মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান
এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম। বলা হয় আল্লাহর নিজের বাগান। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ের কোলে আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি ছোট্ট এই গ্রামটির নাম মাওলিনং। ঘন সবুজের আড়ালে মেঘ আর সূর্য এখানে রোজ লুকোচুরি খেলতে আসে। এক ঝলক দেখে মনে হয় এর প্রত্যেকটা বাঁক বুঝি সেই ছোট বেলায় পড়া চিনা রূপকথার বইয়ের পাতা থেকে উঠে এসেছে।
গ্রামটিতে প্রবেশে কোথাও কোনো কাদা বা ময়লা আবর্জনার স্তুপ চোখে পড়বে না। চারদিকের পরিবেশ এতটাই মনোরম, যা হাঁটার সময় একটা ভিন্ন অনুভূতির রাজ্যে নিয়ে যায়।
মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মাওলিনং। বাংলাদেশের তামাবিল সীমান্ত থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে। মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি পার্বত্য জেলার এই ছোট্ট গ্রামটিতে বসতবাড়ি ৯৫টি। আর বসতি মাত্র ৫০০ জন মানুষের।
এখানে ছোট ছোট শিশুদের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়। খাসি সম্প্রদায় অধ্যুষিত এই গ্রামে স্বাক্ষরতার হার শতভাগ। খাসি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মেনে এখানকার সমাজও মাতৃতান্ত্রিক। খাসি সমাজে ধন-সম্পদের মালিক হন মেয়েরা। মায়ের সম্পদের একমাত্র উত্তরাধিকারী হন সবচেয়ে ছোট মেয়েটি। মায়ের নামের পদবি গ্রহণ করে সন্তানরা।

পাহাড়ি নদীর উপর প্রাকৃতিকভাবে তৈরি গাছের শেকরের সেতু (লিভিং রুট ব্রিজ)।
কৃষি প্রধান এই গ্রামে প্রধান কৃষিজাত দ্রব্য সুপারি ও বাদাম।
এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পৃথক পরিচ্ছন্ন টয়লেট আছে। টয়লেটের ময়লা লেক বা খালের পানিতে পড়তে দেয়া হয় না।
এই গ্রামে বাঁশের তৈরি ডাস্টবিনে সব আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। একটি বড় গর্ত (পিট)-এ এসব আবর্জনা সংগ্রহ করে ভবিষ্যত জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। স্বেচ্ছাসেবীরা নিয়মিত সড়ক ঝাড়ু দেন।
রাস্তায় কেউ কখনো ভুলেও আর্বজনা ফেলে না। গ্রামটিতে প্লাস্টিকের যেকোনো সামগ্রী নিষিদ্ধ। গ্রামের জঙ্গল এবং সবুজায়ন রক্ষা করতে মাওলিননংয়ের বাসিন্দারা নিয়মিত গাছ লাগান। গ্রামের পাহাড়ি একটি ঝর্নার উপরে গাছের শিকড়ের তৈরি সাঁকো গোটা ভারতে অন্যতম বিস্ময়।
প্রত্যন্ত এ গ্রামটিতে ২০০৩ সালের আগে পর্যটকরা যেতেন না। সেখানে কোনো সড়ক পর্যন্ত ছিল না। যেতে হতো শুধু পায়ে হেঁটে। কিন্তু সে দৃশ্য এখন বদলে গেছে। গ্রামের রাস্তাঘাট ঝকঝকে তকতকে, ময়লা-আবর্জনার দেখা পাওয়া যায় না। চারপাশে কেবল ফুলের বাগান।
সবচেয়ে বড় কথা এই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কোনো হিংসা বিভেদ নেই। তাই সবাই মিলে একে অপরকে সাহায্য করে বলেই এখন পর্যন্ত গ্রামটিকে পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয়েছে।

মাওলিনং গ্রামের নদীর পাশে লেখক ও ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাবের প্রেসিডেন্ট
গ্রামটিতে প্রথম সড়ক নির্মিত হয় ২০০০ সালের পর। এরপর ডিসকভার ইন্ডিয়া নামে একটি ট্রাভেল ম্যাগাজিনের এক সাংবাদিক ঘুরে যান গ্রামটি। তিনি ম্যাগাজিনটির একটি নিবন্ধে গ্রামটিকে এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে আখ্যা দেন। ২০০৩ সালে মাওলিনংকে এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রামের শিরোপা দেয় ডিসকভার ইন্ডিয়া।
২০০৫ থেকে এই গ্রাম ভারতের পরিচ্ছন্নতম গ্রাম, টুরিস্টদের অন্যতম প্রিয় ডেস্টিনেশন। গড়ে এখানে রোজ ২০০ জন পর্যটক আসেন। কিন্তু কঠোরভাবে তাদের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সতর্ক করা হয়। লেখক: ঢাকা ট্যুরিস্ট ক্লাবের প্রেসিডেন্ট

পূর্ব থেকে ডাউকি রুটে যাদের ভিসা আছে এই ট্যুর তাদের জন্য। ট্যুরের সম্ভাব্য তারিখ ২৭ জুন ২০১৭। খরচের অন্তর্ভূক্ত: ট্রান্সপোর্ট, খাবার, ট্রাভেল ট্যাক্স, তাবু ভাড়া, গেস্ট হাউজ ভাড়া, ক্রাং সুরি ফলস ও জৈন্তা হিলস-এ ডে ট্যুর, ট্যুরিস্ট প্লেসে এন্ট্রি টিকেট।
Pingback: ঈদের বন্ধে শিলং-চেরাপুঞ্জি | Dhaka Tourist Club
Pingback: শিলং-চেরাপুঞ্জির ভ্রমণ খরচ কমলো স্পট বাড়লো | Dhaka Tourist Club
Pingback: ১৫ ডিসেম্বর শিলং-চেরাপুঞ্জি-গৌহাটি ট্যুর | Dhaka Tourist Club
Pingback: ২ ফেব্রুয়ারি শিলং-চেরাপুঞ্জি-সোনংপেডাং ফেমিলি ট্যুর | Dhaka Tourist Club
Pingback: শিলং-চেরাপুঞ্জি-জৈন্তা হিলস ঈদ ট্যুর | Dhaka Tourist Club
Pingback: এবারের চেরাপুঞ্জি ট্যুর ভরা বর্ষায় | Dhaka Tourist Club
Pingback: Dhaka Tourist Club
Pingback: ঈদে চলুন শিলং-চেরাপুঞ্জি ঢাকা ট্যুরিস্টের সাথে | Dhaka Tourist Club
Pingback: বিশেষ গ্রুপ ট্যুরে শিলং-চেরাপুঞ্জি চলুন নভেম্বরের ১ তারিখে | Dhaka Tourist Club
Pingback: ঈদে চলুন শিলং-চেরাপুঞ্জি ঢাকা ট্যুরিস্টের সাথে | Dhaka Tourist Club