Skip to content

কালো চিতারা ঘুরে বেড়াচ্ছে ডুয়ার্সের জঙ্গলে

নতুন বছরের প্রথম দিনেই সুখবর পাওয়া গেছে। জঙ্গলে ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছিলেন বন দফতরের কর্তারা। তাতে ধরা পড়েছে ওরা। একটি নয়। একাধিক। আকারে একবারে চিতাবাঘের মতো। রঙ অবশ্য কালো। অনেকটা ভুষোকালির মতো। সেই কালো রঙের ভিতর দিয়েও চামড়ায় চিতাবাঘের চাকা চাকা দাগ ফুটে ওঠে। নাম ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ বা ‘কালো চিতা’। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্সের বক্সা প্রকল্পে দেখা মিলেছে প্রাণীটির। ডুয়ার্সের জঙ্গলের জীববৈচিত্র্যে এ এক নতুন সংযোজন।

ঠিক এক বছর আগে বন দফতরের ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল একজোড়া ব্ল্যাক প্যান্থার। তার পর দিনের এক টুরিস্ট গাইড ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন প্রাণীটিকে। এর পরেই বক্সার জঙ্গলে বসানো হয় ১৪০টি ট্র্যাপ ক্যামেরা। বিভিন্ন জঙ্গলে জীববৈচিত্র্যে কোনও পরিবর্তন হল কি না, সেটা দেখার জন্যই বসানো হয় এই ধরনের ক্যামেরা। রাজ্যের বন দফতরের এক পদস্থ কর্তা শুক্রবার বলেন, ‘গত সাতদিন ধরে জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় বসিয়ে রাখা একাধিক ক্যামেরায় একাধিক ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি উঠেছে। প্রতিটি প্রাণী একে অপরের থেকে আলাদা। এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে, বক্সার জঙ্গলে চিতাবাঘের পাশাপাশি রয়েছে ব্ল্যাক প্যান্থারও।’

রাজ্যের চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন বিনোদ যাদব বলেন, ‘‘বক্সা টাইগার রিজার্ভের বিভিন্ন এলাকায় বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্ল্যাক প্যান্থারের আনুমানিক ৩০টি ছবি তুলেছে। সেগুলি পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, ওই জঙ্গলের অভয়ারণ্যে অন্তত ৮টি ব্ল্যাক প্যান্থার রয়েছে।’’ শুধু তা-ই নয়, ব্যাঘ্র প্রজাতির ‘ক্লাউডেড লেপার্ড’ এবং ‘গোল্ডেন ক্যাট’ও পাওয়া গিয়েছে ওই বনাঞ্চলে। যাদবের দাবি, ক্লাউডেড লেপার্ডের সংখ্যা আনুমানিক ৩০টি। গাছের উপর গোল্ডেন ট্র্যাকের ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও তাদের সংখ্যা কত তা, এখনও স্পষ্ট নয় বলেই জানাচ্ছেন যাদব। তবে ব্ল্যাক প্যান্থার, ক্লাউডেড লেপার্ড, গোল্ডেন ক্যাটেরা জীববৈচিত্র্যের আকর্ষণ বাড়ালেও এই সব প্রাণীরা দিনের বেলা সচরাচর গভীর জঙ্গল থেকে বাইরে বেরোয় না। তাই পর্যটকেরা তাদের কতটা দেখতে পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বনকর্তারা জানাচ্ছেন, বক্সার পাহাড়ি অঞ্চলেই কালো চিতা বাঘ ব্ল্যাক প্যান্থারের বাস। প্রবল ঠান্ডায় শিকারের সন্ধানে তারা নীচে নেমে আসে। গত বছর দিনের বেলা একবারই দেখা গিয়েছিল প্রাণীটিকে। এক টুরিস্ট গাইড অরণ্যের জয়ন্তিয়া এলাকায় পাহাড়ের গা বেয়ে এক জোড়া ব্ল্যাক প্যান্থারকে নেমে আসতে দেখেছিলেন। এক্কেবারে ভরদুপুরে। বনকর্তারা বলছেন, সেটি ছিল এক অতি বিরল ঘটনা। ট্র্যাপ ক্যামেরায় চিতাবাঘ প্রজাতির বেশ কয়েকটি প্রাণীর ছবি ধরা পড়লেও ছবি উঠেছে না রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। রাজ্যের এক বনকর্তা বলেন, ‘‘অসমের মানস অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ৩০-এ পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু বক্সায় ওদের দেখা মিলছে না।’’ এত সব ভাল খবরের মধ্যে এটাই একমাত্র চিন্তার বিষয় বন দফতরের। এক বনকর্তার মন্তব্য, ‘‘আমাদের জঙ্গলের নামের পাশে ব্যাঘ্র প্রকল্প কথাটা লেখা আছে। তাই বাঘ না পাওয়াটা অস্বস্তির।’ সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *