Skip to content

ডাক দিয়ে যায় গজনী

:: আবদুল মান্নান ::
পাহাড় কিংবা সবুজ টানে না, এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। পাহাড়ের সঙ্গ পেতে মানুষ ছুটে যায় দূরদূরান্তে, দেশে-বিদেশে। দেশের পাহাড়ঘেরা জেলাগুলো ছাড়াও পাহাড়ের দেখা মিলবে দেশের উত্তর-মধ্যাঞ্চলের শেরপুর জেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায়। গারো পাহাড় নামে এর পরিচয়। সৌন্দর্যে ভরা এই পাহাড় হাতছানি দেয় পর্যটকদের।

গারো পাহাড়ের তেমনি একটি পর্যটনকেন্দ্র শেরপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ কেন্দ্র। এলাকাটি ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা।

১৯৯৫ সালে শেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শেরপুর সদর থেকে ২৮ এবং ঝিনাইগাতি উপজেলা থেকে আট কিলোমিটার উত্তরে কাংশা ইউনিয়নে গজনী পাহাড়ের প্রায় ৯০ একর পাহাড়ি টিলায় ‘গজনী অবকাশ কেন্দ্র’ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। সমতল ভূমি থেকে অবকাশ ভবনে ওঠা-নামা করার জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় আঁকাবাঁকা ‘পদ্ম সিঁড়ি’। পদ্ম সিঁড়ির পাশেই গজারি বনে কাব্যপ্রেমীদের জন্য কবিতাঙ্গনের গাছে গাছে ঝোলানো আছে প্রকৃতিনির্ভর রচিত কবিতা। এখানে রয়েছে হ্রদের পানির ওপর সুদৃশ্য দ্বিতল ‘জিহান অবসরকেন্দ্র’। গারো পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য আছে আকাশচুম্বী ‘সাইট ভিউ টাওয়ার’। কৃত্রিম হ্রদে নৌবিহারের জন্য আনা হয়েছে হয়েছে ‘প্যাডেল বোট’। দেশি ‘ময়ূরপঙ্খি নাও’ও আছে। আরও উপভোগ করবেন দোদুল্যমান ব্রিজ ও সুড়ঙ্গপথ। শিশুদের বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়েছে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, বন্য হাতি, ডাইনোসর, মৎস্যকন্যা, জিরাফ, বাঘ, হরিণ, পাখিসহ নানা ভাস্কর্য রয়েছে। এ ছাড়া পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে কৃত্রিম জলপ্রপাতও তৈরি হয়েছে এখানে। এখানে রয়েছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা।

গজনী অবকাশ কেন্দ্রে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এই ওয়াচ টাওয়ারে গিয়ে ভারতের মেঘালয় সীমন্ত দেখা যাবে। তা ছাড়া সবুজ গাছ পালা ও উঁচু-নিচু টিলাও দেখাও যাবে। আর ভাগ্য ভালো থাকলে ভারতের সীমান্তে বন্য হাতিরও পদচারণ দেখা মিলতে পারে। এই ওয়াচ টাওয়ারের প্রবেশমূল্য ১০ টাকা।

গজনীতে যাওয়ার পথে সড়কের দুই পাশে মিলবে ছোট ছোট টিলায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। তা ছাড়াও পাখির মধুর ডাক তো শোনাই যাবে।

শেরপুর থেকে গজনী অবকাশের দূরত্ব ৩৬ কিলোমিটার। রাজধানী থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াত করাই ভালো। সড়কপথে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বাসযোগে শেরপুরে যেতে হবে। শেরপুর থেকে ঝিনাইগাতী উপজেলা পর্যন্ত বাস চলাচল করে। ঝিনাইগাতী থেকে আট কিলোমিটার দূরে অবকাশ কেন্দ্র। শেরপুর থেকে সিএনজি, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঝিনাইগাতী থেকে সিএনজি ও মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।

গজনী অবকাশে প্রবেশমূল্য বাস-ট্রাক ৫০০ টাকা, মাইক্রোবাস-পিক-আপ ভ্যানের জন্য ২০০ টাকা। জনপ্রতি প্রবেশমূল্য ১০ টাকা দিতে হয়। সৌজন্যে: প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *