হোসেইন জামাল
দেখতে আমাদের দেশের ‘পাঁচ পিঠা’র মতোই। রসালো ভাবটা চেহারায় ধরা পড়ে না। তবে কামড় দিলেই ধারণা পাল্টে যাবে। মুখ ভরে যাবে টসটসে মিষ্টি রসে। পরিমিত মাত্রায় কামড় না দিলে রস শরীরে লেপ্টে যাওয়াও বিচিত্র নয়। পিঠাটির নাম বেকালোভা। আরেকটি পিঠা দেখতে অনেকটা ঝিনুকের মতো। যেন হাঁ করে মাখন গিলছে। মাখনের ওপরের শরীরটা মনে হতে পারে ভরাট। তবে মুখে দেওয়ার পর উই ঢিবির মতো ঝরে পড়বে মুখে। এই পিঠার নাম কাটায়েফ।
পিঠাপুলিসহ আরব দেশের এমন শতাধিক বিচিত্র খাবারের উৎসব চলছে রাজধানীর গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এই পিঠা উৎসব। চলবে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। ওয়েস্টিনের সিজনাল টেস্টস রেস্টুরেন্টে ‘অ্যারাবিয়ান সাফারি’ নামে এই ফুড ফেস্টিভালের আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনে ওয়েস্টিনের সঙ্গে সহযোগিতায় রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, এমিরেটস এয়ারলাইনস ও পেপসি। আয়োজন উপলক্ষে হোটেলটি সাজানো হয়েছে আরবীয় সাজে। উৎসব চলাকালে আরবীয় দেশগুলোর বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের পসরা সাজানো থাকবে। তবে লোভনীয় এসব খাবার শুধু রাতেই খাওয়ার সুযোগ মিলবে। আর এ জন্য জনপ্রতি খরচ হবে পাঁচ হাজার টাকা।
আরবদের অনেক খাবারের সঙ্গেই আমাদের দেশীয় খাবারে মিল রয়েছে। আমাদের মতোই সেই অঞ্চলের বাসিন্দারা রান্নায় ব্যবহার করে নানা ধরনের মসলা। সঙ্গে ঝালও। আর এসব খাবার তৈরির জন্য সিরিয়া থেকে ঢাকায় এসেছেন খ্যাতনামা রন্ধনশিল্পীরা।
আরবীয় খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা রকম নুডলস, সালাদ, গরু ও মুরগির মাংসের নানা পদ, দই ও স্যুপ। খাবারগুলো তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে সয়া সস, চিলি অয়েল, ফিশ সস, ওয়েস্টার সস ও সিজামি অয়েল। এ ছাড়া ফেস্টিভালে রয়েছে কোল্ড ড্রিংকস, ভেজিটেবল এগ স্যুপসহ বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, ফ্রায়েড চিকেন, স্লাইসড বিফসহ বিভিন্ন পদের সবজি ও ডেজার্ট।
অ্যারাবিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যালে সিরিয়া থেকে লেবানন, জর্দান থেকে কুয়েত, সৌদি আরব থেকে কাতার-সব দেশের সব ধরনের আরবীয় লোভনীয় খাবারের স্বাদ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই উৎসবে ডিনারের আয়োজনে থাকছেন সিরিয়ার খ্যাতনামা রন্ধনবিদ রিমন এমদাদ ওবাইদ। সিরিয়া ও অন্যান্য আরবীয় দেশের খাবারের সত্যিকারের স্বাদ দিতে এই পুরো আয়োজনের তিনি কর্ণধার। তাঁর তত্ত্বাবধানে নানা স্বাদের কাবাব, মিজ, ওজি, শর্মা ও ট্যাগিংস তৈরি হচ্ছে। আর এসবের স্বাদ নিতে ভোক্তারা ভিড় করছে ওয়েস্টিন হোটেলের সিজনাল রেস্টুরেন্টে।
কয়লায় মাংস পুড়িয়ে আরবের ঐতিহ্যবাহী কাবাবের সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। দুবাইয়ের সুইটস বাখলাবাও খেতে অসাধারণ। এ ছাড়া মোশাবাক, ওয়াজি চিকেন, ফ্যালায়েল, শিষতক, ল্যাম্ব কোটকা, কোবে সাজিয়াহ, মোব্বারক, হিন্দবাহ, মুহরামা, হুসমুস, চিকেন টিক্কা, রেশমি কাবাব, বোনলেস চিকেন টিক্কা, বারবিকিউ চিকেন উইংস, স্প্রিং রোল, অন্থন, প্রন অন টোস্ট, চিকেন ললিপপ, ফিরনি, ফালুদাও রয়েছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ