:: সাদ্দাম হোসেন ::
রাসমেলা দেখব বলে দুবলার চরের পথে পা বাড়িয়েছিলাম। খুলনা থেকে প্রায় ছয় ঘণ্টা লঞ্চে যাওয়ার পর চরে পৌঁছালাম ১ নভেম্বর। সুন্দরবন-লাগোয়া দুবলার চরের বালুতে পা ফেলার আগেই নাকে এল শুঁটকির গন্ধ। ঘণ্টাখানেক পর অবশ্য উৎকট গন্ধ নাক-সওয়া হয়ে গেল। রাস উৎসব আয়োজনের ফাঁকেই জেলে গ্রাম ঘুরে বেড়ানো। অস্থায়ী এই গ্রামটি তখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। ঘর তৈরির কাজ চলছে। কেউ কেউ বানাচ্ছেন মাছ শুকানো চাতাল, গড়ে উঠছে দোকান, হোটেল, উপাসনালয়সহ জীবনযাত্রার সবকিছুই। গ্রামের বাসিন্দারা এই চরে থাকবেন মাস পাঁচেক। এ সময় বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু গড়ে নিচ্ছেন নিজেদের মতো। এবার মৌসুম শুরু হয়েছে ২৩ অক্টোবর, ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরদিন।
চরের জেলে, মাছশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা খুলনা, যশোর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। এখানে সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত, কথা বলার সময় নেই কারও যেন। ভোর থেকেই তুমুল ব্যস্ততা শুরু হয় তাদের। ট্রলারে মাছ ধরে নিয়ে আসেন জেলে। এরপর তা নদীর পানিতেই ধুয়ে আলাদা করা হয়। নানা জাতের মাছ আলাদা করার পর তা শ্রমিকেরা নিয়ে যান চাতালে।
সেখানে মাছ কেটে প্রক্রিয়াজাত করে আলাদা চাতালে শুকাতে দেওয়া হয়। চার থেকে পাঁচ দিন লাগে মাছ শুকাতে। এরপর ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান।
কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক শ্রমিক আটজনের দলের সঙ্গে এসেছেন। তাঁর বাড়ি খুলনার পাইকগাছায়। তাঁর কাছেই জানা গেল, প্রতি দলে ৮ থেকে ১০ জন করে থাকেন তাঁরা। গ্রামে জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী মিলে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন এই সময়টায়। প্রত্যেক জেলে এই পাঁচ মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় করেন। সৌজন্যে : প্রথম আলো