Skip to content

কক্সবাজার ঘিরে মহাপরিকল্পনা

গোলাম রাব্বানী
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এতে রয়েছে আধুনিক রেলপথ ও আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নির্মাণ এবং ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রকল্প। এ ছাড়া ৩৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারে যে ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে তার মধ্যে থাকবে টেকনাফের সাবরাংয়ে ১৬৪ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। একই উপজেলার জালিয়ার দ্বীপে থাকবে আরও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর ফলে টেকনাফ স্থলবন্দরের সন্নিকটে নাফ নদীর বুকে ভাসমান ২৭২ একরের জালিয়ার দ্বীপ পর্যটকদের জন্য হবে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

Coxs-Bazar

এ ছাড়া মহেশখালীতে থাকবে তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও একটি ফ্রি ট্রেড জোন। এসব প্রকল্পে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান ঘটবে।

এদিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এ ছাড়া রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কক্সবাজারের রেল লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে সড়ক পথের সব ঝক্কি-ঝামেলা এড়িয়ে পর্যটকরা আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারেন। এ ছাড়া মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ এ অঞ্চলে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রেলপথে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারে যাতায়াত করা যাবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে রেল মন্ত্রণালয়। ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয়ের এক বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা) সহযোগিতা হিসেবে দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাকি অর্থ দেবে সরকার।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত-সংলগ্ন কলাতলী পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পের আওতায় আরও কিছু সমন্বিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে টঙ্গী-ভৈরববাজার-আখাউড়া মিটার গেজ ডাবল ট্র্যাকে রূপান্তর, ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে লাকসাম-চট্টগ্রাম মিটার গেজ ডাবল ট্র্যাকে প্রতিস্থাপন এবং ফৌজদারহাট-চট্টগ্রাম বন্দর সেকশনের মিটার গেজ ডাবল ট্র্যাকে রূপান্তর করা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের রেল কনটেইনার টার্মিনালের রি-মডেলিং, চট্টগ্রাম-দোহাজারীর বর্তমান মিটার গেজ লাইনকে ডাবল ট্র্যাকে রূপান্তর, একটি নতুন অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণ এবং গাজীপুর পুবাইল-ধীরাশ্রম রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ লা?ইন নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রাম ডুয়েল গেজ রেলিং স্টকের জন্য ক্যারেজ-ওয়াগন, লোকো ওয়ার্কশপ, ফুয়েলিং ব্যবস্থা ও আলাদা ডিপো স্থাপন করা হবে বলেও জানান তারা।

All-Tour

রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কাছে কলাতলী রেলপথটি বাড়ানো হবে। ‘প্রকল্পের আওতায় সেখানে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করা হবে। এতে কিছু মহাপরিকল্পনাও রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ব্রডগেজ ও ডুয়েল গেজ লাইনের ব্যবস্থা রাখায় ব্যয়ের তারতম্য হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫২ কেজির পরিবর্তে ৬০ কেজি রেল ব্যবহার করা হবে। প্রয়োজনীয় রেল সংগ্রহ, স্পেশাল উডেন স্লিপার, ব্যালাস্ট, মাটির কাজসহ ছয়টি স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করা হবে। ২০২৩ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *