সেই কবে কবি আল মাহমুদ তার এক কবিতায় পাখি হতে চেয়ে বলেছিলেন, ‘তোমরা যখন শিখছ পড়া মানুষ হওয়ার জন্য/ আমি না হয় পাখিই হব পাখির মত বন্য।’
কিন্তু কবি তো তখন জানতেন না পাখিদেরও যে কত কষ্ট। তাদের খাঁচায় বন্দী করে শিকারীরা। আর সেসব বন্দী পক্ষীদের নিয়ে ব্যবসা করে অর্থলোভী ব্যবসায়িরা। সেই পাখিদের দুঃখে কাতর হয়েই কীনা শনিবার অভিনব এক রুল জারি করেছে দিল্লি হাইকোর্ট।
আদালত বলেছে, মর্যাদার সাথে বসবাস করার অধিকার রয়েছে পাখিদেরও। তাদেরকে স্বাধীনভাবে আকাশে উড়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। বন্দি করে এদের নিয়ে ব্যবসা করা পাখিদের অধিকার লঙ্ঘনেরর সামিল।
এ বিষয়ে বিচারপতি মনমোহন সিং পাখিদের দুর্দশা বর্ণনা করে বলেছেন, তাদের খাদ্য, পানি আর চিকিৎসা ছাড়াই অবৈধভাবে বিদেশ পাচার করা হয়ে থাকে। এটি তাদের মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, স্বাধীনভাবে আকাশে উড়া পাখিদের মৌলিক অধিকার। ব্যবসা বা অন্য কোনো উদ্দেশে তাদেরকে খাঁচার বন্দি করে রাখার কোনো অধিকার মানুষের নেই।
অবশ্য ভারতের এই রুল জারি একদিনেই হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই বেশকিছু বেসরকারি সংস্থা পাখিদের অধিকার প্রশ্নে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই এক পর্যাযে ‘পিপল ফর অ্যানিমেল’ নামের এক এনজিও’র দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে এ রুল জারি করে দিল্লি হাইকোর্ট। এই বেসকারি সংস্থাটি মোয়াজ্জেম নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাখিদের খাঁচাবন্দি করে রাখাকে চ্যালেঞ্জ করে ওই মামলা দায়ের করেছিল।
শনিবার রুল জারি করার সময় দিল্লি পুলিশ এবং ওই পাখিপালকের প্রতি নেটিশ পাঠিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। চলতি মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মনমোহন সিংয়ের জারিকৃত রুল জারি করার সময় আরো বলেছেন, পাখিদেরও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। তারা কারো নির্মমতার শিকার হতে পারে না। তাই তাদের খাঁচাবন্দি করে রাখা যাবে না। তাদের স্বাধীনভাবে আকাশে উড়ার সুযোগ দিতে হবে।