Skip to content

নেই জমিদারি, দাঁড়িয়ে শুধু ইতিহাস

ঢাকা থেকে মাত্র ৪৫ মিনিটের দূরত্ব। তারপরই দেখা মিলবে ইতিহাসের একটি সময়ের। যেই সময়টায় এই প্রাসাদে প্রাঙ্গণে হাতি-ঘোড়ার বিচরণ ছিলো। আরও ছিলো ঢাল-তলোয়ারের ঝনঝনানি। দাম্ভিকতা, ঐশ্বর্য উড়ে বেড়াতো জমিদারি এলাকার আকাশে-বাতাসে। জমিদারিও ছিলো বিশাল। বলছি ভাটির শাসক, বার ভূঁইয়াদের প্রধান ঈশা খাঁ’র শাসনামলের কথা। এখন ঈশা খাঁ নেই। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় এখনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রাসাদ।

123

রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৭/৮ মাইল দূরেই অবস্থিত সোনারগাঁও। যেখানে ছিলো ভাটির শাসক ঈশা খাঁ’র জমিদারির কেন্দ্রস্থল। বার ভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈশা খাঁ। আর তিনি ছিলেন একজন স্থানীয় প্রধান যিনি মোঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। ঈশা খাঁ’র জন্ম ১৫২৯ খৃস্টাব্দের ১৮ই আগস্ট। তার পিতা সোলায়মান খাঁ ছিলেন আফগানিস্তানের সোলায়মান পার্বত্য অঞ্চলের এক আফগান দলপতির বংশধর। ১৫৪৮ সালে সোলায়মান খাঁ’র মৃত্যুর পর জমিদারির দেখভালের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঈশা খাঁ। ১৫৯৭ সালে মোঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহকে পরাজিত করে আলোচনায় আসেন ঈশা খাঁ। আর তখন থেকেই সোনারগাঁওকে কেন্দ্র করে স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলার স্বাধীনতার বীজ একমাত্র ঈশা খাঁ বপন করেছিলেন।

১৭ সেপ্টেম্বর ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রায় ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানায় বক্তারপুর গ্রামে সমাহিত আছেন ঈশা খাঁ। তার মৃত্যুর পর পুত্র প্রথম বংশধর মুসা খাঁ বাংলার ভাটি অঞ্চলের অধিপতি হন। বর্তমানে ঈশা খাঁ’র বাড়িটি লোকশিল্প জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে মূল প্রাসাদে এখনো সেই জৌলুস বিদ্যমান।

132মুসা খাঁ টানা ১০ বছর মোঘল বাহিনীর বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। কিন্তু বারবার পরাজয় এবং সোনারগাঁওসহ তার ঘাঁটিগুলো পতনের ফলে শেষ পর্যন্ত ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মোঘলদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য হন। মুসা খাঁ ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণে মুসা খাঁ মসজিদের সন্নিকটে তিনি সমাহিত আছেন।

১৭৭০ইং সালে তৎকালীন শাসক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সোনারগাঁও দখল করে নেয় এবং ঈশা খাঁ’র ৪র্থ ও ৫ম বংশধরদের বিতাড়িত করে। তারা ঘোড়া ও বড় বড় নৌকাযোগে বাংলাদেশের সুদূর দক্ষিণে সুন্দরবনের ধারে সাতক্ষীরা জেলা কালীগঞ্জ থানার মহৎপুর গ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ঐ স্থানে যাওয়ার পর বংশধররা তাহাদের নিয়ে যাওয়া মোহর দিয়ে অনেক ভূমি খরিদ করেন এবং নতুনভাবে ইমরাত তৈরি করেন। সেই সময় হইতে খাঁ বাড়ী বলে পরিচিত। ঈশা খাঁ’র ১০ম বংশধর নাসিমা সুলতানা রত্না ঈশা খাঁ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। সূত্র : সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *