Skip to content

পাখির অভয়ারণ্য হবে শেখ রাসেল ইকোপার্ক

গোলাম রাব্বানী
পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্ক। এটি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা বন বিটের হোসনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় কাপ্তাই সড়কের পাশ ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে। পাহাড় ও সমতলের প্রায় ৫২০ একর এলাকাজুড়ে এই পার্কের অবস্থান।

২০১০ সালের ৭ আগস্ট ব্যতিক্রমী এ পক্ষিশালার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। আর ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৪০ কোটি ৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

Rasel Eco Parkপ্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পার্কে আরও দেশি ও বিদেশি পাখি সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিরল ও বিপন্নপ্রায় পাখি সংরক্ষণ করার বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। চলমান এ প্রকল্পের নতুন নতুন পাখি সংগ্রহসহ পার্কে পাখির উপযোগী বাগান তৈরি ও পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে চিত্তবিনোদনমূলক ভৌত অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্প সুপারিশে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বলেছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির নিরাপদ আবাসস্থল সৃষ্টি হবে। দেশের বিরল এবং বিপন্নপ্রায় প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ হবে। অতিথি পাখির অভয়ারণ্য সৃষ্টি হবে এবং পর্যটন পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

এই পার্কে বাবুই, দোয়েল, শ্যামা, শালিক, ঈগল, শকুন, বুলবুলি, পেঁচা, হলদে পাখি, টুনটুনি, টিয়া, ঘুঘু, মাছরাঙা, সাদা বকের মতো বিলুপ্তপ্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হয়েছে। দেশি প্রজাতির পাখির পাশাপাশি এই পক্ষিশালায় যুক্ত হয়েছে আফ্রিকার পলিক্যান, সোয়ান, রিং ন্যাক, ইলেকট্রাস প্যারট, ম্যাকাওসহ বিভিন্ন বিদেশি পাখি। এ ছাড়া প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে আরও নতুন নতুন পাখি সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রকৃতিপ্রেমীদের মন জুড়াতে একেবারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকোপার্ক।

এ পার্কে নতুন করে ক্যাবলকার সংযোজন করার পর থেকে চট্টগ্রামের পর্যটন সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। পার্কের উপরে যেমন দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ, নিচে দৃষ্টিনন্দন লেক আর সবুজ অরণ্য। ঠিক এই দুয়ের মাঝখানে ভূমি থেকে প্রায় ২০০ ফুট উচ্চতায় বসে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া যায়। বাতাসের ওপর ভেসে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এই পার্কে।

এই পার্কে ভেষজ ও অন্যান্য প্রায় ৭১ হাজার নানা প্রজাতির গাছ ও ৩০ হাজার সৌন্দর্যবর্ধক গাছ রোপণ করা হয়েছে। পার্কের চারপাশে এক ধরনের বিশেষ নেট দিয়ে পুরো ৫২০ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রয়েছে রেস্টহাউস, ঝুলন্ত সেতু, আধুনিক রেস্তোরাঁ, লেক, হেলানো বেঞ্চ, ওয়াচ টাওয়ার এবং শিশুদের সময় কাটানোর বিনোদনের ব্যবস্থা। এ ছাড়াও রয়েছে হরিণ বিচরণক্ষেত্র ও কুমির প্রজনন ক্ষেত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণিজগৎ সম্পর্কে গবেষণায় সহায়তার জন্য রয়েছে গবেষণা কেন্দ্র।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কপথে বাসে চেপে এক ঘণ্টার মধ্যে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্কে সহজেই পৌঁছা যায়। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *