জুনাইদ আহম্মেদ
থালা-বাসন, পাতিল-খুন্তি সবই নিজেদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হতো। নিজেদের তৈরি চুলা, ফুঁকনি দিয়ে ফু, অতপর ঘাম ঝরিয়ে রান্না। বৃত্তাকারে বসে মজা করে খাওয়া। শৈশবের সেই চড়ুইভাতির কথা ব্যস্ত জীবন যেন ভুলেই দিয়েছিল। একটু ভবতেই দু’চোখ ভড়ে চলে আসে সেই অম্লান স্মৃতিগুলো। শৈশবের সেই রোমঞ্চকর স্মৃতি ফিরে পেতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় চড়ুইভাতির। বলছিলেন, সংগঠনটির সভাপতি জাহিদ সুলতান লিখন।
রবিবার সকাল থেকেই আয়োজন শুরু। প্রজাপতি পার্ক, মত্স হ্যাচারী, বিজ্ঞানাগার, লেকে ঘেরা নিরব প্রকৃতি। তবে মুহুর্তে হই-হুল্লোড়ে সরগম হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে, তবে জায়গাটি যেকোন পিকনিক স্পর্টকে হাড় মানায়, মন্তব্য মঈনুল রাকিবের। পুরো আয়োজনের দায়িত্ব ছিলো ৪২তম ব্যাচ। দায়িত্বের চাপে ব্যস্ত হয়ে উঠে আবু তাহের, শুভ, ইলিয়াস আর তামিমরা। কিন্তু চড়ুইভাতিকে থমকে দিয়েছিল শরত্-এর ছাগল তারানো বৃষ্টি। ঘনঘোর অন্ধকার আর মেঘে ভরা আকাশ একটু পরেই হয়ে উঠে রঙধনু রঙা। আর রাঙা আকাশ রাঙিয়ে তুলেছিল চড়ুইভাতির সমস্ত আয়োজনকে, বলছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম।
জাবি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা আনোয়ার পারভেজ স্যারের অংশগ্রহন পূর্ণ করে এ আয়োজনকে। প্রত্যশা, সিমি আর নুসরাতদের ছিল বাহাড়ি সাজ-সজ্জা। শাওনের ডিএসএলআর ক্যামেরার সুবাদে চলে ফ্রেমবন্দির প্রতিযোগীতা। চড়ুইভাতিকে সেলফিময় করে তুলে ইব্রাহিম বাবু আর আব্দুল্লাহ শুভ। এ যেন দক্ষিণ এশিয়ার সৃষ্ট সেলফি ফেসবুকে মন্তব্য আবু সায়েমের।
ছোট ভাইদের তুলে খাওয়াতে গিয়ে নিজের ভাগের খাবারই যেন শেষ করে ফেলে তানজিদ বুসনিয়া। খাওয়া শেষে শরতের ভ্যাপসা গরমে গ্রুপ ফটো তুলতে গিয়ে এক হুলোস্তর কান্ডের অবতারনা করে আমিনুল ইসহাক। বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির গ্রুপের তুমুল লড়াই। তানজিদ বুসনিয়ার মত লম্বা খেলোয়াড় সুবাদে জিতে যায় প্রেসিডেন্ট গ্রুপ।
উল্লাস-উচ্ছ্বাসে ভরা দিন শেষে পড়ন্ত বিকাল জানান দেয়, পেশাদারিত্বের কথা। সকলেই ছুটে যায় সংবাদ সংগ্রহে। ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে অন্যান্য দিনের মত একটি দিন চলে গেলেও এ দিনটি যেন থেকে গেল অনন্য। পিছনে পরে থাকলো প্রকৃতরি বুকে একটি সুন্দর দিন, একটি স্মরণীয় চড়ুইভাতি। সূত্র : ইত্তেফাক