Skip to content

গয়নার পালা বদল

নারীর অলঙ্কার গয়না। বহুকাল থেকেই চলছে এই গয়নার প্রচলন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গয়নায় এসেছে নানা পরিবর্তন ও সংযোজন। নিজেকে নতুন রূপে সাজাতে গয়নার প্রতি রয়েছে নারীদের অদম্য আকর্ষণ। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজাইনাররা নিয়ে এসেছেন নিত্যনতুন গয়নার বাহার। উপকরণ, নকশায় এনেছেন বৈচিত্র্য। ফ্যাশনেবল নারীরাও লুফে নিচ্ছেন হরেক রকমের সব গয়না। পোশাকের ধরন, বয়স, ব্যক্তিত্ব ও রুচির ওপর নির্ভর করে বেছে নিচ্ছেন মানানসই গয়না। বাজার ঘুরে এসব গয়নার রকমসকম জানাচ্ছেন নাসিমা রুমি

Emitation

কত রকম গয়না!

আগে নারীরা গয়না বলতে শুধু সোনার তৈরি জিনিসই মনে করতেন। কিন্তু এখন সময় বদলে গেছে। বদলে গেছে এর নকশা। সোনা, রুপা, কড়ি, কাপড়, পিতল, মেটাল আর অক্সিডাইসের গয়না নকশায় এসেছে নতুনত্ব। ম্যাট কালার, অঙ্ িকালার, কপার কালারের চলটা একটু বেশি। স্টোন সেটিংয়ের গয়নায়ও এসেছে নতুন আর বাহারি ডিজাইন। রুপার ওপর মিনা করা, মুক্তা সেটিং, ক্রিস্টাল আর জাংক জুয়েলারি এসব বেশ চলছে। যে কোনো পার্টিতে অনায়াসে নিজেকে সাজাতে নারীরা এসব গয়না তৈরি করে নিজের সংগ্রহে রেখে দেন। এ ছাড়া সবসময় ব্যবহারের জন্য মেয়েরা বেশি ঝুঁকছেন কাঠ, পুঁতি ও হাড়ের তৈরি শৌখিন গয়নার প্রতি। বিশেষ করে কাঠের গয়না মেয়েদের বেশি আকর্ষণ করে। কারণ এই গয়নাটি এখন আর সাদামাটা নেই, নানা রঙে রঙিন। কাঠের সঙ্গে কোনোটাতে আবার পাটের আঁশ, কড়ি অথবা রুদ্রাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। সুতা দিয়ে চমৎকার বুননে তৈরি গয়নাও আছে। তাতে ব্যবহার করা হয়েছে পুঁতি, ধাতু বা কাঠ। টাইডাই করা নানা রঙের কাপড় প্যাঁচানো চুড়ি অথবা এক পাশে কাপড় ও এক পাশে সুতা লাগানো চুড়িগুলো বেশ চলছে। জমকালো পোশাকের সঙ্গে পরার জন্য পাবেন ধাতুর তৈরি বড় কানের দুল। পুঁতি, বিডসের গয়নায়ও আছে বৈচিত্র্য। কয়েক লহরির মালা আগেই ছিল, এবার যোগ হয়েছে শঙ্খ, বরফি কিংবা গোল নকশার কাজ। কিছু কিছু লহরি মালায় আবার কাপড় বা ক্রিস্টালের ফুল লাগানো। কানপাশা, ঝুমকা, দুল, মাকড়ি, লম্ব্বা মালা, চুড়ি, ব্রেসলেট, বালা, পায়েল, নূপুর, হাত ও পায়ের আংটি, বাজু, চুলের কাঁটাসহ আরও নানা ধরনের পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ফ্যাশন হাউসে রয়েছে ইয়োকের মতন গয়না, যা চাইলে কাপড়ে লাগিয়ে নেওয়া যাবে অথবা গয়না হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। আছে মাটির তৈরি লকেটের সঙ্গে কাপড়ের লম্বা ঝুলের গয়না, যা বেশ চমৎকার ও আধুনিক লাগে। ইদানীংকালে ডায়মন্ডের ব্যবহারও বেশ বেড়েছে। সোনার দামের আধিক্য এর বড় কারণ। মেয়েরা ডায়মন্ডের ছোট্ট নাকফুল, আংটি, লকেট, কানের দুল ইত্যাদি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করছে। তবে গয়নায় যত পরিবর্তন আসুক না কেন ফ্যাশন এর নিয়মটি কিন্তু পরিবর্তন হয়নি। সেটি হচ্ছে কানে ভারী গয়না পরলে গলায় হালকা গয়না। তবে গলায় ভারী গয়না পরলে কানে হালকা গয়না পরাই ভালো। এ ছাড়া পরনের পোশাকটি হালকা হলে গয়নাটা একটু ভারী পরা।

গয়নার যত্ন

শুধু গয়না সংগ্রহেই কি এর দায়িত্ব শেষ। শখের গয়নাটি রাখতে হবে সযত্নে। এর জন্য একটি গয়নার বাক্স কিনুন। স্টোনের গয়নাগুলো টিসু বা নরম কাপড়ে মুড়ে সযত্নে রাখুন। প্রতিটি গয়না আলাদাভাবে মুড়ে রাখবেন। হীরার গয়নাটি কিছুদিন পরপর ব্রাশ এবং ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করুন। রুপার গয়নার রং নষ্ট হয়ে গেলে পলিশ করিয়ে নিন। ঘরদোর পরিষ্কার করার আগে গয়না খুলে রাখুন। গয়না পরার আগে লোশন ও সুগন্ধি মেখে নেবেন। নিয়মিত ব্যবহারে গয়না কালো যেন না হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখুন।

কোথায় পাবেন

অঞ্জন’স, সাদাকালো, কে-জেড, মাদুলী, আড়ং, কে-ক্রাফট, বিবিয়ানা, রঙ, জেমস কালেকশন, অ্যারাবিয়ান, দেশাল, পিরান, বসুন্ধরা সিটি শপিংমল, উত্তরার মাস্কট প্লাজা, নর্থ টাওয়ারে পাবেন এসব গয়না। একটু কমে কিনতে যেতে পারেন মৌচাক, গাউছিয়া, চাঁদনীচক ও নিউমার্কেটে। এ ছাড়া অনলাইনেও এখন পাওয়া যাচ্ছে গয়নার বড় সংগ্রহ। মুন জুয়েলারি, ওপাল ফ্যাশন হাউস, শৈলী, দ্বৈত ইত্যাদি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পেতে পারেন গয়না।

দরদাম

স্টোনের কানের দুলের দাম পড়বে ২০ থেকে ২০০০ টাকা, আবার পুরো সেট কিনতে পারবেন ৫০০ থেকে ৯০০০ টাকার মধ্যে। ২৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে নানা ধরনের ঝুমকা পাওয়া যাবে। কাঠের কানের দুল ৩০০-৫০০ টাকা, কাঠের মালা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। চুড়ি ১০০-৫০০ টাকা। পিতলের কানের দুল ১০০ টাকা, পুরো সেট ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা, অক্সিডাইসের গয়নার সেট পাবেন ২০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া সোনা, রুপা ও হীরার গয়নার দাম নির্ভর করবে পরিমাণ ও মানের ওপর। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *