Skip to content

গুহায় আটকে পড়া ১৩ জনকে উদ্ধারের সম্ভাব্য উপায়গুলো কী?

থাইল্যান্ডে একটি গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচকে জীবিত পাবার পর এখন তাদের কিভাবে বাইরে বের করে আনা যাবে তার বিভিন্ন উপায় বিবেচনা করছেন উদ্ধারকারীরা।

এই ১৩ জন গুহার ভেতরে এমন এক জায়গায় আছে যে তাদের উদ্ধার করতে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে – বলছে সেদেশের সেনাবাহিনী।

তাদের বের করে আনার সম্ভাব্য উপায়গুলো কি?

গুহার ভেতরে একটা খাঁজের মধ্যে বসে আছে ১৩ জনের দলটি

১. ডুবুরি

“এটা সবচেয়ে দ্রুতগতিতে করা সম্ভব। কিন্তু এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক” – বিবিসিকে বলছিলেন আনমার মির্জা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের কেভ রেসকিউ কমিশনের সমন্বয়ক।

গুহায় আটকা পড়া কিশোররা কেউই প্রশিক্ষিত ডুবুরি নয়। তারা সাঁতারও জানে না।

গুহাটির মধ্যে এমন জায়গায় এই কিশোররা রয়েছে – যে পেশাদার ডুবুরিদের গুহার প্রবেশপথ থেকে সেখানে পৌঁছাতে কয়েক ঘন্টা লেগেছে। পথটা জায়গায় জায়গায় খুবই সরু। তা ছাড়া তাদের সহায়তা করতে সার্বক্ষণিকভাবে পাম্প করে বন্যার পানি সরাতে হয়েছে।

ডুবুরিদের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার

কেভ রেসকিউ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংগঠন আইইউসিআরআরও-র সমন্বয়ক এড সোরেনসন বলেছেন, “এটা খুবই বিপজ্জনক পন্থা এবং একেবারে শেষ উপায় ছাড়া তিনি এটা বিবেচনা করবেন না। সেখানে চোখে কিছু দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অনভ্যস্ত কেউ ভয় পেয়ে নিজে মারা যেতে পারে বা উদ্ধারকারীদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।”

২. ড্রিলিং

কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করেছে ড্রিলিং মেশিন দিয়ে পাহাড়ের গায়ে ছিদ্র করে গুহার ভেতরের বন্যার পানি বের করে দিতে। কিন্তু শক্ত পাথরের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

কিন্তু পাহাড় ফুটো করে আটকে পড়া কিশোরদের উদ্ধার করতে যাবারও অনেক ঝামেলা আছে।

প্রক্রিয়াটা শুরু করতে হলেও নতুন রাস্তা তৈরি করতে হবে – যাতে ভারী ড্রিলিংএর যন্ত্রপাতি সেখানে নিয়ে যাওয়া যায়।

তা ছাড়া তার আগে পাহাড়টার একটা জরিপ করতে হবে, কারণ যে গর্তটা করা হবে তা যেন আটকে পড়া লোকেরা যেখানে আছে সেখানে গিয়ে শেষ হয়। তা না হলে তাদের উদ্ধারের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে না।

“এটা শুনতে সহজ শোনালেও কাজটা খুবই কঠিন। প্রায় খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মতো।” – বলছিলেন মি. মির্জা।

চলছে ড্রিল মেশিন দিয়ে পাহাড়ের গায়ে গর্ত করার চেষ্টা

আটকেপড়াদের শারীরিক অবস্থা কেমন?

চিয়াং রাইয়ের গভর্নর নারোংসাক ওসোত্থানাকন বলেছেন, তারা গুহাটি থেকে পানি বের করার কাজ অব্যাহত রাখবেন, এবং গুহার ভেতরে ডাক্তার ও নার্স পাঠাবেন যাতে তারা ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারেন।

ডাক্তাররা যদি বলেন যে তাদের শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট ভালো আছে, এবং তাদের নড়াচড়া করানো যাবে, তাহলে আমরা তাদের বের করে নিয়ে আসবো।

মি. মির্জা বলছিলেন, নয় দিন ধরে খাবার ছাড়া আটকে থাকা এই লোকদের স্বাস্থ্য একটা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়, এবং তাদের উদ্ধারকাজের ওপরও এটা প্রভাব ফেলবে।

চিয়াং রাই প্রদেশের পাহাড়ি গুহাটির ভেতর এমনভাবে পানি ঢুকে পড়েছে যে তাদের সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার পথটি পুরোপুরি ডুবে গেছে। আর ১৩ জনের ফুটবল দলটি সেই গুহার মধ্যে একটি শুকনো কার্নিশের মতো জায়গায় বসে আছে।

ঘটনাস্থলে তৈরি করা হয়েছে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল

নয় দিন নিখোঁজ থাকার পর দলটিকে সোমবার খুঁজে পায় ব্রিটিশ উদ্ধারকারী ডুবুরিদের একটি দল।

উদ্ধারকর্মীরা ও সেনাবাহিনী বলছে, দলটি এমন জায়গায় আটকা পড়ে আছে যে গুহার বাইরে আসতে হলে তাদের ডুবুরির মতো পানির নিচ দিয়ে সাঁতরানো শিখতে হবে, অথবা কয়েক মাস গুহার মধ্যেই অপেক্ষা করতে হবে – যতদিন পানি নেমে না যায়।

সেনাবাহিনী বলছে, তাদেরকে হয়তো আগামী চার মাস ধরে বাইরে থেকে খাবার পাঠাতে হবে। সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *