Skip to content

নাজারার ঢেউ!

Najra

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
ভাবুন তো এমন এক সাগর উপকূলের কথা, যেখানে খানিক পর পর আঘাত হানছে ভয়াল দর্শন বিশাল সব ঢেউ। শুধু তা-ই নয়। ওই ঢেউয়ের মাথায় একটু একটু দেখা যাচ্ছে কোনো মানুষের টালমাটাল খুদে দেহ। সেটি ডুবে যাচ্ছে ঢেউয়ের নিচে, আবার ভেসে উঠছে। মনে হবে যেকোনো সময় এই ঢেউ ছুঁয়ে দেবে আকাশ। কেমন লাগবে ওখানটায় থাকতে তখন? রোমাঞ্চ নাকি ভয়, কোনটা বেশি অনুভব করবেন?

উত্তর যা-ই হোক না কেন, হাওয়াইয়ের গ্যারেট ম্যাকনামারার মতো অনেক দুঃসাহসী সার্ফারের কাছে কিন্তু সব সময়ই আকর্ষণীয় এই ঢেউগুলো। বলছি ইউরোপের দেশ পর্তুগালের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত নাজারার কথা। এমনিতে পর্যটকদের কাছে এখানকার সাগরসৈকত বেশ জনপ্রিয় হলেও শীতকালটায় সাধারণত কেউ খুব একটা মাড়াতে চান না নাজারার পথ। কারণ? কী আবার! সেই বিশালকায় দৈত্য ঢেউ। ৮০ থেকে ১০০ ফুট বা তারও বেশি উচ্চতার ঢেউগুলো যেন ভাসিয়ে নিয়ে যেতে আসে একেবারে পুরো উপকূলটাকেই। তবে এত বড় ঢেউ কিন্তু দমাতে পারেনি বেপরোয়া সার্ফারদের। বরং আর সব সময়ের চেয়ে শীতকালেই এখানে আসতে পছন্দ করেন গ্যারেটরা। ২০১১ সালের নভেম্বরে ৭৮ ফুট এবং এর পরে নিজের রেকর্ড ভেঙে ২০১৩ সালে ১০০ ফুট ঢেউয়ের ওপর সার্ফিং করেন গ্যারেট নাজারার এই উপকূলে। তবে কিছুদিন আগে গ্যারেটের রেকর্ডকেও ভেঙে দিয়ে ১০০ ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউয়ের ওপর চড়ে বসেন ব্রাজিলের কার্লোস বার্লে।

কিন্তু কী করে তৈরি হয় নাজারার এই উঁচু ঢেউগুলো? এর উত্তর লুকিয়ে আছে নাজারার সাগরতলের অস্বাভাবিক ভূ-প্রকৃতিতে। নাজারার উপকূলের ধারেই ইউরোপের সাগরতলের সবচেয়ে বড় গিরিখাদের অবস্থান। আটলান্টিকের অতলে শুরু হয়ে নাজারার উপকূলরেখা থেকে খানিকটা দূরে এসে থেমে গেছে ১২৫ মাইল দীর্ঘ নাজারা খাদ। শহরের দিকে ধনুকের মতো আকৃতি নেওয়া এই খাদ সর্বোচ্চ তিন মাইল পর্যন্ত গভীর। আর এই খাদের কারণেই নাজারার ডো নর্টে বিচের কাছে এসে মাঝেমধ্যে জন্ম হয় দৈত্য ঢেউয়ের।

বিশেষ করে শীতের সময় উত্তর আটলান্টিকের ঝড়ে উত্পন্ন হওয়া বড় বড় ঢেউ নাজারার কাছে এসে সরু খাদ পেরোনোর সময় হয়ে ওঠে প্রচণ্ড শক্তিশালী। আর ১০০ ফুটেরও বেশি উঁচু হয়ে আছড়ে পড়ে উপকূলে। তবে শুধু নাজারা নয়, তাহিতির তিহুপো, হাওয়াইয়ের বানজাই পাইপলাইনসহ পৃথিবীর আরো কিছু জায়গায়ও এমন অস্বাভাবিক উঁচু ঢেউ দেখা যায়। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *