Skip to content

নান্দনিক চট্টগ্রাম

রেজা মুজাম্মেল
সবুজ প্রকৃতি। দিগন্ত জুড়ে রঙিনের ছোঁয়া। দৃষ্টিতে নয়নাভিরাম। প্রতিনিয়ত আভা ছড়ায় সৌন্দর্য। আলোয় ভরা বিস্মৃত আঙিনা। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমারোহে প্রাণবন্ত। পর্যটকদের নিরন্তর আকর্ষণ করছে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর এসব বৈশিষ্ট্য। নান্দনিক কোলাহলে রূপ ছড়াচ্ছে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। চট্টগ্রাম মহানগরে আছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক ফয়’স লেক। যার কোলে যেন আছড়ে পড়ছে সুন্দরের সব বিশেষণ। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২৭ সালে রেলকর্মীদের পানির চাহিদা মেটাতে পাহাড়ের খাদে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা এ লেকটি এখন চট্টগ্রামসহ দেশের মানুষের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে গেছে নাতিদীর্ঘ লেক, লেকের এপারে-ওপারে সৌন্দর্যের গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়। যারপরনাই মুগ্ধ করছে এ দৃশ্য। ফয়’স লেকের পাশেই আছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। সেখানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি। চট্টগ্রামের আরেক পর্যটন কেন্দ্র শহীদ জিয়া জাদুঘর। এখানে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে শহীদ জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচিহ্ন, আছে তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও বেশকিছু দুর্লভ ছবি, চট্টগ্রাম কালুরঘাটে খাল কাটা কর্মসূচিতে নেতৃত্বদানের একটি ভাস্কর্য। এর পাশেই আছে চট্টগ্রাম শিশু পার্ক এবং চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস।

Chittagong

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত : চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। অস্ত যাওয়া সূর্যকে এক পলক দেখতে পর্যটকরা ছুটে যান পড়ন্ত বিকালে। খোলা আকাশের নিচে বুকভরা নিঃশ্বাস নিয়ে মনটাই হয়ে ওঠে ফুরফুরে। প্রকৃতির নৈসর্গিক হাতছানি থাকে এ সমুদ্রসৈকতে। গগনজুড়ে বিস্মৃত সমুদ্রের সঙ্গে কর্ণফুলী নদীটির মিলনমেলা এখানে। চতুর্কোণা কংক্রিটের আবরণ সৈকততে দিয়েছে আলাদা মার্যাদা। আছে শখের কেনাকাটার মার্কেটও। নগরীর প্রবর্তক মোড়ের পাশেই অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত দেশি-বিদেশি সৈনিকদের একাংশ সমাহিত এখানে। ফুলের বাগান বেষ্টিত মনোরম এ স্থান স্মরণ করিয়ে দেয় সেসব সৈন্যের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বগাথার কথা। ছোট ছোট সমাধি ফলক সারিবদ্ধভাবে সাজানো। দৃষ্টি কাড়ে সব দর্শনার্থীর।

বায়েজিদ বোস্তামীর (রহ.) মাজার : এখানকার অন্যরকম আকর্ষণ মাজারের পুকুরের শতবর্ষী কাছিম। আছে স্থাপত্যশৈলীর অনুপম নিদর্শন। বাটালি পাহাড়। নগরীর টাইগার পাস ও লালখান বাজারের মাঝামাঝি অবস্থান। জনশ্রুতি আছে, চট্টগ্রামের প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগের প্রধানতম এটি। এ পাহাড়ে আছে নানারকম বৃক্ষরাজি। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য পাহাড় কেটে সুবিন্যস্তভাবে তৈরি করা সিঁড়ি। যেন শিল্পীর নিপুণ হাতে গড়া। এ পাহাড় থেকে দেখা যায় পুরো চট্টগ্রাম। পাহাড়ের কোলে গা ঘেঁষে যেন ঘুমাচ্ছে চট্টগ্রাম।

পারকি সমুদ্রসৈকত : চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে আনোয়ারায় এটির অবস্থান। এ সৈকতের পাড় ঘেঁষে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ঝাউবন। সারি সারি ঝাউগাছ ও চিকচিক বালিতে চোখ জুড়িয়ে যায়। যেন বালুবনে ঝাউবন। এখানে আছে সামুদ্রিক কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ, যা নির্মল আনন্দ দেয় আগতদের।

বিপ্লব উদ্যান : নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায়। আকারে ছোট কিন্তু পরিপাটি পরিবেশে দর্শকের কোলাহলে সরগরম থাকে। পড়ন্ত বিকালে ঘর্মাক্ত কর্মব্যস্ত মানুষের বিশ্রামের যেন এক অন্যরকম আঙিনা। দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে বিকাল ৪টার পর। ফুলবাগান ও নানা ধরনের গাছের সঙ্গে এর প্রধান আকর্ষণ স্বাধীনতা ভাস্কর্য।

এ ছাড়াও আছে সমুদ্রসৈকতের নেভাল এভিনিউ, আগ্রাবাদের শিশু পার্ক, সিআরবির শিরীষ তলা, শাহ আমানত সেতু (কর্ণফুলী), স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, আগ্রাবাদ প্রত্নতাতত্ত্বিক জাদুঘর, ডিসি হিল, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বাটারফ্লাই পার্ক। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *