Skip to content

দেশ নেতৃত্ব দেওয়াই স্বপ্ন : মাহমুদউল্লাহ

Mahmudullah-Riadমাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সম্ভবত বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কার্যকর কিন্তু সবচেয়ে গ্লামারের বাইরে থাকা ক্রিকেটার। নিজে মজা করে বলেন, তিনি ‘পার্শ্ব নায়ক’ থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু সম্প্রতি একটু একটু করে বেরিয়ে আসছে নায়ক এবং অধিনায়ক রিয়াদের চেহারা।

বিপিএলে দুরন্ত অধিনায়কত্ব করার পর মুখ ফুটেই বললেন, অধিনায়কত্ব ব্যাপারটা তিনি সবচেয়ে উপভোগ করেন, স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করার। দেশের অন্যতম সিনিয়র এই অলরাউন্ডারের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন দেবব্রত মুখোপাধ্যায়

অধিনায়কত্ব তো আগেও করেছেন। কিন্তু এবার বিপিএলের পর আপনার অধিনায়কত্ব একটু বেশি আলোচনায় এসেছে। এটা টের পাচ্ছেন?

আমার মনে হয় না, আমি আলাদা কিছু করেছি। একটি ব্যাপারই মাথায় ছিল যে, শেষ চারে খেলতে হবে। আমরা দল ভালো ছিলাম, কিন্তু সত্যি বলতে কাগজে-কলমে অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে ছিলাম।

বিশেষ কিছুই করেননি বলতে চাচ্ছেন?

একটা ব্যাপার আমি আলাদা করে বলতে পারি, এই মৌসুমটায় আমি ঠিক করেছিলাম নেতৃত্বে কোনো চাপ নেব না। এমন নয় যে আগে খুব চাপ নিয়েছি। কিছু চাপ তো থাকবেই অধিনায়কত্ব করতে গেলে। তবে এবার শুরুর আগেই ঠিক করেছিলাম যে চাপকে চেপে বসতে দেব না।

এমনিতে অধিনায়কত্ব ব্যাপারটা কেমন উপভোগ করেন?

খুব উপভোগ করি। আমার মতে, নেতৃত্ব একজনের ভেতর থেকে সেরাটা বের করে আনে। ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক দিন থেকেই অধিনায়কত্ব করছি, বিপিএলে তিনবার করলাম। অধিনায়কত্ব আমার পারফরম্যান্সেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে নেতৃত্ব।

আপনার কাছে অধিনায়কত্বের অর্থটা কী? অধিনায়কত্বের দর্শনটা কী?

আমি যেটা সবসময় পছন্দ করি সেটা হলো যতটা পারা যায় শান্ত ও নির্ভার থাকা। অনেক সময়ই অনেক কিছু পক্ষে আসবে না, পরিকল্পনামত হবে না, হতাশা আসবে। কিন্তু সেটা ভেতরে চেপে রেখে পরিস্থিতি জয় করার চেষ্টা করা। আরেকটা ব্যাপার হলো, আমি মনে করি অধিনায়কের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব দলের সবার কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনা।

সে জন্য অফ দ্য ফিল্ড অধিনায়কের বড় একটা কাজ থাকে। মাঠের বাইরে রিয়াদ কেমন অধিনায়ক?

মাঠের বাইরে আমি সাধারণ একজনই। সবার সঙ্গে দুষ্টমি-ফাজলামো করি, মজা করি। বিশেষ করে জুনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ওদের কাছ থেকেও শেখার চেষ্টা করি। প্রচুর কথা বলি, ক্রিকেট ও ক্রিকেটের বাইরেও। কথা বলতে থাকলে অনেক কিছু জানা যায়, অনেকের ধরনটা বোঝা যায়।

ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করাটাও তো একটা চ্যালেঞ্জ থাকে?

ক্রিকেটারদের ভেতর বিশ্বাসটার জন্ম দিতে না পারলে অধিনায়কত্ব করার কোনো মানে হয় না। অনেক সময় আমরা এসব বলি শুধু বলার জন্যই। ফলস বিশ্বাসের কথা বলি। কিন্তু সত্যিকারের বিশ্বাসটা ভেতর থেকে আসে। অধিনায়ককে সেটার জন্ম দিতে হয় সতীর্থদের ভেতর।

আপনি এমনিতে খুব শান্ত মানুষ। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে খুব আক্রমণাত্মক বলেই মনে হয়।

আমি সবসময়ই আক্রমণাত্মক অধিনায়কত্ব পছন্দ করি। আমার মতে, আক্রমণাত্মক অধিনায়কত্ব না হলে সাফল্য পাওয়া কঠিন। নেতৃত্বে নেতিবাচক ভাবনার সুযোগ নেই। যত আক্রমণাত্মক হওয়া যায়, সাফল্যের সম্ভাবনা তত বাড়ে।

মাঠের বাইরে অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কে?

মাশরাফি ভাই তো এটির উজ্জ্বল এক উদাহরণ। সবসময় টিমমেটদের সঙ্গে দুষ্টমি-ফাজলামো করছে, মজা করছে। এমনকি দলের সবচেয়ে নতুন ছেলেটির সঙ্গেও ফাজলামো করছে। আবার কাজের সময় উনি দারুণ সিরিয়াস, এই ক্ষেত্রে হি মিনস বিজনেস। মাশরাফি ভাই তাই খুব ভালো উদাহরণ। মাঠের ভেতরে নেতা হিসেবে বলিষ্ঠ, মাঠের বাইরে আবার তিনি সবার খুব ভালো বন্ধু বা বড় ভাই।

আপনি যখন অধিনায়কত্ব শুরু করেন, কাকে সামনে দেখতে পান?

মাশরাফি ভাই তো অবশ্যই দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক। তবে আমার প্রথম অনুপ্রেরণা সত্যি বলতে সুজন ভাই (খালেদ মাহমুদ)। শুরুর দিকে উনার নেতৃত্বে আমি অনেক খেলেছি, অনেক কিছু শিখেছি তার কাছ থেকে। সুজন ভাই কিন্তু অনেক ইমোশনাল, অনেক সিদ্ধান্তই ইমোশন থেকে নিতেন এবং সেটা সফলও হতো। ক্রিকেটের প্রতি উনার যে প্যাশন ছিল, যে ভাবনা ছিল, সেই সময় খুব কাছ থেকে দেখেছি। তখন কেবলই শুরু আমার, তার পরও আমি খেয়াল করতাম, আমি মনে গেঁথে রাখতাম। দেশের বাইরের অধিনায়কদের মধ্যে, খেলা যখন শুরু করি, স্টিভ ওয়াহর অধিনায়কত্ব দারুণ লাগত। তারপর এবং এখন, মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্ব আমার ভালো লাগে।

আপনার কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, অধিনায়কত্ব আপনার অনেক দিনের পরিকল্পনার অংশ!

সত্যি বলতে, নেতা হতে ভালো লাগে আমার। সবসময়ই। অধিনায়কত্ব আমি পছন্দ করি, উপভোগ করি। সবাই নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পায় না। অনেকে অনেক বড় ক্রিকেটার হয়, কিন্তু নেতৃত্বে সফল হয় না। ব্যাপারটা উপভোগ করে না। কিন্তু আমি এই দায়িত্ব উপভোগ করে দারুণ ভাবে।

জাতীয় দলের অধিনায়কত্বের স্বপ্ন দেখেন না?

দেখুন, দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার চেয়ে বড় সম্মান একজন ক্রিকেটারের জন্য আর হয় না। আমি মনে করি, একজন ক্রিকেটারের জীবনে মোস্ট প্রেস্টিজিয়াস ব্যাপার। মানুষ বলে ‘এক পায়ে খাড়া’, আমি বলব, সুযোগ দুই পায়েই খাড়া থাকব!

তার মানে জাতীয় দলের অধিনায়ক রিয়াদকে দেখার অপেক্ষায় থাকতে পারি আমরা?

যেটা শুনতে চাইছেন হয়ত, সরাসরিই বলি, এটা আমার স্বপ্ন। দেশকে নেতৃত্ব দেয়া আমার স্বপ্ন। সৌজন্যে : ইত্তেফাক

Hajj-Omrah-FB-Boost

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *