প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এর মধ্যেই বর্ষবরণ উৎসব। এই গরম ও রোদেও অবশ্য পয়লা বৈশাখের উৎসবে অংশ নিতে অনেকে বাইরে যাবেন। কিন্তু সতর্ক থাকুন, যেন পানিশূন্যতায় আক্রান্ত না হন। গরমে ঘামের মাধ্যমে আমরা শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ হারাই। এটি যথাযথভাবে পূরণ না করতে পারলে বিপদ। তাই এই গরমে যাঁরা বেরোবেন, তাঁদের জন্য কিছু পরামর্শ।
পানির ওপর কোনো পানীয় নেই। পানিশূন্যতা রোধ করতে একটু পরপরই পানি পান করুন। পানি হতে হবে বিশুদ্ধ। পথের ধারের অনিরাপদ পানি নয়। বাড়ি থেকে বোতলে বা ফ্লাস্কে করে পানি নিয়ে বের হওয়া ভালো। কতটুকু পান করতে হবে, তা আপনার পিপাসাকেন্দ্রই জানান দেবে। যখনই তেষ্টা পাবে, তখনই পানি পান করবেন।
কোমল পানীয়, বোতলজাত ফলের রস বা নানা ধরনের ক্যালরিযুক্ত পানীয় সাময়িক আরাম দিলেও এগুলোর বিপাক ক্রিয়ায় দেহের ক্যালরিও খরচ হয়ে যাবে। সাধারণ পানি শোষণে ও বিপাকে কোনো কষ্ট করতে হয় না শরীরকে। তা ছাড়া বারবার এ ধরনের পানীয়, আইসক্রিম ইত্যাদি খেলে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলার ঝুঁকি থেকে যায়।
মোটামুটি ঠান্ডা পানি আরামদায়ক। কিন্তু খুব বেশি ঠান্ডা পানি বা বরফ না খাওয়াই ভালো। খুব গরম বা রোদ থেকে এসে হঠাৎ খুব ঠান্ডা খেলে তাপমাত্রার আকস্মিক পরিবর্তনে ক্ষতি হতে পারে।
অ্যালকোহল, চা, কফি এই গরমের জন্য নয়। এগুলো দেহের বিপাক ক্রিয়া ও তাপমাত্রা আরও বাড়ায়। একই কথা খাটে ঝাল মসলাযুক্ত খাবার বা ফাস্টফুডের বেলায়ও। এগুলো বিপাকে দেহের তাপমাত্রা বাড়বে এবং আরও গরম লাগবে।
স্বাদ বাড়াতে বা অবসাদ কাটাতে পানিতে বরং প্রাকৃতিক উপাদান মেশান। যেমন লেবুর রস, কমলা বা মালটার রস, পুদিনা পাতা। কেনা পানীয়ের চেয়ে এগুলো বেশি উপকারী। ডাবের পানিতেও আছে ইলেকট্রোলাইটস, যা অবসন্নতা দূর করবে।
জলীয় অংশ প্রচুর এমন ফল ও সবজি খেতে পারেন বারবার। যেমন শসা, তরমুজ, বাঙ্গি, মালটা, লাউ, চালকুমড়া ইত্যাদিতে আছে প্রচুর পানি। এগুলো গরমের সময়ে আদর্শ খাবার।
ডা. তানজিনা হোসেন
হরমোন, বিপাক ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
সৌজন্যে : প্রথম আলো