Skip to content

ক্লিয়ারেন্স নেই-ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট থেকে ফিরে আসছে ফ্লাইট

Bimanনেপালের ত্রিভুবন এয়ারপোর্টের অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্ত বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর হওয়ায় সেখানে সমস্যায় পড়ছে বাংলাদেশের বিমানসহ অনেক দেশের এয়ারলাইন্স। বুধবার বিমানের একটি ফ্লাইট নেপালের আকাশসীমায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নামতে পারেনি। বাধ্য হয়ে সেটি ফিরে আসে ঢাকায়। একই অবস্থার শিকার হয় কুয়ালালামপুরের এয়ারলাইন্স মালিন্দো ও চীনের চায়না ইর্স্টান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট। এ দুটো ফ্লাইট দীর্ঘক্ষণ নেপালের আকাশসীমায় কাটিয়েও নামতে না পেরে ঢাকায় ফিরে।

বিমান সূত্র জানায়, বুধবার একটি এয়ারবাসযোগে ৮০ জন যাত্রী নিয়ে সকাল নয়টায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়ে যায় বিমানের ওই ফ্লাইট। ঘণ্টাখানেক পর ওই ফ্লাইট নেপালের আকাশসীমায় পৌঁছার পর ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে অবতরণের ক্লিয়ারেন্স পায়নি। দু’ঘণ্টা আকাশে কাটানোর পর জ্বালানি ফুরিয়ে আসায় সেই ফ্লাইট ঢাকায় ফিরে আসে। ওই ফ্লাইটটি সন্ধ্যা সাতটায় নেপালের উদ্দেশে ফের ঢাকা ত্যাগ করে।

এ দিকে বেলা বারোটার সময় কুয়ালালামপুর থেকে মালিন্দো এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট কাঠমান্ডু গিয়েও ক্লিয়ারেন্স না পেয়ে ঘণ্টাখানেক আকাশে চক্কর দিয়ে ঢাকায় ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটও একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে ঢাকায় এসে অবতরণ করে।

কবে নাগাদ বিমান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে জানতে চাইলে বিমানের একাধিক সূত্র জানায়, নেপালের পরিস্থিতি এখনও ভুতুড়ে। এখনও থেমে থেমে সেখানে ভূকম্পন হচ্ছে। ভয়াবহ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ত্রাণ সামগ্রীর উড়োজাহাজগুলো খুব বেশি যাতায়াত করছে। এমনিতেই ছোট আকৃতির ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে অবতরণ করার পর পার্কিং এরিয়ার অভাব দেখা দেয়। যাত্রী বা পণ্য নিয়ে নামার পরে বিমান যেখানে দাঁড়ায়, ওই বিমানবন্দরে সেই ‘পার্কিং বে’ মাত্র ন’টি। ভূমিকম্পজনিত বিপর্যয়ের পরে বিভিন্ন দেশ থেকে পরপর বিমান আসছে কাঠমান্ডুতে। অধিকাংশই আসছে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে। আর সেই সব বিমানেই আসছে উদ্ধারকারী দল।

কিন্তু পর্যাপ্ত পার্কিং বে’র অভাবে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের মাথায় পৌঁছেও নামতে পারছে না অনেক বিমান। চলে যাচ্ছে অন্যত্র। যারা নামছে, তাদের গড়ে দু’ঘণ্টা চক্করে কাটাতে হচ্ছে। কখন পার্কিং বে খালি হবে, থাকতে হচ্ছে তার অপেক্ষায়। এ কারণেই বুধবার বিমানসহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সেখানে পৌঁছার পরও নামতে পারেনি। এসব ফ্লাইটের পাইলটদের কাঠমান্ডু থেকে জানানো হয়, ‘অপেক্ষা করো। এখন এলে পার্কিং বে খালি পাবে না।’

মঙ্গলবার রাতে বিপর্যয় মোকাবেলায় ত্রাণসামগ্রী ও প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে ১১৪ জনের একটি দল অপর একটি দেশের এয়ারলাইন্সে সেখানে অপেক্ষায় ছিল। নামতে না পেরে তাকে অন্যত্র ছুটতে হয়।

বিমানের এক ক্যাপ্টেন জানান, আমরা আগে থেকে অনুমান করেছিলাম বলেই পর্যাপ্ত জ্বালানি নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু টানা দু’ঘণ্টা চক্কর দেয়ার পরেও কাঠমান্ডুতে নামার অনুমতি মেলেনি। আন্তর্জাতিক নিয়ম, বিমানবন্দরের পার্কিং বে খালি না থাকলে বিমান নামতে পারবে না। এ অবস্থায় জ্বালানি ফুরানোর আগেই বেলা বারোটায় ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।

সূত্র জানায়, বিমানের মতো ভারতের কয়েকটি ফ্লাইট নেপালে অবতরণ করতে না পেরে ফিরে যায়। ত্রিভুবন বিমানবন্দরে কয়েক শে’ ভারতীয় আটকে আছেন। ভারত থেকে কোন বিমান পৌঁছলেই তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন ফেরার জন্য। কিন্তু এক-একটি বিমানে গড়ে মাত্র ১২০ জন যাত্রী ফিরতে পারছেন।

এদিকে বিমানের পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বুধবার জানান, নেপালে আর কোন বাংলাদেশী আটকা নেই। ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে যারা অপেক্ষায় ছিল তাদের সবাইকে বিমানের ফ্লাইটে নিয়ে আসা হয়েছে। সূত্র : জনকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *