Skip to content

পাহাড় আমায় ডাকে

পাহাড় ডাকে? তাহলে চলুন কেওক্রাডং, সাজেক ভ্যালি, নীলগিরি, নীলাচল, বিরিশিরি। যাওয়ার রাস্তা, খরচ, পেটপূজাসহ সব আয়োজনের খবর জানাচ্ছেন বাবর আলী

Keokaradong

কেওক্রাডং

এ দেশের অনেক ট্রেকারেরই ‘পায়ে খড়ি’ কেওক্রাডং পাহাড়ের চূড়ায় উঠে। অনেক নথিপত্রে এ চূড়াকে দেশের উচ্চতম বা দ্বিতীয় উচ্চতম পাহাড়চূড়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়। উচ্চতা তিন হাজার ১৭২ ফুট। কেওক্রাডংয়ের চূড়া থেকে চারপাশের পাহাড় ও পাহাড়ের রেঞ্জগুলোর অসাধারণ ভিউ পাওয়া যায়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেশের সুউচ্চ সব পাহাড়ের দেখা মেলে কেওক্রাডংয়ের চূড়া থেকে।

যেতে চাইলে

প্রথমেই বান্দরবান যেতে হবে। সেখান থেকে বাস অথবা চান্দের গাড়িতে রুমাবাজার। রুমাবাজার থেকে আবার চান্দের গাড়িতে চেপে বগালেক। সেখান থেকে বাকি পথটুকু ট্রেক করে যেতে হবে।

থাকা-খাওয়া

বগা লেক ও কেওক্রাডংয়ে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। রাতে থাকতে জনপ্রতি ১০০ টাকা খরচ হবে। প্রতিবেলা খাবার খেতেও সমপরিমাণ টাকা গুনতে হবে।

Hill2

বিজয়পুরের সাদা মাটির পাহাড়

পুরোপুরি সবুজ পানির একটা হ্রদ আর তার তলদেশ থেকে সাদা চুনাপাথরের একটা পাথুরে দেয়াল সটান উঠে গিয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। চুনাপাথরের দেয়ালের খাঁজজুড়ে আবার গোলাপি রঙের আভা। মাথার ওপর দিগন্তজোড়া ঝকঝকে নীল আকাশ। এত সব রঙের সমাহারে নিজের মনটাকে রাঙাতে হলে ছুটে যেতে হবে নেত্রকোনার বিজয়পুরে। এখানেই চীনামাটির পাহাড়ের সারি। সাদা মাটির পাহাড়টা বেয়ে ওপরের দিকে উঠলে দেখা মেলে আরো কয়েকটি সবুজাভ বা নীল পানির পুকুর। আকারে অবশ্য সেগুলো বেশ ছোট।

যেতে চাইলে

ঢাকার মহাখালী থেকে বিআরটিসি, জিনাত, সরকার ইত্যাদি পরিবহনের বাস সরাসরি বিরিশিরি যায়। বিরিশিরি নেমে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল কিংবা রিকশায় বিজয়পুরের সাদা মাটির পাহাড় দেখতে যেতে পারেন। রিকশায় খরচ পড়বে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আর মোটরসাইকেলে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।

থাকা-খাওয়া

বিরিশিরিতে থাকার জন্য ওয়াইডাব্লিউসিএ গেস্ট হাউস, হোটেল গুলশানসহ কয়েকটি হোটেল-গেস্ট হাউস আছে। ভাড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা। বিরিশিরি বাজারের হোটেলগুলোতে খাওয়াদাওয়া সারতে পারেন।

Sajek3

সাজেক ভ্যালি

খুব সহজেই, অল্প পরিশ্রমে পাহাড় আর মেঘের মেলবন্ধন দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন হালের ক্রেজ সাজেক ভ্যালি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্ববধানে এখানে একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। থাকার জন্য বেশ কয়েকটি রিসোর্ট আছে। হেলিপ্যাড, ছাউনিসহ আরো বেশ কিছু ব্যবস্থা আছে। সময় নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন সাজেক ভ্যালির কাছেই অবস্থিত রুইলুইপাড়া ও অল্প দূরের কংলাকপাড়া।

যেতে চাইলে

সাজেক ভ্যালি রাঙামাটিতে হলেও এখানে খাগড়াছড়ি হয়ে যাওয়াটাই ভালো। ঢাকা থেকে প্রথমে খাগড়াছড়িতে আসতে হবে। এখান থেকে বাসে অথবা সিএনজিতে চেপে উপজেলা শহর দীঘিনালায় যেতে ঘণ্টাখানেক লাগে। সেখান থেকে চান্দের গাড়ি অথবা মোটরসাইকেলে সাজেক। সময় লাগবে তিন ঘণ্টা। আসা-যাওয়া মিলিয়ে চান্দের গাড়ির ভাড়া পড়বে তিন থেকে চার হাজার টাকা।

থাকা-খাওয়া

সাজেক ভ্যালিতে থাকার জন্য বেশ কিছু রিসোর্ট আছে।

Hill3

নীলগিরি

বান্দরবান শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে কাফ্রুপাড়ার কাছে নীলগিরিকে পর্যটকরা আদর করে ডাকেন ‘মেঘের বাড়ি’। খুব ভোরে এবং শেষ বিকেলে নীলগিরি হিল রিসোর্টের সুদৃশ্য কটেজগুলো দূর থেকে দেখলে মনে হয় মেঘের ওপর ভেসে আছে কয়েকটা ছড়ানো-ছিটানো সাজানো ঘর। সেনাবাহিনী পরিচালিত এই হিল রিসোর্টে কটেজ ছাড়াও আছে হেলিপ্যাড, সুদৃশ্য বাগান এবং পর্যটকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অনেক আসন।

যেতে চাইলে

নীলগিরি যেতে চাইলে ঢাকা থেকে বাসে প্রথমেই আসতে হবে পার্বত্য শহর বান্দরবানে। সেখান থেকে বাস অথবা চান্দের গাড়িতে নীলগিরি। রিজার্ভে চান্দের গাড়িতে আসা-যাওয়া মিলিয়ে খরচ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। একটা চান্দের গাড়িতে বড়জোর ১৪ জন যাত্রী ধরে। বাসে যেতে চাইলে থানচি বাসস্ট্যান্ড থেকে থানচির বাসে চেপে নেমে পড়তে হবে নীলগিরিতে। ভাড়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। থানচি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টা অন্তর বাস থানচির উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

থাকা-খাওয়া

নীলগিরিতে থাকার জন্য আছে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক রিসোর্ট। তবে এসব কটেজে থাকতে চাইলে তিন-চার মাস আগেই বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। সেনাবাহিনীতে কর্মরত কর্মকর্তার রেফারেন্স থাকলে বুকিং দিতে সুবিধা হয়।

Hill4

নীলাচল

পাখির চোখে বান্দরবান শহরটা একনজরে দেখতে চান? খানিক পর পর বাঁক নেওয়া পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথের সৌন্দর্য উপভোগ করবেন? সোজা চলে যান বান্দরবান শহরের অদূরে নীলাচল পাহাড়ে। এখান থেকে পাহাড়ের বুক চিরে সর্পিল গতিতে এগিয়ে চলা সাঙ্গু নদীরও দেখা পাবেন। নীলাচলে গেলে সূর্যাস্ত দেখা কিন্তু কোনোভাবেই মিস করা যাবে না। দিগন্তছোঁয়া পাহাড়ের আড়ালে সূর্যের লালিমা ছড়িয়ে ডুব দেওয়ার দৃশ্যটা মনে থাকবে অনেক দিন। নীলাচলে একটি পর্যটনকেন্দ্র আছে।

যেতে চাইলে

ঢাকা থেকে বাসে বান্দরবান শহরে। সেখান থেকে মাহেন্দ্রতে (এক ধরনের সিএনজিচালিত অটোরিকশা) নীলাচল। আসা-যাওয়ায় খরচ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। থাকা-খাওয়া নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে থাকার জন্য সুদৃশ্য কটেজ আছে। রাতে থাকতে দুই থেকে তিন হাজার টাকা গুনতে হবে।

থাকা-খাওয়া

এখানে খাওয়াদাওয়ার সুব্যবস্থাও আছে। বান্দরবান শহরে থেকেও নীলাচল ঘুরে আসতে পারেন। শহরে হোটেল রিভার ভিউ, হোটেল ফোর স্টার, প্লাজা হোটেল, গ্রিন হিল ইত্যাদি হোটেল আছে। এগুলোতে রাতযাপনের খরচ ৩০০ থেকে তিন হাজার টাকা। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *