Skip to content

নেপালে ভূমিকম্প কেন?

‘১০ ফুট ফাটল দেখা দিয়েছে যা কাঠমাণ্ডুর নিচ দিয়ে ৭৫ মাইল চলে গেছে। ভূমিকম্পটি পুরো শহরকে দক্ষিণ দিকে ১০ ফুট সরিয়ে দিয়েছে।’

‘১০ ফুট ফাটল দেখা দিয়েছে যা কাঠমাণ্ডুর নিচ দিয়ে ৭৫ মাইল চলে গেছে। ভূমিকম্পটি পুরো শহরকে দক্ষিণ দিকে ১০ ফুট সরিয়ে দিয়েছে।’

দুই হাজার পাঁচশত কোটিরও বেশি বছর আগে, পৃথিবীর একটি খণ্ড দ্বীপ ভারত যুক্ত হয় এশিয়ার সাথে। এই দুই ভূখণ্ডের এখনও সংঘর্ষ চলছে। এটি বছরে ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি গতিতে ধাক্কা দিচ্ছে। এই ধাক্কা হিমালয়ে পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ সৃষ্টি করেছে এবং তা-ই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা কাঠমান্ডুর মানুষদেরকে এই বিপদের বিষয়ে কয়েক দশক ধরে সতর্ক করে আসছেন। শনিবার নেপালে মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি বাস্তবিকভাবেই অনিবার্য ছিল। স্থানীয় ভূতাত্ত্বিক পরিস্থিতি এই ঝাকুনিকে খারাপ পর্যায়ে নিয়ে গেছে এবং ভবনগুলোর দুর্বল নির্মাণ ভিত্তি এই ঝাকুনিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম ছিল না।
ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের অলাভজনক সংস্থা জিও হ্যাজার্ডস ইন্টারন্যাশনাল গরীবদের সাহায্য করার ও নেপালের মত অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করে থাকে। সংস্থাটি পূর্বে সতর্ক করে বলেছিল যে, নেপালের মত এই এলাকাগুলোতে প্রতি ৭৫ বছরে বড় আকারে ভূমিকম্প আঘাত হানবে।
৮১ বছর আগে ১৯৩৪ সালে মাউন্ট এভারেস্টের ছয় মাইল দক্ষিণে পূর্বাঞ্চলীয় নেপালে ৮.১ মাত্রার বিশাল ভূমিকম্পে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। ১৯৮৮ সালে এটা অপেক্ষা ছোট ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। জিও হ্যাজার্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ব্রেইন টাকার বলেন, ১৯৯০ এর দশকে তার সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিল যে, যদি ১৯৩৪ সালের মত ভূমিকম্প আবার হয়, তাহলে ৪০ হাজার মানুষ মারা যাবে। কারণ মানুষ শহরমুখী হয়েছে যেখানে সুউচ্চ ও দুর্বলভাবে নির্মিত ভবনগুলো ধ্বসে পড়তে পারে।
Nepal2এই মাসেই এক লেখায় জিও হ্যাজার্ড লিখেছে, ‘কাঠমান্ডুতে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ এবং এটি বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এই উপত্যকায় বসবাসকারী ১৫ লাখ মানুষ ক্রমবর্ধমান ও মারাত্মক ভূমিকম্প ঝুঁকির সম্মুখীন। দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার জন্য সংস্থাটি বিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোকে আরো টেকসই করার জন্য সাহায্য করে। শনিবারের ভূমিকম্প কাঠমান্ডুর উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় নয় মাইল তথা তুলনামূলক কম গভীরতায় সংঘটিত হয়। যেটা ভূখণ্ডে বৃহত্তর ঝাঁকুনির কারণ। কিন্তু ৭.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্প থেকে দূর্বল ছিল।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক রজার বিলহাম এই অঞ্চলের ভূমিকম্পের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পটি এক থেকে দুই মিনিট স্থায়ী ছিল এবং এখানে ১০ ফুট ফাটল দেখা দিয়েছে যা কাঠমাণ্ডুর নিচ দিয়ে ৭৫ মাইল চলে গেছে। ড. বিলহাম বলেন, ভূমিকম্পটি পুরো শহরকে দক্ষিণ দিকে ১০ ফুট সরিয়ে দিয়েছে।
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *