
গত বছর পয়লা বৈশাখে গুয়াংজু শহরের চোসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে এক হয়েছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
অতনু চক্রবর্তী পুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া
দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ভিনদেশে বৈশাখের হাওয়া কি তাঁদের গায়েও লাগে? চারটি দেশ থেকে প্রবাসী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাঁদের গত বৈশাখের স্মৃতি আর এবারের বৈশাখের পরিকল্পনার কথা।
আমি এখানে অণুজীববিজ্ঞান বিষয়ে পড়ছি। দেশের বাইরে প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে কোনো উপলক্ষ পেলে আমাদের আন্তরিকতার কমতি থাকে না। আর যদি হয় পয়লা বৈশাখ, তাহলে তো কথাই নেই!
গত বছর পয়লা বৈশাখ পালন করেছিলাম গুয়াংজু শহরের চোসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে। গুয়াংজু শহর রাজধানী সিউল থেকে বেশ খানিকটা দূরে। কিন্তু খুব সুন্দর। চোসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও দারুণ। পাহাড়ে ঘেরা আর ফুলে ফুলে সুশোভিত। পয়লা বৈশাখে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়েছিলাম। সবার পরনে ছিল দেশি পোশাক আর খাবারের আয়োজনেও ষোলো আনা বাঙালিয়ানার ছাপ।
মেয়েরা পরেছিলেন শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা। খাবারের আয়োজনে ছিল পান্তা ভাত, ভর্তার কয়েক রকম পদ (ডাল ভর্তা, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা ইত্যাদি) আর অবশ্যই ইলিশ মাছ ভাজা! সত্যি কথা বলতে কি বাংলা ভাষা, বাংলা কথা, বাংলাদেশি পোশাক, বাঙালি খাবার—সব মিলিয়ে গুয়াংজু শহরের কোণে এই ছোট্ট ক্যাম্পাসটুকু হয়ে গিয়েছিল আমাদের এক টুকরো বাংলাদেশ।
আমাদের এই ভিন্ন পোশাক-আশাক দেখে অনেকেই অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন। দুই সিনিয়র আপুকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখে একটা কোরিয়ান পরিবার এত মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল, চলে এসেছিল তাঁদের সঙ্গে ছবি তুলতে। ওদের কৌতূহল দেখে আমরাও খুব মজা পাচ্ছিলাম। খুব ভালো লাগে আমাদের দেশ, কৃষ্টি, ভাষার প্রতি বিদেশিদের এই আগ্রহ দেখে। এবারও আশা করি পয়লা বৈশাখে দারুণ একটা দিন কাটবে। সৌজন্যে : প্রেথম আলো