা, রামগড়ে যেতে ৪০০ টাকা, দীঘিনালায় যেতে ভাড়া পড়বে ১০০ টাকা। সাজেকে যেতে চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ ভাড়া নেবে ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা, সিএনজি ৪,০০০ টাকা, মোটরসাইকেলে ১,২০০-১,৫০০ টাকা।

তাই আর দেরি কেন চলুন ঘুরে আসি খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থানগুলোতে।

Rangamati11

আলুটিলা পর্যটন
সৌন্দর্যের ঐশ্বর্যময়ী খাগড়াছড়ি শহরের প্রবেশপথেই আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। কেন্দ্রের প্রধান ফটকের দুই পাশে বটগাছ দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকে পর্যটককে স্বাগত জানানোর জন্য। চাইলে সরাসরি বাস থেকে নেমে প্রবেশ করতে পারেন পর্যটনে। জেলা শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার পশ্চিমে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রটি। এ টিলায় দাঁড়িয়ে সমগ্র খাগড়াছড়ি শহর ক্যামেরাবন্দি করেও আনতে পারেন। এখানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও রয়েছে। রয়েছে একটি ডাকবাংলো, হোটেল ইমাং। এখানে রাতযাপনও করতে পারেন। এখানেই রয়েছে সেই প্রাকৃতিক রহস্যময় আলুটিলা সুড়ঙ্গ। পর্যটন থেকে কিছুদূর গেলেই আলুটিলা তেরাং তৈকালাই (রিসাং ঝরনা)। এই পর্যটনের আশপাশের এলাকায় দেখতে পাবেন আদিবাসীদের জুমক্ষেত।

আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গ
পর্যটনের সমতলভাগেই সুড়ঙ্গের মুখ। পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলেই সুড়ঙ্গের মুখ দেখতে পাবেন। এ সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২৮২ ফুট। সুড়ঙ্গমুখের ব্যস ১৮ ফুট। শিলামাটির ভাঁজের প্রাকৃতিক এ সুড়ঙ্গের ভেতরে নিকষ কালো অন্ধকার। চুয়াঁ বাতি (মশাল) বা টর্চলাইট নিয়ে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করতে হয়। সেখানকার ছোট ছোট ত্রিপুরা শিশু এই চুয়াঁ বাতি বিক্রি করে। প্রতিটি চুয়াঁ বাতির দাম মাত্র ১০ টাকা। সুড়ঙ্গের এ-মুখ থেকে ও-মুখে গিয়ে বেরোতে সময় লাগে ১৫-২০ মিনিট। সুড়ঙ্গের ভেতরে দেখতে পাবেন বিভিন্ন সময় পর্যটকদের আঁটানো স্মৃতিলেখা। উড়তে দেখবেন ছোট ছোট বাদুড়ও। সুড়ঙ্গ শেষ হলে ওপাশেও আরেকটি সিঁড়ি রয়েছে, যেখান থেকে প্রস্থান হতে পারবেন।

Rangamati12

তেরাং তৈকালাই (রিসাং ঝরনা)
তেরাং মানে পাথুরে খাড়া পাহাড় আর তৈ মানে পানি এবং কালাই মানে পড়া। তেরাং তৈকালাই মানে হলো পাথুরে খাড়া পাহাড়ের আছড়ে পড়ন্ত পানি। জেলা সদর থেকে আলুটিলা পর্যটন পেরিয়ে কিছুদূর পশ্চিমের মূল সড়ক থেকে দক্ষিণ-পূর্বে গেলেই তৈরাং তৈকালাই ঝরনার কলকল প্রকৃতির গান শুনতে পাবেন। জেলা শহর থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরত্বে এ ঝরনা বিরামহীন কলকলানি গান গেয়ে চলে সারাক্ষণ। প্রায় ৩০-৪০ হাত উঁচু পাহাড় থেকে ঝরনার পানি আছড়ে পড়ে। ঝরনার নিচে নামার জন্য তৈরি করা হয়েছে সিঁড়ি। নিচে থেকেই ঝরনাটি উপভোগ করা যায়।

জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক
খাগড়াছড়ি চেঙ্গী ব্রিজের পাশেই সরকারি পর্যটন মোটেল। আর মোটেল থেকে মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যে জিরোমাইল এলাকায় রয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক। এই পার্কের মধ্যে আছে শিশু বিনোদনের নানান উপাদান, ঝুলন্ত ব্রিজ, কৃত্রিম হ্রদ, পার্কজুড়ে রয়েছে নানান ফুল ও ফলদ বাগান। এখানে কুলিং কর্নারও রয়েছে। আছে পিকনিক স্পট। পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় খাবারের আয়োজনও করতে পারেন।

Rangamati14

হেরিটেজ পার্ক
পর্যটন মোটেলের সামনেই চেঙ্গী নদীর তীরে অবস্থিত জেলা আনসারের পরিচালিত হেরিটেজ পার্ক। ২০০৭ সালে গড়ে তোলা হয়েছে এ পার্ক। এখানে ছোট ছোট টংঘর বা মাচাং ঘর রয়েছে, যেখানে দুজনার আলাপচারিতায় হারিয়ে যেতে পারেন।

মাতাই তুয়ারি (দৈব কুয়া)
মাতাই অর্থ দেবতা আর তুয়ারি অর্থ জলাশয়। মাতাই তুয়ারি মানে দৈব জলাশয়। তবে মাতাই পৌখিরি নামেই সমধিক পরিচিত। আর বাংলায় সহজ করতে গিয়ে ব্যাকরণের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘিত হয়ে নাম বিশেষ্য ‘মাতাই পৌখিরি’ পরিচিত লাভ করে ‘দেবতা পুকুর’। এ নিয়ে অনেক তর্ক রয়েছে জেলার সচেতন মহলে। জেলা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে (খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কে) মাইসছড়ি বাজার অবস্থিত। সেখান থেকে পশ্চিমে আরো পাঁচ কিলোমিটার গেলে একটি ত্রিপুরাপাড়া রয়েছে। নাম থলিপাড়া। এটি খাগড়াছড়ি সদরের নূনছড়ি মৌজায় অবস্থিত। চেঙ্গী নদী থেকে সৃষ্ট ছোট নদী নূনছড়ি। ছোট এই পাহাড়ি নদীর নামানুসারেই মৌজার নাম নূনছড়ি মৌজা। থলিপাড়ার দোকান এলাকা পর্যন্ত গাড়ি নেওয়া যায়। সেখান থেকে হেঁটে সিঁড়ি বেয়ে মাতাই তুয়ারিতে পৌঁছাতে হবে। সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় এক হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এ দৈব জলাশয়। স্বচ্ছ, সলিল বারি ও স্রোতহীন এ জলাশয়। এ জলাশয়ের বিশেষত্ব হলো, এখানে নেমে স্নান করলেও পানি কখনো ঘোলা হয় না।

Rangamati15

পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বিভাবে প্রায় এক হাজার ফুটের ওপর এর অবস্থান। পুকুরের আকার দৈর্ঘ্যে ১৫০০ ফুট এবং প্রস্থে ৬০০ ফুট। এ দৈব জলাশয়ে স্নান করে মানত করলে যা চাওয়া হয়, তা পাওয়া যেত বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এ জলাশয় সৃষ্টি নিয়েও রয়েছে এক আজব কাহিনী। জলাশয়টির পূর্বাবস্থা ছিল পাহাড়। আর এই পাহাড়েই জুম চাষ করত সেখানকার ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লোকজন। কোনো একদিন কোনো এক জুমিয়ার স্বপ্নে দেখা দিয়ে পাহাড় দেবতা পাহাড়টিতে জুম চাষ করতে বারণ করেন। কিন্তু জুমিয়া লোকটি পাহাড় দেবতার বারণ না মেনে জুম চাষ করতে থাকে। এভাবে বারবার স্বপ্নে দেখা দিয়ে বারণ করতে থাকেন পাহাড় দেবতা। এক রাতে আবার স্বপ্নে এসে পাহাড় দেবতা বলে দেন যে, এ জুমের ফসল ঘরে তুলতে হলে এখানে নরবলি দিতে হবে। তা না হলে বিরাট কিছু অঘটন হবে। কিন্তু তাও শোনেনি জুমিয়ারা। কয়েক দিন গত হওয়ার পর এক রাতে হঠাৎ পাহাড়টি ধসে জুমক্ষেত ধ্বংস হয়ে যায়। সকালে জুমিয়ারা গিয়ে তাদের জুমক্ষেত আর দেখতে পায়নি। সেখানে সৃষ্টি হয়েছে একটা জলাশয়। তাই সেখানকার প্রাচীন লোকেরা এ জলাশয়ের নাম দেয় ‘মাতাই তুয়ারি’। সৌজন্যে: এনটিভি

Rangamati6

Rangamati2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *