Skip to content

বাংলাদেশের পাহাড়-ঝরনা

Jhonna

বর্ষায় পাহাড়ে যাওয়া মানে এক ঢিলে দুই পাখি মারা। পাহাড় দেখার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে ঝরনায় গোসল করাও হলো। আর শুধু ঝরনা দেখতে গেলেও কোনো ক্ষতি নেই। কেননা এই বর্ষাতেই তো ঝরনার আসল রূপ দেখা যায়। দেশের বাছাই করা কয়েকটি ঝরনার পথ দেখাচ্ছেন বাবর আলী

Jhonna2খইয়াছড়া
নির্দ্বিধায় সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঝরনা বলা যায় খইয়াছড়াকে। ছুটির দিনগুলোতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয় এই ঝরনায়। বৃহত্তর সীতাকুণ্ড-মিরসরাই রেঞ্জে যে অল্প কয়টা ঝরনায় সারা বছরই পানি থাকে, সেসবের মধ্যে খইয়াছড়া অন্যতম। একদিক দিয়ে এই ঝরনা বাংলাদেশের অন্য ঝরনার তুলনায় বেশ অনন্য। এই ঝরনায় রয়েছে ১২টি ধাপ। এত ধাপের ঝরনা দেশে খুব একটা নেই। এ ঝরনায় যাওয়ার পথটাও তুলনামূলক সহজ। ঝিরি ধরে ঘণ্টাখানেক হাঁটলেই ঝরনার দেখা মেলে। এটি আকারে বেশ বড়। আরো ঘণ্টাদেড়েক ওপরের দিকে এগোলে একে একে ঝরনার সব ধাপই দেখে আসতে পারবেন। আর অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা চাইলে ঝরনার শেষ ধাপের কুম (গভীর পানি, ঝরনার যে জায়গায় ঠাঁই পাওয়া যায় না), যা ‘আমতলী কুম’ নামে পরিচিত, শিকড়-বাকড় বেয়ে তার ওপর থেকেও ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।

যেতে চাইলে
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে নামতে হবে বড় তাকিয়া বাজারে। বাসের হেলপার বড় তাকিয়া বাজার না চিনলে নেমে পড়বেন মিরসরাই বাজারে। সেখান থেকে লোকাল সিএনজিযোগে সহজেই যেতে পারবেন বড় তাকিয়া বাজার। বড় তাকিয়া বাজারে নেমে সোজা পূর্বদিকে হাঁটা দিতে হবে। রেললাইন পেরিয়ে অল্পক্ষণ হাঁটলেই দেখা মিলবে ঝিরির। সেই ঝিরি ধরে ঘণ্টাখানেক এগোলেই খইয়াছড়া ঝরনা।

থাকা-খাওয়া
ডে ট্রিপের জন্য আদর্শ এই ঝরনা। ঢাকা থেকে যাওয়া-আসা মিলিয়ে মাত্র ১২০০-১৫০০ টাকার মধ্যেই এই ঝরনায় ঘুরে আসা সম্ভব। আর কেউ রাত যাপন করতে চাইলে সীতাকুণ্ড-মিরসরাই বাজারে কিছু মাঝারি মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্টে থাকা-খাওয়ার কাজ সারতে পারেন।

Jhonna3

জাদিপাই আর তলাবং
বান্দরবানের পাহাড়ের খাঁজে লুকিয়ে থাকা আরেক বিস্ময়ের নাম জাদিপাই ঝরনা। জাদিপাই পাড়া থেকে ডানদিকে খাড়া মিনিট চল্লিশেক নেমে গেলেই দেখা মিলবে এই ঝরনার। সাম্প্রতিক ভূমিধসে এই ঝরনার সৌন্দর্য কিছুটা হারালেও এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ঝরনা। ধাপে ধাপে পাথুরে ঢাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া জলরাশির সৌন্দর্য দেখতে সারা বছরই ট্রেকারদের আনাগোনা থাকে এই ঝরনায়।

জাদিপাই ঝরনা দেখার পর যেতে পারেন তলাবং ঝরনায়। সুংসাং পাড়া থেকে সরল বিস্তৃতির লাল মাটির একটা ট্রেইল এগিয়েছে থাইক্যাং পাড়ার দিকে। সেই পথ ধরে ঘণ্টাখানেক হাঁটলেই দেখা মিলবে তলাবংয়ের। আর এই পুরো যাত্রাপথে ডানপাশে চোখ ফেরালেই আপনাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য সর্বদা হাজির অনিদ্যসুন্দর কপিতাল পাহাড়। আর চোখ জুড়ানো সব জুমঘর তো আছেই। প্রাংশা আর পাংখিয়াং নামের দুটি ঝিরি এখানে এসে দুটি ঝরনায় রূপ নিয়ে মিশেছে নিচের খালে গিয়ে। এ জন্য অনেক পর্যটক একে ডাবল ফলসও বলে থাকেন (যদিও এটি প্রচলিত কোনো নাম নয়, স্থানীয় অধিবাসীরা একে তলাবং নামেই ডেকে থাকেন)। পাথুরে খাল রেমাক্রির উত্পত্তি এই ঝরনা থেকেই। পাথুরে ঢালের দুই পাশেই সগর্জনে বয়ে চলা পানির ঝরনা এই বঙ্গদেশে খুব একটা নেই।

যেতে চাইলে
জাদিপাই ঝরনা দেখতে হলে ঢাকা থেকে বান্দরবানগামী রাতের বাসে চেপে বসতে হবে। এই পথে চলাচল করে ডলফিন, শ্যামলী, এস আলম সার্ভিসসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস। ভাড়া ৬০০-৭০০ টাকা। বান্দরবান থেকে বাস বা চান্দের গাড়িতে করে আসতে হবে উপজেলা সদর রুমা। বাস ভাড়া ১০০ টাকা। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর একটি করে বাস বান্দরবান থেকে রুমাবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। সেখান থেকে পরবর্তী গন্তব্য বগা লেক। বগা লেক পৌঁছাতে পারেন দুভাবে। ঝিরিপথে হেঁটে বগা পৌঁছাতে সময় লাগে ঘণ্টা চার-পাঁচেক। আর চান্দের গাড়িযোগে বগা পৌঁছাতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। রুমাবাজার থেকে চান্দের গাড়িযোগে বগা লেক পৌঁছাতে গুনতে হবে ১৮০০-২৫০০ টাকা। বগা লেক থেকে পরের পথটুকু ট্রেক করে এগোতে হবে। ঘণ্টা তিনেক হাঁটলেই দার্জিলিংপাড়া হয়ে পৌঁছে যাবেন বাংলাদেশের পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ কেওক্রাডংয়ে। কেওক্রাডং থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত জনবসতি পাসিংপাড়া হয়ে জাদিপাই ঝরনা পৌঁছাতে সময় লাগবে আরো ঘণ্টা দেড়েক।

আর তলাবং ঝরনা দেখার রুট হবে অনেকটা এমন—বগা লেক-দার্জিলিংপাড়া-কেওক্রাডং-পাসিংপাড়া-সুংসাংপাড়া-তলাবং।

থাকা-খাওয়া
জাদিপাই যাত্রাপথে প্রথম রাতটা কাটাতে পারেন বগা লেকপাড়ায়। এখানে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। সিয়াম দিদি কিংবা লারামের দোতলা কাঠের বাড়িগুলোতে থাকতে গুনতে হবে জনপ্রতি ১০০ টাকা। এখানে ডিম ভাজি-আলু ভর্তাসমেত খিচুড়ি মিলবে ১০০ টাকায়। পরের দিন জাদিপাই ঝরনা দেখে এসে রাতটা কাটাতে পারেন পাসিংপাড়া কিংবা কেওক্রাডংয়ে। দুই জায়গায়ই ১০০ টাকার বিনিময়ে রাতে থাকতে পারবেন। পাহাড়ি মুরগির ঝোল দিয়ে ধোঁয়া ওঠা জুমের চালের ভাত খেতে পারবেন শ-খানেক টাকার বিনিময়েই। যে জায়গায়ই থাকুন না কেন, সকালে উঠে ঢুলুঢুলু চোখে পায়ের নিচে মেঘের সমুদ্র দেখাটা কিন্তু এককথায় নিশ্চিত।

জাদিপাই ঝরনার পর রওনা দিতে পারেন তবালং ঝরনার উদ্দেশে। ঝরনা দেখে পরের রাতটা কাটাতে পারেন সুংসাংপাড়ায় রবার্ট বমের ঘরে। পাড়া থেকে চাল-তরকারি সংগ্রহ করে রান্না করতে হবে নিজেদেরই। ১০০ টাকায়ই থাকার বন্দোবস্ত হয়ে যাবে এখানে।

ঢাকা থেকে চার-পাঁচজনের দলের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া আর গাইড খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হবে।

Jhonna5

নাফাকুম
চারপাশে দিগন্তছোঁয়া সব পাহাড়ের সারি। সে সবের মধ্য দিয়ে সর্পিল গতিতে এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলেছে পাহাড়ি খাল রেমাক্রি। উহ্লাচিংপাড়ার কাছে এসে রেমাক্রি খালের বিশাল জলরাশি ২০-২৫ ফুট ওপর থেকে বিশাল এক ঝাঁপ দিয়ে নিয়েছে ঝরনার রূপ। ঝরনাটাই এখানে ‘নাফাকুম’ নামেই পরিচিত। নাফাকুমের উচ্চতা খুব বেশি না হলেও এটি বেশ প্রশস্ত। ঝরনার কাছে ভিড়তেই বাতাসে উড়তে থাকা জলকণা মুখে বুলিয়ে দেয় আলতো পরশ। সে পরশে পিচ্ছিল পাথুরে খাল ধরে টানা আড়াই-তিন ঘণ্টা হাঁটার ক্লান্তি উবে যায় নিমিষেই। একটু ঘুরে নাফাকুমের ওপরের দিকে গেলেই দেখা মিলবে বেশকিছু প্রাকৃতিক বাথটাবের। কিছুটা সময় সেখানেই কাটিয়ে দিতে পারেন অথবা কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে ঝরনার নিচের জলরাশিতে ঝাঁপিয়েও পড়তে পারেন। তবে বর্ষাকালে অবশ্যই নয়, তখন স্রোত খুব বেশি থাকে। হাতে যদি আরো দুদিন অতিরিক্ত সময় থাকে, তবে রেমাক্রি খাল ধরে হেঁটে পা বাড়াতে পারেন এই খালেরই আরেক জলপ্রপাত আমিয়াকুমের দিকে।

যেতে চাইলে
প্রতিদিনই ঢাকা থেকে বান্দরবানের উদ্দেশে ডলফিন, এস আলম সার্ভিসসহ বেশকিছু বাস ছেড়ে যায়। বান্দরবান শহরে নেমে বাস বা চান্দের গাড়িতে চেপে যেতে হবে ৭৬ কিলোমিটার দূরের এক উপজেলা থানচিতে। সময় লাগে চার ঘণ্টার মতো। থানচিতে বিজিবি ক্যাম্পে নাম নিবন্ধন করে, গাইডসহ নৌকা ভাড়া করে যাত্রা শুরু করবেন রেমাক্রি বাজারের উদ্দেশে। এই নৌপথে যাত্রাটা সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য। প্রথম রাতটা রেমাক্রি বাজারের কাঠের দোতলা ঘরগুলোতে কাটাতে পারেন। পরদিন সকাল সকাল পায়ে হেঁটে যাত্রা করবেন নাফাকুমের উদ্দেশে। সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা।

থাকা-খাওয়া
রেমাক্রি বাজারের কাঠের দোতলা ঘরগুলোতে থাকতে পারেন। ভাড়া ১০০-১৫০ টাকা। খাওয়া-দাওয়াও এখানেই সারতে হবে। চার-পাঁচজনের দলের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া আর গাইড খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

Jhonna7রিসাং বা তেরাং তৈকালাই
খাগড়াছড়ি শহর পেরিয়ে রহস্যময় গুহার অঞ্চল আলুটিলা। আলুটিলা মাড়িয়ে আরো কিলোমিটার দুয়েক গেলে রাস্তার বাঁয়ে দেখা মেলে একটি তোরণের। তোরণের গায়ে লেখা রিসাং বা তেরাং তৈকালাই। এর পরের পথটুকু পিচের রাস্তা ছেড়ে ইট বিছানো রাস্তা দিয়েই চলতে হবে। আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই দুই পাশে উঁকি দেয় সবুজ পাহাড়ের জমিনে খচিত বাদামি জুমঘরগুলো। কিলোমিটার দুয়েক হাঁটলেই চোখে পড়বে বিশাল লম্বা এক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি নেমে গিয়েছে একদম ঝরনার নিচ পর্যন্ত। সিঁড়ি দিয়ে বাঁধানো পথে নামতেই কানে আসবে ঝরনার সেই চিরপরিচিত গর্জন। শেষ কয়টা ধাপ পেরোলেই চোখের সামনে পূর্ণ বিস্তৃতিতে ধরা দেয় রিসাং ঝরনা। ফুট ত্রিশেক ওপর থেকে রুপালি ফিতের মতো একটি ঝরনাধারা গড়িয়ে পড়ছে কালো পাথরের চাতালটির ওপর। আর সেই পানি পাথুরে চাতালে গড়িয়ে গড়িয়ে আরো ফুট চল্লিশেক গিয়ে মিশেছে নিচের ছড়াটায়।

যেতে চাইলে
রিসাং দর্শনে যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে আসতে হবে পার্বত্য শহর খাগড়াছড়িতে। ঢাকা থেকে শুধু সড়কপথে খাগড়াছড়ির যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে। তবে আপনি চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন বা প্লেনে করে যেতে পারেন। সেখান থেকে বাস বা অন্য কোনো পরিবহনে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন।

কিংবা সড়কপথে ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়িও আসতে পারেন। প্রতিদিন বিভিন্ন কম্পানির একাধিক বাস দিনে ও রাতে ছেড়ে যায়। ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি বা লোকাল বাসে পৌঁছাতে পারেন রিসাংয়ের তোরণে। সেখান থেকে হাঁটাপথে রিসাংয়ের দূরত্ব তিন কিলোমিটারের মতো।

থাকা-খাওয়া
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি হয়ে রিসাং ঝরনা ঘুরে আসতে খরচ পড়বে জনপ্রতি ২০০০-২৫০০ টাকার মতো।

খাগড়াছড়ি শহরে থাকার জন্য রয়েছে হোটেল মাসুদ, শিল্পী বোর্ডিং, হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল শৈল সুবর্ণা, হোটেল ফোর স্টার, হোটেল নিরিবিলি। ভাড়া ২০০-১৫০০ টাকার মধ্যে। খাওয়াদাওয়ার জন্য যেতে পারেন ক্যাফে চমক হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, হোটেল গাইরিংয়ে। পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে চাইলে যেতে পারেন শহরের অদূরেই পানখাইয়াপাড়ার সিস্টেম রেস্টুরেন্টে (০১৫৫৬ ৭৭৩৪৯৩)।

Jhonna6মাধবকুণ্ড
পার্কের গেট পেরিয়ে পিচঢালা পথে নামতেই স্বাগত জানাবে জানা-অজানা পাখির কিচিরমিচির। আর বিশাল সব বৃক্ষরাজির মাথায় ফুলে ফুলে সুশোভিত ডালপালা তো আছেই। বেশ কয়েকটা নয়নাভিরাম বাংলোটাইপ ভবন পেরিয়ে মিনিট দশেক হাঁটলেই দূর থেকে ভেসে আসে মাধবকুণ্ড ঝরনার কলকল শব্দ। শেষের পথটুকু সিঁড়ি দিয়ে বাঁধানো। খুব সহজেই ঝরনার একদম নিচে যাওয়া যায়। ঝরনার সামনের পাথুরে বোল্ডারে বসে পায়ের তলায় হিমশীতল পানির স্পর্শে চাঙা হয়ে উঠতে পারেন নিমিষেই। সাঁতার জানা থাকলে নেমে পড়তে পারেন পানিতে। তবে ঝরনার একদম কাছে যেতে চাইলেই শুনতে হবে নিরাপত্তারক্ষীদের কর্কশ বাঁশি। দুর্ঘটনা ঠেকাতেই একটা বেষ্টনী দিয়ে জলতরঙ্গের একদম কাছে যাওয়াটা ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। ঝরনা থেকে ফেরার সময়ও কানে বাজবে শদেড়েক ফুট ওপর থেকে আছড়ে পড়া উত্তাল জলরাশির তর্জন-গর্জনের শব্দ। মাধবকুণ্ড ঝরনা থেকে আরো ২০-২৫ মিনিট ট্রেক করলেই দেখা মেলে আরো একটা ঝরনার। নাম পরীকুণ্ড। আকারে মাধবকুণ্ড ঝরনা থেকে ছোট হলেও সৌন্দর্যে কোনো অংশেই কম নয় এটি।

যেতে চাইলে
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় মাধবকুণ্ডের অবস্থান। ঢাকা থেকে রেল ও সড়কপথে মৌলভীবাজার যাওয়া যায়। ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে হানিফ, শ্যামলী, সিলেট এক্সপ্রেস, টিআর ট্রাভেলস ইত্যাদি বাস যায় মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজার শহরে নেমে সিএনজি বা মাইক্রোবাসে যেতে পারেন মাধবকুণ্ডে। আর ট্রেনে মৌলভীবাজার যেতে হলে নামতে হবে কুলাউড়া স্টেশনে। জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন এক্সপ্রেস ইত্যাদি ট্রেনে পৌঁছাতে পারেন কুলাউড়া।

ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল হয়েও আপনি মাধবকুণ্ড যেতে পারেন। এ জন্য প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল। বাসে বা ট্রেনে দুভাবেই শ্রীমঙ্গল যেতে পারেন। শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অবস্থিত এই ঝরনার দূরত্ব ৯৩ কিলোমিটার। বাস বা মাইক্রোবাসে চেপে পাড়ি দিতে পারেন এই দূরত্ব। সময় লাগবে ঘণ্টা দুয়েক। এই ঝরনাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র। গাড়ি নিয়ে এর একদম কাছাকাছি যাওয়া যায়।

থাকা-খাওয়া
মৌলভীবাজারে থাকার জন্য আছে হোটেল হেলাল, শেরাটন প্লাজা, হোটেল সোনারগাঁও ইত্যাদি। হোটেলগুলো মাঝারি মানের। তবে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা মিলবে শ্রীমঙ্গলে থাকলে। হালের অভিজাত গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্ট, টি-টাউন রিসোর্টসহ অনেক হোটেল আছে শ্রীমঙ্গলে। আর খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে নির্ভর করতে পারেন কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর ওপর। সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *