রেদোয়ান হাসান
সাগরসৈকতের কথা চিন্তা করলে প্রথমেই যা মনে হয় তা হলো, ধূসর বালিঢাকা এক জায়গা; যেখানে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। কিন্তু যদি কোনো সৈকতে গিয়ে দেখেন, চারদিকে শুধুই লাল লাল দুনিয়া, তখন? না, গাঁজাখুরি কোনো গল্প ফেঁদে বসিনি। চীনের পানজিয়াং সৈকতে এলে এমন অভিজ্ঞতাই হবে আপনার। আর এর জন্য দায়ী সৈকতের বালু নয়। পানজিয়াং সৈকতটি বালুতে ঢাকা নয়; বরং এক প্রকার সামুদ্রিক শৈবালের রাজত্ব সৈকতজুড়ে। গ্রীষ্মকালে যদিও সবুজ থাকে, শরৎকালে উজ্জ্বল লাল বর্ণ ধারণ করে এসব শৈবাল।
লাল সৈকতটি নলখাগড়ায় ভরা বড় এক জলাভূমিতে অবস্থিত। এখানে ২৬০ রকমের পাখি আর ৩৯৯ রকমের বন্য পশু ও গাছপালা মিলিয়ে তৈরি হয়েছে খুব জটিল এক ইকোসিস্টেম। এই এলাকায় পাওয়া যায় বিলুপ্তপ্রায় মুকুটধারী সারস পাখি আর কালো ঠোঁটের শঙ্খচিল। এখানে সারস পাখি এত বেশি দেখা যায় যে পানজিয়াংকে অনেক সময় সারসের ঘর বলেও ডাকা হয়। ১৯৮৮ সালে এলাকাটির গাছপালা ও পশুপাখি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সৈকতটি কেন লাল তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে আগেই। এখন বরং এই সামুদ্রিক গুল্মের ব্যাপারে দু-চার কথা বলা যাক। সুয়েডা নামের এই শৈবাল লিয়াওয়া বদ্বীপজুড়েই পাওয়া যায়। এপ্রিল বা মে মাসের দিকে জন্মানো এসব শৈবাল শরৎকালে প্রথমে থাকে কমলা, পরে গোলাপি এবং সব শেষে হয়ে যায় টকটকে লাল ।
যদি সৈকতের এই সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে অবশ্যই মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে জায়গাটিতে যেতে হবে। পর্যটকদের জন্য দুঃখের সংবাদ হলো, সৈকতের বেশির ভাগ অংশেই তাদের যাওয়ার অনুমতি নেই, ছোট একটু অংশ কেবল উন্মুক্ত থাকে দেখার জন্য। আর বিকেল ৫টার পর সৈকতে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষেধ, তাই যেতে হয় এর আগেই। সূত্র : কালের কণ্ঠ