Skip to content

জাদুঘরের দ্বীপ

Meusium

মিউজিয়াম আইল্যান্ড বা জাদুঘরের দ্বীপ। বার্লিন শহরের মাঝখানে স্প্রে নদীর বুকে অবস্থিত এই দ্বীপে পাঁচটি জাদুঘর রয়েছে। ১৯৯৯ সাল থেকে এটা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের একটা অংশ। রাজধানী শহরের ঠিক মাঝখানে অথচ মহানগরীর কর্মব্যস্ততা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত এই জাদুঘর দ্বীপ। সেখানকার সবচেয়ে পুরনো জাদুঘরটির নাম ‘আল্টে ম্যুজেয়ুম’ বা পুরনো জাদুঘর। প্রখ্যাত স্থপতি কার্ল ফ্রিডরিশ শিংকেল এর নকশা তৈরি করেছেন। ১৮২৩ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৮৩০ সালে। জার্মানির প্রাশিয়া সাম্রাজ্যের শিল্পকলার বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে পাওয়া যাবে সেখানে। মিউজিয়াম আইল্যান্ডটি যে স্প্রে নদীর মাঝখানের একটি দ্বীপ সেটা বোঝা যায় ‘বোডে মিউজিয়াম’ এর কারণে। কেননা এই জাদুঘরটা নদী থেকে প্রাসাদের মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ১৯০৪ সালে জাদুঘরটি স্থাপিত হয়। বাইজেন্টাইন আমলের বিভিন্ন নিদর্শন, মুদ্রা, ভাস্কর্য ইত্যাদি দেখতে চাইলে যেতে হবে বোডে মিউজিয়ামে।

Meusium2

জাদুঘর দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ ‘পের্গামন আল্টার’

জাদুঘর দ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো ‘পের্গামন মিউজিয়াম’। সবগুলোর মধ্যে এটা সবচেয়ে নতুনও। ১৯৩০ সালে এটি স্থাপিত হয়। গত বছর সেখানে গিয়েছিল প্রায় ১৩ লাখ দর্শক। এটা শুধু এই মিউজিয়াম আইল্যান্ডের মধ্যেই নয়, পুরো জার্মানির মধ্যেও দর্শকদের কাছে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পের্গামন মিউজিয়াম। এই জাদুঘরের নিদর্শনগুলোর মধ্যে দর্শকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ‘পের্গামন আল্টার’। এটা একটি বেদি, যেটা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দিতে প্রাচীন গ্রিক শহর ‘পের্গামন’ এর শাসক রাজা দ্বিতীয় ইউমেনেসের সময় নির্মিত হয়েছিল। পের্গামন শহরের বাগানে এটা স্থাপন করা হয়েছিল। সেই আসল কর্মটির পুরোটাই তুলে আনা হয়েছে বার্লিনের এই জাদুঘরে। পের্গামন আল্টারের পর পের্গামন মিউজিয়ামের আরেকটি দর্শনীয় নিদর্শন হলো ‘দ্য মার্কেট গেট অফ মিলেটুস’। এটি ১২০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত একটি তোরণ। ১৭ মিটার উঁচু আর ২৯ মিটার প্রশস্ত এই তোরণটি রয়েছে পের্গামন মিউজিয়ামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পের্গামন মিউজিয়ামের ছাদ ভেঙে যাওয়ায় এই ঐতিহাসিক তোরণটির কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। ব্যবিলন শহরের ‘ইশতার তোরণ’ও দেখতে পাওয়া যাবে পের্গামন মিউজিয়ামে। তবে সংস্কার কাজের জন্য আগামী বছর মিউজিয়ামটি বন্ধ থাকবে।

Meusium3

মিশরীয় রানি নেফারতিতির আবক্ষ মূর্তি রয়েছে ‘নয়ে ম্যুজিয়ুম’য়ে

পের্গামনের পরেই পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ‘নয়ে ম্যুজিয়ুম’ বা নতুন জাদুঘর। ১৮৫৯ সালে স্থাপিত এই জাদুঘরটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এরপর সেটার সংস্কার কাজ শুরু হয়ে অবশেষে ২০০৯ সালে এটি আবার চালু হয়। নতুন জাদুঘরের বিভিন্ন সুপ্রাচীন নিদর্শনের মধ্যে সবচেয়ে নামকরা অবশ্যই মিশরীয় রানি নেফারতিতির আবক্ষ মূর্তি।

এই জাদুঘর দ্বীপের পঞ্চম জাদুঘরটি হলো ‘দি আল্টে ন্যাৎসিওনাল গালারি’। সেখানে উনিশ শতকের বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে পাওয়া যাবে। এই মিউজিয়াম আইল্যান্ডের দেখভাল করে ‘প্রাশিয়ান কালচারাল হেরিটেজ ফাউন্ডেশ’। ওই সাম্রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য গঠিত হয় সংস্থাটি।

Meusium4

ব্যবিলন শহরের ‘ইশতার তোরণ’ বার্লিনের জাদুঘরে

এর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হেরমান পারৎসিংগার বলছেন, ‘মিউজিয়াম আইল্যান্ডের বৈশিষ্ট্য হলো তার ভবনগুলো। এছাড়া কীভাবে মিউজিয়াম সাজাতে হয়, শিল্পকলার বিভিন্ন নিদর্শন দেখাতে হয় সেটা জানতে হলে আসতে হবে এখানে। আর জাদুঘরের সংগ্রহশালাও বেশ সমৃদ্ধ। এখানে রয়েছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের শিল্পকলা এবং সংস্কৃতির ইতিহাস। একেবারে প্রস্তরযুগ থেকে শুরু করে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এর বিস্তৃতি।’ সূত্র : ডয়চে ভেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *