রেদোয়ান হাসান
ঝরনা দেখেছেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে অনেকই। কিন্তু মাটির নিচে ঝরনা কয়জন দেখেছেন? অদ্ভুত এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আপনাকে যেতে হবে আমেরিকার টেনেসিতে। সেখানকার লুকাউট পাহাড়ের ভেতরে এক হাজার ১২০ ফুট নিচে রয়েছে এই ঝরনা। নাম রুবি ঝরনা, যিনি এটি খুঁজে পান, তাঁর স্ত্রীর নামে নামকরণ করা হয় এর। একটি গুহার একেবারে শেষে রয়েছে এই রুবি ঝরনা। অনেক অনেক বছর আগে চুনাপাথর ক্ষয় হয়ে হয়ে এই ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। ঝরনার পানির ধারার মূল উৎস বৃষ্টির পানি আর প্রাকৃতিক ঝরনা। এসব উৎসের পানি এক হয়ে প্রপাত দিয়ে ১৪৫ ফুট নিচে পড়ে এবং একটি জলাধার তৈরি করে। এই পানি পাহাড়ের ভেতর দিয়ে বয়ে চলে শেষমেশ টেনেসি নদীতেই পড়ে। নদীটির অবস্থান একেবারে লুকাউট পাহাড়ের পাদদেশেই।
এবার ঝরনাটি আবিষ্কারের ইতিহাস জেনে নেয়া যাক। ১৯২৮ সালে খনন কাজের সময় এক অদ্ভুত আবিষ্কার করেন লিও ল্যামবার্ট নামের এক লোক ও তাঁর দল। প্রথমে তাঁরা দেখতে পান একটি সরু পথ। ল্যাম্বার্ট ও তাঁর লোকজন এই সরু পথ ধরে এগিয়ে গিয়েই আবিষ্কার করেন গুহার মধ্যে বয়ে চলা এক পানির ধারা। গুহা ধরে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে শেষ পর্যন্ত দেখা মেলে আশ্চর্য সুন্দর এক ঝরনার। এই অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে থ হয়ে যান ল্যাম্বার্ট ও তাঁর সঙ্গীরা। পাহাড়ের এত গভীরে একটা ঝরনা লুকিয়ে থাকতে পারে, কল্পনাও করেননি তাঁরা। যদিও দেরি করেননি বাইরে এসে খবরটি প্রচার করতে। পরেরবার যাওয়ার সময় স্ত্রীকে নিয়ে যান ল্যাম্বার্ট এবং সিদ্ধান্ত নেন, ঝরনাটির নাম হবে তাঁর স্ত্রীর নামেই। তখন থেকেই রুবি ঝরনা নামই চলছে।
পরে এই ঝরনা ও পাহাড়ের ভেতরের চুনাপাথরের অদ্ভুত বিন্যাস পর্যটকদের দেখার ব্যবস্থা করেন ল্যাম্বার্ট। বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করলেন এই ঝরনার কথা জানতে পেরে। একসময় মানুষের উৎসাহে ভাটা পড়ে। ১৯৩৫ সালের দিকে অব্যবহারে বন্ধ হয়ে যায় গুহাগুলো।
পরে এখানে বৈদ্যুতিক বাতি লাগানো হয়, লাগানো হয় লিফট। এখন এই ঝরনা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। তবে এর জন্য দর্শনী গুনতে হয় ১৮ ডলার বা প্রায় এক হাজার ৪০০ টাকা। সূত্র : কালের কণ্ঠ