প্রেমিক জুটি থেকে দম্পতি—এখনো ঘোরের মধ্যেই আছেন দুজন। শখ-নিলয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন আহমেদ জামান শিমুল। ছবি তুলেছেন শেখ হাসান
বিয়ে হলো বৃহস্পতিবার রাতে। এরপর টানা তিন দিন ঘরেই ছিলেন। ফেসবুকিং আর সিনেমা দেখেই কাটিয়ে দিলেন। বের হলেন রবিবার সন্ধ্যায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানাতে ফুল হাতে সরাসরি চলে এলেন কালের কণ্ঠ কার্যালয়ে।
নবদম্পতিকে দেখে এগিয়ে গেলেন আমন্ত্রিত অন্য অতিথিরাও। ফটোসেশন, সেলফি, গল্পগুজব—সবই হলো। দুজনের হাতই মেহেদি রাঙানো। শখের হাতে বাহারি ডিজাইন, নিলয়ের হাতে লেখা ‘শখ’। তাহলে বিয়েটা করেই ফেললেন? উত্তর দিলেন শখ, “বিয়ের দিন অনেককেই বলেছিলাম বিয়ের কথা। কেউই বিশ্বাস করেনি। আমি যে পার্লার থেকে নিয়মিত সাজগোজ করি, সেখানে মেহেদি লাগাতে গিয়েছিলাম। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপু এটা নাটক, বিজ্ঞাপন, না সিনেমার শুটিংয়ের জন্য?’ বললাম, আমার বিয়ের। কেউই বিশ্বাস করল না। পরদিন পত্রিকায় বিয়ের খবর দেখে রাগ করে ওরা, ওদের কেন দাওয়াত দিইনি। হা হা হা।” ‘নতুন জামাই’ নিলয়ও বললেন তেমনই একটি ঘটনার কথা, “আংটি কেনার জন্য গিয়েছিলাম বসুন্ধরা সিটিতে। সেখানে এক সহকারী পরিচালকের সঙ্গে দেখা। ‘কী করেন ভাই?’ বললাম, বিয়ের শপিং করি। আসেন আমাকে সাহায্য করেন। বিশ্বাসই করলেন না তিনি। আরেক ছোট ভাইকে আসতে বলেছিলাম ছবি তুলে দেওয়ার জন্য। অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সেও এলো না। পরে সে বলে, ‘ভাই আমি তো সুস্থ ছিলাম, বিয়ের কথাটা আগে বলবেন না’!”
ঘটনাগুলো বলে দুজনই হেসে লুটোপুটি। নাটক-সিনেমায় অনেকবারই বউ সেজেছেন শখ। বাস্তবে বউ সাজার অনুভূতি নিশ্চয়ই ভিন্ন?
‘অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। বিয়ের সময় সব মেয়ের যেমন অনুভূতি হয়, আমারও তেমনটাই হয়েছে।’
নিলয় বলেন, ‘সত্যিকারের বউ সেজে আসার পর ওকে দেখে আমি দৃষ্টি ফেরাতে পারিনি।’
শাশুড়ির সঙ্গে নতুন বউয়ের মিল কেমন?
‘আম্মু আমাকে অনেক অনেক আদর করেন। বিয়ের আগে যা করতেন, এখন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি করছেন।’
শখের রান্নার প্রশংসা নিলয়ের কণ্ঠে, ‘বিয়ের পরদিনই আম্মুকে শাহি গরুর মাংস ও চিড়িং টমিয়াম রান্না করে খাইয়েছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু রান্না করছে।’
শাশুড়িকে না হয় খুশি করা হলো, কিন্তু বন্ধুবান্ধবকে সন্তুষ্ট করতে হবে না! রিসেপশন পার্টি হবে তো?
নিলয় মজা করে বলেন, ‘রিসেপশন পার্টির জন্য বড় স্পন্সর কম্পানির সঙ্গে চুক্তি করব, যারা পুরো অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।’ ‘নিলয়ের বড় ভাইবোন অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। আমার ছোট খালামণিও নিউজিল্যান্ডে। দুই পরিবারের মুরব্বিরা একসঙ্গে হলেই অনুষ্ঠানটা করব’—বললেন শখ।
একান্নবর্তী পরিবার প্রথা ভেঙে গড়ে উঠছে একক পরিবার। কী ইচ্ছা আপনাদের?
শখ সরাসরিই বললেন, ‘একান্নবর্তী পরিবার। কারণ এখানে আন্তরিকতা, আত্মার টান ও বোঝাপড়াটা অনেক বেশি। একটি পরিবারে মা-বাবার সঙ্গে দাদা-দাদি থাকলে তা বটগাছের ছায়ার মতো হয়। আমি নিজে এ ধরনের পরিবারের সন্তান।’
দুজনকে ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’ ছবিতে একসঙ্গে দেখা গেছে। নতুন সিনেমায় পাব একসঙ্গে? ‘না, একসঙ্গে পাবেন না’—বললেন দুজনই। তবে নাটকে দেখা যাবে। সোমবার থেকেই একটি টেলিফিল্মের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন দুজন। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ