Skip to content

ত্রিপুরার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীরমহল

:: সুদীপ চন্দ্র নাথ ::
বিশাল প্রাকৃতিক লেকের মধ্যে তৈরি হওয়ায় এর নাম রাখা হয় নীরমহল। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে সিপাহীজলা জেলার মেলাঘরের রুদ্রসাগর লেকের মধ্যে অবস্থিত এই নীরমহল প্রাসাদ।

বিশাল প্রাকৃতিক লেকের মধ্যে তৈরি হওয়ায় এর নাম রাখা হয় নীরমহল। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৫৩ কি. মি. দূরে সিপাহীজলা জেলার মেলাঘরের রুদ্রসাগর লেকের মধ্যে অবস্থিত এই নীরমহল প্রাসাদ।

পাঁচ দশমিক তিন বর্গ কি. মি. জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই রুদ্রসাগর লেক। স্বাধীন দেশীয় রাজ্য ত্রিপুরার শেষ রাজা বীর বিক্রম মাণিক্য বাহাদুর ১৯৩৮ সালে এই প্রাসাদটি তৈরি করেন।

১৯২১ সালে বীর বিক্রম মাণিক্য বাহাদুরের মনে এই লেকের মধ্যে একটি সুরম্য প্রাসাদ নির্মাণের ভাবনা আসে। কলকাতার নির্মাণ সংস্থা মার্টিন অ্যান্ড বার্ণকে এই প্রাসাদ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা আট বছরের চেষ্টায় হিন্দু ও মুসলিম নির্মাণ শৈলীর সংমিশ্রণে প্রাসাদটি নির্মাণ করেন।

নীরমহলের পথে ঢাকা ট্যুরিস্টের ট্রাভেলাররা। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান।

এটি মূলত গ্রীষ্মকালে প্রমোদ ভ্রমণের স্থল হিসেবে এই প্রাসাদটিকে ব্যবহার করতেন। গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে জীবন যখন অসহনীয় হয়ে উঠতো, রাজা তখন রাজমহলের সকলকে নিয়ে পাড়ি জমাতেন নীরমহলে। রুদ্রসাগর লেকের শীতল হাওয়া স্বস্তি দিতো রাজা, রানীসহ রাজপরিবারের সকল সদস্যদের। এখনো গ্রীষ্মকালে নীরমহলে গেলে প্রচণ্ড গরমেও শীতল হাওয়ার ছুঁয়া লাগে শরীরে।

এই প্রাসাদ মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত, অন্দর মহল ও বাহির মহল। অন্দর মহল রাজ পরিবারের লোকজনদের জন্য এবং বাহির মহলে ছিলো দরবার হল, নাচঘরসহ খোলা মঞ্চ, সৈন্যদের পাহারা দেওয়ার গম্বুজ, তাদের থাকার জায়গা ইত্যাদি। সব মিলিয়ে এখানে মোট ২৪টি কক্ষ রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ফুলের বাগান।

ভারতের স্বাধীনতার পর নীরমহল প্রাসাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব চলে যায় ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের হাতে। সেই থেকে এখনো নীরমহলের দায়িত্ব রয়েছে ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দফতরের হাতে।

নীরমহল। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান।

জলের মধ্যে এমন মহল ত্রিপুরারই শুধু নয় সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে একমাত্র এবং সমগ্র ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় মহল। এমন আরো একটি জল মহল রয়েছে রাজস্থানে।

রাজ পরিবারের লোকজন রাজঘাটে এসে নৌকায় চড়ে প্রাসাদে পৌঁছাতেন। এখনো পর্যটকদের নৌকায় চড়ে নীরমহল দেখতে যেতে হয়। জল ভর্তি লেকের মধ্যদিয়ে নীরমমহলে যাওয়া এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি।

প্রতি বছর কয়েক হাজার লোক আসেন নীরমহল প্রাসাদ দেখার জন্য। এই অঞ্চলটি ভূমিকম্প প্রবণতার পঞ্চম মাত্রায় অবস্থিত তাই বড় ধরণের ভূমিকম্প হলে ভেঙ্গে পড়তে পারে মহলটি। এই বিষয়টি মাথায় রেখে রাজ্য সরকার নীরমহল প্রাসাদকে সম্প্রতি ভূমিকম্পের সহনশীল করে তোলেছে। সংস্কার করা হলেও নীরমহল প্রাসাদের সবকিছু রাখা হয়েছে রাজ আমলের মতো করে। সৌজন্যে: বাংলানিউজ

নীরমহলে প্রবেশের পূর্বে ঢাকা ট্যুরিস্টের প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: প্রসেনজিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *