Skip to content

পাখির কাকলি শুনে কেটে যায় রাত

অবাধে বন উজাড় আর শিকারীদের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে নানা জাতের পাখি। মানুষ চিরকালই সৌন্দের্যের পূজারী। সৌন্দর্য-পিপাসু মানুষের অদম্য উত্সাহ এখন হাওর-বেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা কম্পাউন্ডের গাছপালা। গত এক দশক ধরে নাসিরনগর থানা চত্বরের গাছে আশ্রয় নিয়েছে নানারকম পাখি। পাখিদের ডাকে মুখরিত হয়ে উঠে আশেপাশের এলাকা। পুলিশ প্রহরা আর শিকারী-মুক্ত নিরাপদ পরিবেশ পেয়ে থানার গাছগাছালিতে পাখির অভয়াশ্রম গড়ে উঠেছে। এ অবস্থায় পুলিশও তাদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে। দিনের শেষে মানুষেরা যেমনটি হয় ঘরমুখী তেমনি আপন নীড়ে ফিরতে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে পাখিগুলো। মানুষের সাথে পাখির ভালবাসার চিত্র ফুটে উঠেছে নাসিরনগর থানা চত্বরে।

Nasirnagar

উপজেলায় শাপলা ও মেদির হাওর ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য বিল ও নদী। বর্ষা মৌসুমে এসব জলাশয়ে মাছ, ব্যাঙ ও শামুকসহ প্রাকৃতিক খাবারের উত্স থাকায় পাখিদের অবাধ বিচরণ রয়েছে পুরো এলাকা জুড়ে। ঘুঘু, সাদা বক, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, ডাহুক, মাছরাঙা, শামুকখোলসহ নাম না জানা অনেক পাখি হাওরে চষে বেড়াচ্ছে। এদের একটি অংশ পানকৌড়ি ও বক জাতীয় কয়েক প্রকারের পাখি নিরাপদ আবাস্থল হিসেবে নাসিরনগর থানা কম্পাউন্ডারের গাছপালাকে বেছে নিয়েছে। মূল গেট থেকে শুরু করে পূর্ব পাশের ওসির বাসভবনের পাশ দিয়ে সারিবদ্ধভাবে রয়েছে অনেক গাছ। আর এই গাছগুলোই হয়ে উঠেছে পাখিদের আশ্রয়। ওসি ও পুলিশ সদস্যরা পাখিদের অতিথির মর্যাদায় আপন করে রেখেছেন। ভোর হওয়ার সাথে সাথে খাবারের সন্ধানে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে গেলেও বেলাশেষে আবার তারা আকাশজুড়ে আশ্রমে ফিরে আসে।

(ওসি) মো. আবদুল কাদের জানান, পাখি আমাদের থানা কম্পাউন্ডকে সুন্দর করে তুলেছে। পাখির কলকাকলীতে ঘুম ভাঙে আমাদের। কেউ যাতে পাখিদের ক্ষতি না করতে পারে সেজন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয়দের নিয়ে পাখি সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া পাখিদের আশ্রয়স্থলটি নিরাপদ করতে ও তাদের যাতে কেউ বিরক্ত না করে সেজন্য থানা এলাকায় পাখি থাকাকালে কঠোর নজরদারি থাকে পুলিশের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, হাওর ও জলাশয়ে প্রাকৃতিক খাবারের ভাল উত্স থাকায় এ উপজেলায় পাখির অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার সাঁজ বেলায় নাসিরনগর থানায় গিয়ে দেখা যায় পাখিদের ছুটাছুটি আর কলকাকলি। হাজারো পাখির মিলনমেলা। পানকৌড়ির সংখ্যাই বেশি। এ পাখির রাজ্যে গেলে যে কারও মন পুলকিত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমেদ বলেন, একসময় বিভিন্ন খাল-বিল ও মাঠেঘাটে প্রচুর পানকৌড়ি, ডাহুক ও বকসহ নানা জাতের দেশীয় পাখির অবাধ বিচরণ ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় পাখির কয়েকটি জাত বিলুপ্তির পথে। ঝাঁকে ঝাঁকে বক আর পানকৌড়ির বসবাস এখন আর দেখা যায় না। সূত্র : ইত্তেফাক, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *