শুধু তোতাপাখির জন্য কি নতুন করে কেউ জঙ্গল তৈরি করে? কেন নয়? তবে শুধু তোতাপাখি যে জঙ্গলের উপকার পাবে তা নয়। যেভাবে জঙ্গল উজাড় হচ্ছে তাতে এই পৃথিবীর ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। সেই শঙ্কা কাটাবেও জঙ্গল।
দক্ষিণ আফ্রিকার জঙ্গলে এখনো হাজার বছরের বেশি বয়সের বৃক্ষের সন্ধান পাওয়া যাবে। এরকম গাছে আগে আসলে সেখানকার জঙ্গল ভর্তি ছিল। এখন তারা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে৷ তাদের সঙ্গে হারাচ্ছে ফলও।
আসলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে হলুদ কাঠের চাহিদা বাড়ছে। গত ৩৫০ বছর ধরেই চাহিদা বাড়তির দিকে। কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. স্টিভ বয়েস এই বিষয়ে বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল ইয়েলোউডস। রেলওয়ে স্লিপার এবং খনির কাঠ হিসেবে ব্যবহারের জন্য এরকম লাখ লাখ গাছ কাটা হয়েছে। আর এখন সুন্দর রংয়ের জন্য ইয়েলোউড বিশ্বের অন্যতম দামি কাঠ। অনেক জায়গায় কিউবিক মিটারপ্রতি এই গাছের মূল্য তিন হাজার ইউরো।’
সরকার উইলোউড গাছ কাটার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। উদ্দেশ্য এসব গাছের ব্যাপক নিধন ঠেকানো। তাসত্ত্বেও অবৈধভাবে এগুলো এখনো কাটা হচ্ছে। ড. স্টিভ বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে একসময় পুরনো সব ইয়েলোউড হারিয়ে যাবে।’
তোতাপাখির খাবার
ইয়েলোউড ফলে থাকা ‘অ্যান্টি ভাইরাল এজেন্ট’ সম্ভবত কেপ তোতাপাখির জন্য আদর্শ। কিন্তু এই ফলের অভাবের কারণে পাখিগুলো একর্ণ এবং একরকম বাদাম খাচ্ছে। সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাছাড়া ইয়েলোউড ফল না থাকায় এখন বছরে দু’মাস তাদের কার্যত অভূক্ত থাকতে হয়।
তবে পরিস্থিতি সম্ভবত পুরোপুরি হতাশাজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বংশবৃদ্ধির জন্য কেপ তোতাপাখির বিশেষ ঘরের দরকার হয়। ‘কেপ প্যারোট’ প্রকল্প তাই জঙ্গলের গাছে শতাধিক ঘর ঝুলিয়ে দিয়েছে।
পাশাপাশি এই প্রকল্পের অধিনে নতুন করে বনায়ন কর্মসূচিও নেয়া হয়েছে, যেখানে অনেক ইয়েলোউড গাছ লাগানো হবে। তখন তোতারাও সারাবছর তাদের উপযুক্ত খাবার পাবে। কেপ প্যারোট প্রকল্প এজন্য গ্রামবাসীদের টাকা দিচ্ছে। গাছপ্রতি এক ইউরো। আর এগুলো পরবর্তীতে দেখাশোনার জন্য আরো টাকা পাবেন তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম দরিদ্র অঞ্চল এটি। তাই এই অফার সাদরে গ্রহণ করেছে স্থানীয়রা।