:: আশিক আব্দুল্লাহ ::
সঠিক যত্নে দাঁত থাকে ঝকঝকে, হাসি হয় আরও সুন্দর। সাদা ঝকঝকে দাঁত সবাই চান, যত্নের বেলায় অবহেলা। নেহাত বিপদে পড়ে দাঁতের চিকিৎসকের কাছে না যাওয়া পর্যন্ত যেন তাঁরা বিষয়টির গুরুত্বই বোঝেন না। একটু সচেতন হলে এবং কিছু বিষয় নিয়মিত চর্চার মধ্য দিয়ে অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে সুস্থ-সবল দাঁতের সুন্দর হাসি হাসতে পারবেন। আর মুখ থেকে বাজে গন্ধ বেরোচ্ছে—এটা শুনতে কারোরই ভালো লাগার কথা নয়। দাঁতের ব্যাপারে সচেতন না হলে দাঁত দেখতেও বিশ্রী হতে পারে। তেমনি দুর্গন্ধের উৎসও হতে পারে।
কাদের মুখে গন্ধ বেশি হয়
যাঁরা নিয়মিত সকাল ও রাতে দাঁত ব্রাশ করেন না, যাঁদের বয়স বেড়ে গেছে, উঠতি বয়সী কিশোর, যাঁরা আঁকাবাঁকা দাঁত ঠিক করতে ব্রেস পরেন, পান বা সিগারেট খান, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে, দাঁতের মাড়িতে পাথরের মতো আবরণ জমে কালো কালো হয়ে গেছে, যাঁদের মুখে দাঁতের ভাঙা অংশ রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরে, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে, ডায়াবেটিস, ইনফেকশন হওয়া দাঁত ও দাঁতের মাড়ি, কিছু খাবার (পেঁয়াজ, রসুন, কফি) ইত্যাদি।
দাঁতে দাগ পড়ে কেন
চকলেটে আসক্তি, তেল-মসলাযুক্ত ভারী খাবারের অভ্যাস, অ্যালকোহল পানের অভ্যাস, অতিরিক্ত চা-কফি পান করা কিংবা ধূমপান বা পান চিবানোর অভ্যাস থাকলে দাঁতে দাগ পড়ার পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার আশঙ্কা অনেক বেশি।
সুন্দর দাঁতের জন্য
দিনে দুই বেলা ব্রাশ করুন
দিনে দুই বেলা ব্রাশ করা দাঁতের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। রাতে ও সকালে খাবার গ্রহণের পর দাঁত অবশ্যই পরিষ্কার করা উচিত। এরপরও যদি মুখে দুর্গন্ধ হয়, তাহলে বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে পারেন। এটি মুখ থেকে অ্যাসিডিটি দূর করবে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমিয়ে দেবে।
প্রচুর পানি পান করুন
পানিশূন্যতায় ভুগলেও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন। এটি আপনাকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করবে এবং মুখের বাজে গন্ধ দূর করবে।
জিহ্বা ব্রাশ করুন
ব্রাশ করার মানে এই নয় যে কেবল দাঁতই ব্রাশ করবেন। জিহ্বাও ব্রাশ করা জরুরি। ব্যাকটেরিয়া জিহ্বাতেও বৃদ্ধি পায়। এতে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
চুইংগাম চিবানো
মুখের বাজে গন্ধ দূর করতে চিনি ছাড়া চুইংগাম চিবুতে পারেন। এটি মুখের লালা উৎপন্ন করতে সাহায্য করবে। এটি ব্যাকটেরিয়াকে দূর করতে সাহায্য করবে এবং খাদ্যকণাও পরিষ্কার করবে।
চা খান
চায়ের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে পলিফেন। এটি মুখের সালফার উপাদানকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন
দাঁত পরীক্ষায় ফাঁকি দেবেন না। দাঁতে কোনো ক্ষত ধরা পড়লে, দাঁতে বা মাড়িতে ব্যথা হলে, মাড়ি থেকে রক্ত ঝরলে কিংবা দাঁত শিরশির করলে অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যান। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে দাঁতের সুরক্ষা নিশ্চিত হতে পারে।
কীভাবে দাঁত মাজবেন
দাঁত মাজার সময় জোরে জোরে ব্রাশ ঘষলেই দাঁত বেশি পরিষ্কার হবে, বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। বরং জোরে জোরে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হতে পারে। কেবল সামনে-পেছনে ব্রাশ না টেনে ব্রাশটা মাড়ির সাপেক্ষে ৪৫ ডিগ্রি কোণে রেখে দাঁত মাজুন। আর অবশ্যই দু-তিন মাস পরপর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। ব্রাশের ফাইবারগুলো বেঁকে যাওয়ার পরও তা ব্যবহার করতে থাকলে মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। সম্ভব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নরম, মাঝারি বা একটু শক্ত ব্রাশ বেছে নিয়ে তা ব্যবহার করুন। সৌজন্যে : প্রথম আলো