Skip to content

পুরো অঞ্চলেই নববর্ষ উৎসব

বর্ষবরণে পানি খেলার প্রচলন রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশেই। হাতির শুঁড়ে পানি ছিটানোর দৃশ্যটি থাইল্যান্ডের। ছবি : সংগৃহীত।

বর্ষবরণে পানি খেলার প্রচলন রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশেই। হাতির শুঁড়ে পানি ছিটানোর দৃশ্যটি থাইল্যান্ডের। ছবি : সংগৃহীত।

ভৌগোলিক দূরত্ব অনেক, ভাষা ও সংস্কৃতিও ভিন্ন, তবু রয়েছে দারুণ সাদৃশ্য। বাংলাদেশের মানুষ যখন চলতি সপ্তাহে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করবে, তখন দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আরো অন্তত ১১টি দেশে ভিন্ন নামে নববর্ষ বরণে একই ধরনের উৎসব উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও মরিশাস।

তবে বাংলাদেশের মতো তাদের নববর্ষ পালনের আনুষ্ঠানিকতা এক দিনের নয়। বেশিরভাগ সম্প্রদায়ই তিন থেকে চার দিন ধরে উৎসবের মাধ্যমে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। সাধারণত প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ এপ্রিল দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বিভিন্ন সম্প্রদায় নিজ নিজ রীতি অনুযায়ী নববর্ষ পালন করে থাকে।

বাংলাদেশের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করে। আসামে দুই দিনব্যাপী ‘আসামি নববর্ষ উৎসব’ বা রঙ্গালি বিহু উদ্যাপিত হয়। এ ছাড়া কেরালায় মালায়ালি নববর্ষ ‘ভিসু’, ওড়িশায় ‘মহাবিষ্ণু সংক্রান্তি’ এবং কর্ণাটকে উদ্যাপিত হয় ‘বিষু’। মিয়ানমারের নববর্ষ উৎসব থিঙ্গিয়ান, কম্বোডিয়ার খেমার নতুন বছর চাওল চনাম থমে, লাওসের লাও নববর্ষ সংকান বা পি মাই লাও, নেপালের নববর্ষ বিক্রম সম্ভট/বৈশাখ এক, থাইল্যান্ডে সংকরণ এবং ভারত ও নেপালে মৈথিল্যি নতুন বছর ‘জুড়ি শীতল’ উদ্যাপন করা হয় এ সময়ই।

আসামে নতুন বছরে পদার্পণ উৎসব ‘বোহাগ বিহু’ বা ‘রঙ্গালি বিহু’ উদ্যাপন করা হয় ১৪ ও ১৫ এপ্রিল। তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব ও মনিপুরের বাসিন্দারাও ভিন্ন নামে এমন উৎসব উদ্যাপন করে। ভারত ও পাকিস্তানের বালুচ হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও এ সপ্তাহে নববর্ষ পালন করবে।

মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, এমনকি চীনের কুনমিংয়ে বর্ষবরণ উৎসবের মধ্যে অন্যতম আয়োজন হলো পানি উৎসব। স্থানীয়রা পরস্পরের গায়ে পানি ছিটিয়ে পুরনো সব জরা, গ্লানি দূর করার চেষ্টা করে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় উষ্ণতম এ মাসে পানি ছিটিয়ে পরস্পরের গা ভেজানো আশীর্বাদ ও শুভকামনা জানানোর প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে কোনো কোনো সম্প্রদায় নতুন বছর উদ্যাপনের সঙ্গে ধর্মীয় প্রার্থনাও যোগ করেছে।

মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশ তাদের নববর্ষ উৎসবের আগে কারাবন্দিদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মুক্তি দেয়। চীনের ইউনানে সংখ্যালঘু দাই নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা সাধারণত তাদের নববর্ষ উদ্যাপন শুরু করে ১৩ এপ্রিল। তিন থেকে সাত দিন ধরে এ উৎসব চলে। উৎসবের প্রথম দিন নৌকাবাইচ ও রাতে আতশবাজি পুড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় তারা। দ্বিতীয় দিন দাই সম্প্রদায়ের সদস্যরা সমবেত হয়ে নেচে-গেয়ে পরস্পরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দুর্ভাগ্য দূর করে সৌভাগ্য আনার চেষ্টা করে। উৎসবের শেষ দিন তরুণ-তরুণীরা তাদের সঙ্গীদের মধ্যে উপহার বিনিময় করে ও অভিসারে যায়। তবে এগুলোর মধ্যে পানি উৎসবই অন্য সম্প্রদায় ও বিদেশিদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।প্রতিটি সম্প্রদায় নিজস্ব রীতিতে নিজ নিজ নববর্ষ উৎসব পালন করলেও সবাই নতুন বছরে সৌভাগ্য, সমৃৎদ্ধি ও মঙ্গল প্রত্যাশা করে। সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *