তাসকিন হক
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর রাস্তা কোনটি-এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই দ্বিমত থাকতে পারে। ১৯৮৯ সালের আগেও আমেরিকার রুট ৬৬ কিংবা লোনলিয়েস্ট রোডকেই ধরা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সড়কপথ হিসেবে। কিন্তু ১৯৮৯ সালে চালু হওয়ার পর থেকে নরওয়ের আটলান্টিক রোড যেন ছাড়িয়ে গেছে ওই দুটি রাস্তাকেও।
চালকদের দুঃস্বপ্ন আটলান্টিক রোডের সেতুগুলো। রোডটির দৈর্ঘ্য কিন্তু খুব বেশি নয়, মাত্র পাঁচ মাইল। তবে শুধু দৈর্ঘ্য দিয়ে বিচার করলে যে রীতিমতো অবিচার করা হবে এর প্রতি। আটলান্টিক সাগরের কোল ঘেঁষে বানানো এই রাস্তা পাড়ি দিতে হলে আপনাকে যে পার হতে হবে আটটি শ্বাসরুদ্ধকর সেতু। এখানে গাড়ি চালানোর অনুভূতি যেন অনেকটাই সমুদ্রসৈকতে হাঁটার মতোই। আর সমুদ্রের কারণে সেতুগুলো বানানো হয়েছে কিছুটা বাঁকানো অবস্থায়। আর তাই সেতুগুলোতে উঠলে মনেই হতে পারে কোনো রোলার কোস্টারে উঠে পড়েছেন। আর সে জন্যই দেশটির অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হতে খুব বেশি দিন সময় লাগেনি আটলান্টিক রোডের। প্রায় ১২২ মিলিয়ন নরওয়েজিয়ান ক্রোন খরচ করে বানানো এই রাস্তা শুরুতে ছিল টোল সড়ক। কিন্তু পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে কয়েক বছরেই উঠে আসে পুরো টাকা। যার কারণে এটি এখন উন্মুক্ত সবার জন্য।
নরওয়ের আটলান্টিক রোড
মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে কয়েকটি দ্বীপের সংযোগ ঘটানোর জন্যই তৈরি করা হয় আটলান্টিক সড়ক। সাগরের একদম পাশে এই সড়ক বানাতে গিয়ে অবশ্য যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে নির্মাণকর্মীদের। সড়কপথটি নির্মাণকালীন ১২টি ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করতে হয় তাদের। তবে শেষমেশ কিন্তু জয় হয়েছে মানুষেরই। ছয় বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই বানানো সম্ভব হলো আটলান্টিক সড়ক। কোনো এক শান্ত সূর্যোজ্জ্বল দিনে আর যেকোনো আট-দশটি রাস্তার মতোই মনে হবে এই সড়ক। দূর সাগরে দেখা মিলতে পারে একঝাঁক ডলফিন কিংবা তিমির। কিন্তু ঝড়ো আবহাওয়ার দিনেই ফুটে ওঠে সেতুটির আসল রূপ। অনবরত সাগরের ঢেউ রাস্তায় আছড়ে পড়ার ফলে গাড়ি চালাতে গিয়ে যেকোনো অভিজ্ঞ চালকেরও ঘাম ছুটে যায়। চিত্রগ্রাহক আর দুঃসাহসী পর্যটকরা অবশ্য অপেক্ষার প্রহর গোনেন এই দিনটিরই। সূত্র : কালের কণ্ঠ
https://www.youtube.com/watch?v=2_GPf8jUNDs