তাসকিন হক
সুইজারল্যান্ডের এঞ্জেলবার্গের আল্পস পর্বতমালার মাউন্ট তিতলিসের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতুটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু সেতুগুলোর মধ্যে একটি তো বটেই, অন্যতম ভয়ংকর সেতুও বলা যায় এটিকে। এদিকে ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু ঝুলন্ত সেতুর রেকর্ড ইতিমধ্যে পুরে ফেলেছে নিজের ঝুলিতে। মাউন্ট তিতলিসের একটি হিমবাহেরও এক হাজার ৫০০ ফুট ওপরে অবস্থিত দুই পর্বত চূড়ার সংযোগ সেতুটি তাই ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের ৭ তারিখে উদ্বোধনের পর থেকে দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেতুটি প্রায় ৯ হাজার ৭০০ ফুট উঁচুতে। আর এই উঁচুতে রমতু পারাপারের ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা দেওয়ার পাশাপাশি চার পাশের আল্পস পর্বতমালার সৌন্দর্য উঁচু থেকে উপভোগ করার জন্যই বানানো হয়েছে এটি। প্রায় এক মিলিয়ন ডলার বা আট কোটি টাকা খরচ করে বানানো এই সেতু ৩৩০ মিটার লম্বা ও প্রায় ৩ মিটার চওড়া। দর্শনার্থীদের রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেওয়ার জন্য তৈরি করা সেতুটির উদ্বোধনের দিনে শুরু হয় প্রবল তুষার ঝড়। তাই সেদিন তীব্র শীতের সঙ্গে ভয়ও ভালোভাবেই টের পেয়েছিলেন সেতুতে চড়া ভ্রমণার্থীরা।
মাউন্ট তিতলিস অবশ্য বিশ্বের প্রথম ঘুরন্ত কেব্ল্কারের জন্য আগে থেকেই বিখ্যাত। এই কেব্ল্কারই মাউন্ট তিতলিসের চূড়াকে এঞ্জেলবার্গের সঙ্গে যোগ করে। ১৯১৩ সালে বসানো এই কেব্ল্কারের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষেই সেতুটি বসানোর পরিকল্পনা করা হয়। দর্শনার্থীদের আকর্ষণের জন্য এখন সেতুটি একাই যথেষ্ট হলেও দুর্বলচিত্তের মানুষের কথা মাথায় রেখে কেব্ল্কারটি চালু রাখা আছে।
তিতলিসের পাহাড় চূড়ার পথ বলে খ্যাত এই সেতু বানানোর কাজ কিন্তু সহজ ছিল না মোটেও। ঝুলন্ত সেতুটি বানাতে ব্যবহৃত ভারী ভারী সব জিনিসপত্র ওঠানো হয় হেলিকপ্টারের সাহায্যে। আর নির্মাণে জড়িত প্রকৌশলী, নির্মাণকর্মীসহ সবার জন্যই কাজটি ছিল দারুণ ঝুঁকিপূর্ণ। উচ্চতা তো বটেই, সেই সঙ্গে বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গেও যুদ্ধ করে কাজ করতে হয়েছে তাঁদের। একসঙ্গে ৩০০ দর্শনার্থী বহন করার মতো শক্তিশালী করে বানানো হয়েছে সেতুটি। আর শক্তিশালী তুষারঝড়েও যাতে ভেঙে বা হেলে না পড়ে, সে ব্যবস্থাও করা আছে। ভ্রমণপিপাসুরা তাই নিশ্চিন্ত মনেই উঠতে পারেন সেতুটিতে। সূত্র : কালের কণ্ঠ