সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
আমেরিকা সরকারের নিজস্ব মহাকাশ ও বিমানবিদ্যা নিয়ে চালানো গবেষণাধর্মী সংস্থার নাম হচ্ছে ‘ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস এন্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, যাকে আমরা সাধারণত ‘নাসা’ নামেই চিনি। সেই ১৯৫৮ সালে রাষ্ট্রপতি ডিউইট ডি. এইসেনহাওয়ারের হাত দিয়ে প্রথম শুরু হয় এ সংস্থাটির যাত্রা। পূর্বসূরি নাকা বা ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি কমিটি ফর অ্যারোনটিকসের পাশ করা ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস এন্ড স্পেস অ্যাক্টের মাধ্যমে ১৯৫৮-এর ১ অক্টোবর কাজ শুরু করে নাসা। সে সময় থেকে আজ অবধি আমেরিকার চাঁদে পা রাখা থেকে শুরু করে শাটল স্পেসের মতো যত ধরনের গবেষণা আর পরীক্ষা-নিরীক্ষামূলক কাজ করা হয়েছে মানুষকে মহাকাশের আরও একটু কাছে নিয়ে যেতে, চারপাশকে অনুসন্ধান করে আরও একটু ভালো করে চিনে নিতে, এর সবটুকুর পেছনেই ছিল এক ও অদ্বিতীয় নাসার নাম। নাসাকে নিয়ে এই ছোটখাটো প্রাথমিক তথ্য তো সবারই মোটামুটি জানা। ভাবছেন, তাহলে আরও একবার সেই জানা ব্যাপারগুলোকে জেনে নেওয়াটাই আজকের এই লেখার উদ্দেশ্য? না! আজ আপনাদেরকে নাসার জানা দিকগুলো নয় বরং জানাবো এমন কিছু মজার আর গোপন কথা, যেগুলো জানেন না অনেকেই। আসুন না চোখ বুলিয়ে আসি একবার সেগুলোর ওপর থেকে।
মহাকাশ, বড় বড় বিমান, মহাকাশযান, উইন্ড টানেল কত কিছু নিয়েই না গবেষণা করেছে নাসা। তবে আপনি কি জানেন যে, নাসার শুরুর সময়ে কিছু মানুষকে নিয়োগই দেওয়া হতো এজন্য যে তারা কোনোকিছুকে ঝাঁকি দিতে পারে বা ঠেলতে পারে। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এমন কাজের জন্য আলাদা করে মানুষ রাখার কি দরকার? আছে। অন্তত তখন অবধি নাসার কাছে এমন ঝাঁকুনি দেওয়ারও বেশ বড় কারণ ছিল। নাসার তখনকার প্রকৌশলীরা ভয় পেতেন যদি পরে বাতাসের ঝাঁকিতে তাদের তৈরি যন্ত্রপাতি ভেঙে-চুরে যায় কিংবা নষ্ট হয়ে যায়! আর তাই কোনো যান তৈরির পর সেটাকে চারপাশ দিয়ে ঝাঁকাতেন তারা। কেউ দড়ি দিয়ে টানতেন তো কেউ পিঠ দিয়ে ঠেলতেন। সত্যিই! বেশ বিশ্বাসযোগ্য পরীক্ষা বটে।
২. সোনার মোড়ক
বর্তমানে ঠিক এতোটা প্রচলন দেখা না গেলেও আগে নাসার যানগুলোতে পরিয়ে দেওয়া হতো সোনার একটি আবরণ। এটা সত্যি যে স্বর্ণের তাপ গ্রহণ ক্ষমতা বেশি। এছাড়াও নানারকম কিছু সুবিধা আছে এর। তবে তাই বলে সেটাকে যন্ত্রপাতির ওপরে লাগিয়ে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না! এবং দেরিতে হলেও অবশেষে সেটা বুঝেছে নাসা।
৩. পেন্সিল বনাম কলম
এই কথাটি প্রায় অনেকেই জানেন যে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে নাসা একটি কলম তৈরি করেছিল, যেটা দিয়ে জিরো গ্র্যাভিটিতেও মহাকাশে লেখা যায়। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এই কাজটি সম্পন্ন করে ফেলেছিল একটি পেন্সিলের দ্বারাই! তবে আপাতদৃষ্টিতে কেবল বোকামি মনে হলেও আদতে পেন্সিল জিনিসটা জিরো গ্র্যাভিটিতে ময়লা তৈরি করে, গুড়ো হয়ে যায়, মহাকাশচারীদের শ্বাসকষ্টের উদ্রেক করে এবং অবশ্যই শেষ অবধি কোনো কাজে আসে না কেবল ঝামেলা তৈরি ছাড়া।
৪. আলসেমির বেতন
ধরুন আপনি একমাস কিছু না করে ঘরে শুয়ে-বসে কাটালেন। কেউ কি আপনাকে বেতন দেবে? ভাবছেন, পাগল হলেই কেবল এ প্রশ্ন করা যায়। কিন্তু না। বাস্তবেও এমনটা ঘটে। আর সেটা নাসাতেই। এক হিসেবে দেখা যায় যে, নাসা প্রতিমাসে কিছু বিছাই করা মানুষকে ৯ হাজার ডলার বেতন দেয় কেবল শুয়ে থাকার জন্য। আর তাদের কেউই কিন্তু রোগী কিংবা অশিক্ষিত নন। অত্যন্ত শিক্ষিত এসব মানুষকে কোনোরকম কাজ ছাড়াই কিছু হাস্যকর কাজের জন্য নাসায় নিয়োগ দেওয়া হয় এবং সেই সাথে দেওয়া হয় মাস শেষে বেশ ভালো অঙ্কের বেতনও।
৫. মঙ্গলের মালিক
কিছুদিন আগে নাসাকে পড়তে হয় তিনজন মানুষের রোষের মুখে। তারা নাসার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে তাদের বংশগত ব্যাপারে নাক গলানো আর অনধিকার প্রবেশের। মঙ্গলগ্রহকে তিন হাজার বছর ধরে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করে ইয়েমেনের এই তিন ব্যক্তি, আর নাসাকে নিজেদের জায়গায় অনধিকার প্রবেশের জন্য আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া শুরু করে তারা। সৌজন্যে : ইত্তেফাক