Skip to content

ঘুরে আসুন রাতারগুল

আলমগীর কবির
দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলার বন ‘রাতারগুল’। সিলেটে অবস্থিত এই বন বর্ষা ও শীত মওসুমে আলাদা সৌন্দর্য ধারণ করে।

এই বর্ষায় রাতেরগুলের সৌন্দর্য যেকোনো পর্যটকের মন মুগ্ধ করেই ছাড়বে।

Ratargul2

উত্তরে গোয়াইন নদী, দেক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে ‘জলার বন’ রাতারগুল। সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে এই জলার বনের অবস্থান। সিলেটনগরী থেকে দেশের একমাত্র স্বীকৃত এ সোয়াম্প ফরেস্টের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। অনিন্দ্য সুন্দর বিশাল এ বনের গাছ-গাছালির বেশির ভাগ অংশই বছরে চার থেকে সাত মাস থাকে পানির নিচে।

বাংলাদেশের সব বন থেকে রাতারগুল একেবারেই আলাদা। ঘন গাছের সারি। কিন্তু গাছগুলোর নিচের অনেকটাই ডুবে আছে পানিতে। গাছের মধ্যে করচই বেশি। হিজলে ফল ধরে আছে শয়ে শয়ে। বটও চোখে পড়বে মাঝেমধ্যে, মুর্তা গাছ কম। তবে রাতারগুলের বেশ বড় একটা অংশে বাণিজ্যিকভাবে মুর্তা লাগিয়েছে বন বিভাগ। মুর্তা দিয়ে শীতল পাটি হয়। বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। কোনো গাছের হাঁটু পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে। একটু ছোট যেগুলো, সেগুলো আবার শরীরের অর্ধেকই ডুবিয়ে আছে পানিতে। কোথাও চোখে পড়বে মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরা। ঘন হয়ে জন্মানো গাছপালার কারণে কেমন অন্ধকার লাগবে পুরো বনটা। মাঝেমধ্যেই গাছের ডালপালা আটকে দেবে পথ। হাত দিয়ে ওইগুলো সরিয়ে তৈরি করতে হবে পথ। চলতে হবে খুব সাবধানে। কারণ রাতারগুল হচ্ছে সাপের আখড়া। বর্ষায় পানি বেড়ে যাওয়ায় সাপেরা ঠাঁই নেয় গাছের ওপর।

Ratargul

সাপের মধ্যে রয়েছে অজগর, গুঁইসাপ, গোখরা, জলধুঙাসহ বিষাক্ত অনেক প্রজাতি। বর্ষায় বনের ভেতর পানি ঢুকলে এসব সাপ ওঠে পড়ে গাছের ওপর। বনের ভেতর বেড়ায় মেছোবাঘ, কাঠবিড়ালি, বানর, বনবিড়াল, বেজি, শিয়ালসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। টেংরা, খলিশা, রিঠা, পাবদা, মায়া, আইড়, কালবাউস, রুইসহ আরো অনেক জাতের মাছ পাবেন এখানে। শুকনো মওসুমে পানি কম থাকে বলে অনেক সময় ছোট ছোট মাছগুলো লাফ দিয়ে ডিঙ্গিতে ওঠে যায়।

হাওরের স্বচ্ছ পানির নিচে বনগুলো দৃশ্যমান থাকায় বর্ষাকালে অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটে এখানে। আবার শীত মওসুমে ভিন্নরূপ ধারণ করে এ বন। পানি কমার সাথে সাথে জেগে ওঠে মুর্তা ও জালি বেতের বাগান। সে সৌন্দর্য আবার অন্য রকম। বন এভাবে পানিতে ডুবে থাকে বছরে চার থেকে সাত মাস। বর্ষা কাটলেই দেখা যাবে অন্য চেহারা। তখন বনের ভেতরের ছোট নালাগুলো পরিণত হবে পায়ে চলা পথে। সেই পথ দিয়ে হেঁটে অনায়াসে ঘুরে বেড়ানো যায়।

All-Tour

রাতারগুল যাওয়া যায় বেশ কয়েকটি পথে। তবে যেভাবেই যান, যেতে হবে সিলেট থেকেই। সিলেট-জাফলংয়ের গাড়িতে উঠে নেমে যেতে হবে সারিঘাট। এখান থেকে টেম্পোতে করে গোয়াইনঘাট বাজার। বাজারের পাশেই নৌঘাট। এখান থেকে রাতারগুল যাওয়া-আসার জন্য নৌকা রিজার্ভ করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এই নৌকায় করে কিন্তু রাতারগুল বনের ভেতরে ঢোকা যাবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙি নৌকায় চেপে। সূত্র : নয়া দিগন্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *