Skip to content

পাহাড়চূড়ার বিস্ময়

রেদোয়ান হাসান
পাহাড়ের একেবারে কিনারে প্রায় সাগরে ঝুলে থাকা দুর্গটির দিকে তাকালে চোখ ফেরাতে পারবেন না। আবাবিলের ঘর নামে পরিচিত দুর্গটি রাশিয়ার ক্রিমিয়ার অরোরা পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় তৈরি করা হয়েছে। গাস্প্রা শহর থেকে একটু বাইরে অবস্থিত এই প্রাসাদদুর্গ যেন রাশিয়ার পুরনো ঐতিহ্যের কথাই আমাদের মনে করিয়ে দেয়।

Ababiler-Ghar

আগে দুর্গের জায়গাটিতে ছিল একটি কুটির। গ্রীষ্মকালীন নিবাস হিসেবে রাশিয়ার এক জেনারেলের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ১৮৯৫ সালের দিকে। কয়েক বছর পর এর মালিক হন এ কে টবিন নামের এক চিকিৎসক। রাশিয়ার জার শাসকদের সময় আদালতের ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন ভদ্রলোক। যদিও কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারও নতুন মালিক পায় ঘরটি। এবার মালিক ব্যারন ভন স্টিএঙ্গেল। আজারবাইজানের বাকুতে তেলের ব্যবসা করে প্রচুর অর্থকড়ির মালিক হন এই ব্যারন। ঘরটি পুরোপুরি ধ্বংস করে নব্য মধ্যযুগের প্রাসাদের আদলের এই প্রাসাদ তৈরি করেন তিনি। স্থপতি রাশিয়ান লেওনিড শেরউড।

আবাবিলের ঘর কিন্তু অত বড় না, লম্বায় ২০ মিটার আর ১০ মিটার চওড়া। এতে আছে বড় হলওয়ে, অতিথি কক্ষ। দুটি শোবার ঘর আছে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চতায়। দুর্গটি এমনভাবে তৈরি যেন এর বারান্দা এবং উঠানের অংশবিশেষ বাইরের দিকে একটু ঝুলে থাকে। এ কারণে এটি দেখে যে কারো মনে হতে পারে, এই বুঝি যেকোনো সময় ক্রিমিয়া সাগরে ঢলে পড়বে। যদিও বহু বছর ধরেই বহাল তবিয়তেই আছে এটি। শুধু তা-ই নয়, ১৯২৭ সালে বেশ বড় রকমের এক ভূমিকম্পের ধকলও সামলে নিয়েছে। তবে এতে দুর্গের ক্ষতি না হলেও নিচের পাথরে এক বিশাল ফাটল দেখা দেয়। তাই নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা ভেবে প্রায় ৪০ বছর জনসাধারণের জন্য তা বন্ধ রাখা হয়।

১৯৬৮ সালে প্রথম সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রকৌশলীরা বুদ্ধি করে ফাটলটা কংক্রিট দিয়ে ভরাট করে দিলে হঠাৎ ধসে পড়ার আশঙ্কামুক্ত হয় দুর্গটি। ১৯৭৫ সাল থেকে একটি ইতালিয়ান রেস্তোরাঁ দুর্গটি ব্যবহার করছে। রাশিয়ার অনেক সিনেমাই চিত্রায়িত হয়েছে এখানে। আর দুর্গটিকে এক নজর দেখতেও বহু পর্যটক হাজির হন অরোরা পাহাড়ে। সূত্র : কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *