সামছুর রহমান
দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্কেটিং। বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিদিন স্কেটিংয়ের জন্য আসেন। ছবিটি গতকাল বিকেলে তোলা l সাইফুল ইসলামদলে ছয় বছর বয়সী বাচ্চা থেকে শুরু করে মাঝবয়সীরাও আছেন। বিকেল হতেই তাঁরা জড়ো হতে শুরু করলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভের পাদদেশে। সবার মাথায় হেলমেট, পায়ে চাকাযুক্ত বিশেষ জুতা। অন্ধকার না হওয়া পর্যন্ত মেতে থাকলেন স্কেটিং নামের এক মজার খেলায়।
চাকাযুক্ত বিশেষ জুতা পায়ে গতিময় ছুটে চলার একটি অনন্য শিল্প স্কেটিং। এখন অনেক তরুণই মজেছেন এই স্কেটিংয়ে। অনেক অভিভাবক সন্তানদের ছোট বয়স থেকেই শেখাচ্ছেন এই গতির খেলা। দেশে ক্রমেই বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা।

দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্কেটিং। বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিদিন স্কেটিংয়ের জন্য আসেন। ছবিটি গতকাল (০৭/০১/২০১৬) বিকেলে তোলা l সাইফুল ইসলাম
বাংলাদেশে রোলার স্কেটিং ফেডারেশন গঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আসিফুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে অনেক ছেলেমেয়ে স্কেটিং খেলায় আগ্রহী হচ্ছে। অল্প বয়স থেকেই অনেকে শুরু করছে। নির্মল বিনোদনের পাশাপাশি শারীরিক গঠনের জন্যও স্কেটিং উপকারী। অভিভাবকেরা বেশ উৎসাহ নিয়ে ছেলেমেয়েদের নিয়ে আসছেন।
আবদুল্লাহ এরফান এবার প্রথম শ্রেণিতে উঠেছে। ইস্কাটন থেকে বাবার সঙ্গে স্কেটিং করতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এসেছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাবা আবুল কালাম বললেন, ‘কার্টুনে স্কেটিং করতে দেখে ছেলে আগ্রহী হয়। ওর আগ্রহে ভর্তি করাই। দেড় মাসেই ও বেশ ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলেছে। ছেলেকে দেখে এখন মাঝেমধ্যে আমি নিজেও করি।’
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে স্কেটিং ক্লাব। এসব ক্লাবে স্কেটিং শিখতে পারেন যে কেউ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কয়েক মাস আগে বসানো হয়েছে স্কেটিংয়ের জাতীয় ট্র্যাক। এই ট্র্যাকে স্কেটিং করতে পারেন সবাই।
এ ছাড়া ঢাকায় স্কেটিং শেখানো হয় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ফ্রেন্ডস ক্লাব, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের রয়েল ক্লাব, ধানমন্ডি লেকের ভেতর ধানমন্ডি স্কেটিং ক্লাব, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সার্চ স্কেটিং ক্লাব, গুলশান ২ নম্বরের কানাডিয়ান স্কুল মাঠ ও গুলশান ইয়ুথ ক্লাব।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং দলের জাতীয় কোচ আশরাফুল আলম বলেন, সাড়ে তিন-চার বছর বয়স থেকেই স্কেটিং শুরু করা যেতে পারে। এটি একটি অন্য রকম ব্যাপার, স্কেটিং মানেই আকাশে উড়ে বেড়ানোর মতো বিষয়। এতে শরীরের জড়তা কাটিয়ে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার চর্চা হয়।
শরীরে যাতে আঘাত না লাগে, সে জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে স্কেটিং করা উচিত। স্কেটিং জুতা, হাতের কনুই ও পায়ের হাঁটুর জন্য বিশেষ সেফটি গার্ড, হেলমেট, হাতের গ্লাভস পরে স্কেটিং করার পরামর্শ দেন স্কেটিং কোচরা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল-বিকেল অনেক কিশোর-তরুণকে দেখা যায় স্কেটিং করতে। ধানমন্ডি লেকে স্কেটিং করতে আসা সোহাগ শিকদার চার বছর ধরে স্কেটিং করেন। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে খেলাটির প্রতি আগ্রহ ছিল। শেখার পরে এখন আমি অন্যদের শেখাচ্ছি।’ সৌজন্যে : প্রথম আলো