বাংলাদেশের পুরনো ঢাকায় আজ শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব যাকে পৌষ সংক্রান্তি বা ঘুড়ি উৎসব বলেও বর্ণনা করা হয়। তবে বাংলা ক্যালেন্ডার এবং পঞ্জিকা তারিখের সঙ্গে কিছুটা পার্থক্যের কারণে অনেকে আগামীকালও এই উৎসবটি পালন করবেন। বলা যায়, পুরনো ঢাকার আকাশ আজ থাকবে ঘুড়িওয়ালাদের দখলে।
আগে এ উৎসবটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরান ঢাকায় সাড়ম্বরে পালিত হয় এ দিনটি। উৎসবে অংশ নেন সব ধর্মের সব বয়সী মানুষ।

ঘুড়ি উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আগুন নিয়ে খেলা।
পুরনো ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এ উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ান। আয়োজন করেন গানবাজনাসহ নানা খাবারের। এছাড়া সন্ধ্যায় আগুন নিয়ে খেলা, আতশবাজী ফোটানো এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। ছাদের উপর চলে গানবাজনা আর খাওয়া-দাওয়া। সে সঙ্গে আনন্দের উত্তাপকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দেয় ঘুড়ির কাটাকাটি খেলা।
উৎসবকে মাথায় রেখে টানা এক সপ্তাহ পুরনো ঢাকার বায়ান্নো রাস্তা তেপান্নো গলির অধিকাংশ গলিতে আর খোলা ছাদে হয়েছে সুতা মাঞ্জা দেওয়ার ধুম। রোদে সুতা শুকানোর কাজও চলেছে পুরোদমে।

উৎসবের সন্ধ্যায় ফানুশও ওড়ানো হয় প্রত্যেকটি ছাদ থেকে।
পুরোনা ঢাকার বাসিন্দা বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশন ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আলমগীর শিকদার বলছিলেন “পুরনো ঢাকার ঘুড্ডি উৎসবটি শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমল থেকেই। তখন উৎসবটি সনাতন ধর্মের মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল আর এখন বাংলাদেশের সব মানুষ এই উৎসব পালন করেন”।
পুরনো ঢাকার ছেলেমেয়ের সারা বছর এই ঘুড়ি উৎসবের অপেক্ষায় থাকে। চাটকা, চশমা, চোখবাজি ইত্যাদি বিভিন্ন নামের ঘুড়ি উড়ায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

চাটকা, চশমা, চোখবাজি ইত্যাদি বিভিন্ন নামের ঘুড়ি উড়ায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
মি: শিকদার বলছেন “পুরনো আমলে গান বাজতো মাইকে, আর এখন লাউডস্পীকারে গান বাজানো হয়। আগে আমরা খিচুড়ি করতাম এখন হয়তো কেউ বিরিয়ানি রাঁধে”।
“তবে কালচারে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি, ঘুড়ির উৎসবের কায়দাটা ঠিকই বজায় আছে”-বলেন আলমগীর শিকদার। সৌজন্যে : বিবিসি বাংলা, ছবি: আফরোজা নীলা

ঘুড়ি উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আগুন নিয়ে খেলা।