বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর একটি সাজেক। জায়গাটির অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায়। নজরকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সেখানকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা সাজেকের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।
‘রাঙ্গামাটির ছাদ’
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। সাজেকের পাহাড়চূড়া থেকে রাঙ্গামাটির চারপাশের বড় একটা অংশ দেখা যায় বলে একে ‘রাঙ্গামাটির ছাদ’ বলা হয়।
আধুনিক রিসোর্ট
মূল সাজেক ভ্যালিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গড়ে তোলা পর্যটন কেন্দ্র। ‘রুনময়’ নামে আধুনিক একটি রিসোর্ট আছে এখানে।
সাজেক রিসোর্ট
রুইলুই পাড়ায় ‘সাজেক রিসোর্ট’ নামের আধুনিক এ রিসোর্টটিও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত। এছাড়া রুইলুই পাড়ায় বেশ কিছু সাধারণ মানের রিসোর্ট আছে। পর্যটকদের সিংহভাগই থাকেন রুইলুই পাড়ায়।
ত্রিপুরা সম্প্রদায়
সাজেকের রুইলুই পাড়ায় এক ত্রিপুরা মা ও শিশু। রুইলুই পাড়ায় বসবারত নৃ-গোষ্ঠীদের অধিকাংশই ত্রিপুরা।
‘ঝাড়ভোজ’
সাজেক ভ্যালির পাশে ‘ঝাড়ভোজ’ বনভোজন কেন্দ্র। জনপ্রতি ২০ টাকা টিকেটে জায়গাটিতে প্রবেশ করতে হয়। এখান থেকে চারপাশের পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
যাতায়াত
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও যাতায়াত সুবিধা পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে। সেখান থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। যেতে হয় আঁকাবাঁকা সর্পিল পাহাড়ি পথ পেরিয়ে।
‘চাঁদের গাড়ি’
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার প্রধান বাহন ‘চাঁদের গাড়ি’। পুরনো জিপ গাড়ির স্থানীয় নাম এটি। এসব চাঁদের গাড়ীর বেশিরভাগই আশির দশক কিংবা তারও আগের।
‘গঙ্গারাম মুখ’
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতে বাঘাইহাট বাজারের পরই দেখা মিলবে পাহাড়ী দুই নদীর মিলনস্থল ‘গঙ্গারাম মুখ’।
কাচালং নদী
অপূর্ব পাহাড়ি নদী কাচালং। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার পথে অপূর্ব এ পাহাড়ি নদীটিও দেখা যাবে।
মেঘের সঙ্গে মিতালি
পাহাড়ের চূড়ায় বলে সাজেকের সঙ্গে মেঘের মিতালিও দেখা যায়। তবে মেঘে ঢাকা সাজেক দেখার আসল সময় আগস্ট-অক্টোবর মাস।
কংলাক পাহাড়
সাজেকের কংলাক পাহাড়। সাজেক ভ্রমণে অবশ্য দ্রষ্টব্য। রুইলুই পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের এ কংলাক পাহাড় সাজেকের সর্বোচ্চ জায়গা।
কংলাক পাড়া
কংলাক পাহাড়ের উপরে কংলাক পাড়া। পাহাড়চূড়ার ছোট্ট এ গ্রামটিতে ত্রিপুরা ও লুসাই নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস।
লুসাই নারী
কংলাক পাহাড়ে পানি নিয়ে ফিরছেন এক লুসাই নারী। কংলাক পাহাড়ের নীচে কংলাক ঝরনাই এখানকার মানুষের পানির একমাত্র উৎস। এই কংলাক ঝরণার নামেই পাহাড়টিরও নামকরণ।
মা ও শিশু
কংলাক পাড়ার একটি বাড়িতে ত্রিপুরা মা ও শিশু।
‘জলবুক কটেজ’
সাজেকের কংলাক পাহাড়ের গোড়ায় প্রকৃতির মাঝে ‘জলবুক কটেজ’। সাজেকের নিসর্গ উপভোগ করতে হলে এই ইকো কটেজটির কোনো জুড়ি নেই।
‘পাইলিংপাড়া’
কংলাক পাহাড়ের নীচে আরেকটি পাহাড়ের চূড়ায় ছোট্ট একটি গ্রাম ‘পাইলিংপাড়া’। ত্রিপুরা নৃ-গোষ্ঠীর ১৪টি পরিবারের বসবাস এই গ্রামে।
কাপড় বুনন
পাইলিং পাড়ায় কাপড় বুননে ব্যস্ত দুই ত্রিপুরা নারী। ত্রিপুরা নারীরা কাপড় বুননে বেশ দক্ষ।
‘হাই স্কুল পাড়া’
কংলাক পাড়ার নিচে আরো একটি পাহাড়ি গ্রাম ‘হাইস্কুল পাড়া’। ব্রিটিশ আমলে সেখানে একটি হাই স্কুল থাকলেও এখন আর সেটি নেই। তবে গ্রামের নামের সঙ্গে রয়ে গেছে সেই স্কুল। কংলাক পাড়া থেকে এ গ্রামটিতে পায়ে হেঁটে যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা।
জুম চাষ
হাই স্কুল পাড়ায় ২৯টি ত্রিপুরা পরিবারের বসবাস। তাদের প্রধান পেশা জুম চাষ।
মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক
সাজেকের হাইস্কুল পাড়ায় মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখছেন দুই ত্রিপুরা নারী। পাহাড়ি এসব এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক তাদের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এনেছে।
পাহাড়ি ছড়া
সাজেকের হাই স্কুল পাড়ার মানুষের পানির চাহিদা মেটায় ছোট্ট এই পাহাড়ি ছড়া। বর্ষা মৌসুমে এ ছড়ায় পর্যাপ্ত পানি থাকলেও শীত মৌসুমে তা একেবারেই তলানিতে ঠেকে। সৌজন্যে: ডয়চে ভেলে, প্রতিবেদন: মুস্তাফিজ মামুন (এপিবি)।